পানিতে তলিয়েছে বরিশাল
এইচ আর হীরা, বরিশাল: মেয়র আসে-মেয়র যায় কিন্তু জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পায়নি বরিশাল নগরবাসী। সব জনপ্রতিনিধিরাই নিজের আখের গোছানোর কথা চিন্তা করেছেন কিন্তু হিরন মিয়া ছাড়া কেউই নগরবাসীর ভোগান্তির কথা চিন্তা করেনি।
এভাবেই নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন বরিশাল নগরীর হাতেম আলী চৌমাথা নবগ্রাম রোড এলাকার বাসিন্দা পারভেজ সিকদার। শুধু তিনি নয় তার মতো ওই এলাকার প্রায় সব বাসিন্দাদের এখন একমাত্র দাবি জলাবদ্ধতা থেকে তাদের যেন দ্রুত মুক্তি দেয়া হয়। সামান্য বৃষ্টিতেই নবগ্রাম রোড সড়কটি তলিয়ে যায়।
রবিবার সরেজমিনে ওই এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বটতলা বাজারের মোড় থেকে সরকারী হাতেম আলী কলেজ পর্যন্ত সড়কটিতে হাঁটু সমান পানি। ড্রেন আটকে যাওয়ায় পানি বের হতে পারছেন না ফলে তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ওই এলাকার বাসিন্দাদের। রুমা বেগম নামে ওই এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, প্রত্যেক বছর এইরকম পানিতে আমরা আটকে যাই কিন্তু আমাগো এই সমস্যা সমাধানে কেউই আগাইয়া আসে না। গত দুইদিন চুলায় আগুন জ্বলে না, পোলাপান লইয়া অনেক কষ্টে আছি, একটা মানুষ আমাগো পাশে দাঁড়ায় নাই। শুধু নবগ্রাম রোড় নয়, নগরীর গোরস্থান রোড, অক্সফোর্ড মিশন রোড, কাউনিয়া প্রধান সড়ক, বিসিক রোড, পলাশপুর সহ বিভিন্ন এলাকার সড়কে এমনকি বাসা বাড়িতেও ডুকেছে পানি। এতে বেশ ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। কাউনিয়ার বাসিন্দা আব্দুর রহমান জানান, ঘরে মধ্যে এতো পানি উঠেছে যে খাট থেকে নামতে পারি- নি। রাতে পাম্পের মাধ্যমে সেচ দিয়ে পানি বের করেছি ঘর থেকে।
গোরস্থান রোড এলাকার ব্যবসায়ী মোহন খান জানান, এই রোডটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫/৬টি মরদেহ দাফনের উদ্দেশ্যে মুসলিম গোরস্থানে নেয়া হয় কিন্তু এভাবে পানিতে আটকে থাকার পরেও কেউ যেন এর সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসছেন না। আমরা খুবই কষ্টের মধ্যে আছি। দ্রুত আমাদের এই সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।
এদিকে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম জানান, বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করলেও কোনো নদ-নদীর পানি এখনও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। তবে রবিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বরিশালে সর্বোচ্চ ১৭৮ দশমিক ৮ মিলিমিটার, ভোলায় ১৫০ মিলিমিটার, ঝালকাঠিতে ১৩৯ মিলিমিটার, পিরোজপুরে ১৫৭ দশমিক ২ মিলিমিটার, বরগুনায় ১২৯ মিলিমিটার ও পটুয়াখালীতে ১৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বিআলো/তুরাগ