প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান গ্রহণ ও উন্নত দেশের দায়িত্ব পালনে জোর: পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা
নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত মেঘনা নলেজ ফোরাম II (MKF II)-এ ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বিশ্ব অংশগ্রহণকারীদের প্রকৃতি-ভিত্তিক সমাধান গ্রহণ ও উন্নত দেশগুলোকে তাদের জলবায়ু দায়বদ্ধতা যথাযথভাবে পালন করার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নয়ন মডেল পরিবর্তন প্রয়োজন, যা কম প্রতিকূল, কম সম্পদ-কেন্দ্রিক এবং অধিক প্রকৃতি-কেন্দ্রিক হবে।
বাংলাদেশের নদীগুলোর সঙ্গে জাতীয় পরিচয়ের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরে তিনি বলেন, বাংলাদেশকে ‘নদীর দেশ’ বলা একেবারে সঠিক। নদী ও নদীর পরিবেশ আমাদের অস্তিত্বের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তিনি প্রতিবেশী নেপাল, ভারত ও চীনের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত নদী ব্যবস্থাপনায় জোরালো আঞ্চলিক সহযোগিতার গুরুত্বের উপর গুরুত্বারোপ করেন।
নদীর অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন এ বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি নদীর পরিবেশগত সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক ফোরামে আরও আলোচনা ও পদক্ষেপের আহ্বান জানান।
তিনি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনন্য পরিবেশব্যবস্থা ‘হাওর’ উল্লেখ করে বলেন, হাওর কৃষি, মাছ চাষ, পর্যটন এবং পরিযায়ী পাখিদের আবাসস্থল হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ। তবে বালু উত্তোলন, পরিবেশ দূষণ ও আকস্মিক বন্যার মতো হুমকি থেকে হাওর ও মেঘনা অববাহিকা বিপন্ন।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে কার্যকর পূর্ব সতর্কতা ব্যবস্থার অভাবে উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার যুবসমাজকে তথ্যপ্রবাহ ব্যবস্থার উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ও হ্রদ সুরক্ষা সংক্রান্ত কনভেনশনে অংশগ্রহণ করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি আঞ্চলিক পরিবেশ নেতৃত্বের একটি মাইলফলক। তবে তিনি আঞ্চলিক সংস্থা সার্কের নদী ব্যবস্থাপনাকে দ্বিপাক্ষিক হিসেবে গণ্য করার নীতিকে সহযোগিতার বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন।
বক্তব্যের শেষাংশে তিনি বলেন, সরকারগুলো যখন পরিবেশ ব্যবস্থাপনায় ঐকমত্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়, তখন কমিউনিটির কণ্ঠস্বর ও জ্ঞানকে গুরুত্ব দেওয়া অপরিহার্য। সহযোগিতাই জলবায়ু সহনশীলতার পথ।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিমসটেকের সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্র মণি পান্ডে, এশিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির প্রেসিডেন্ট ড. পাই-চি লি, আইইউসিএনের আঞ্চলিক পরিচালক ড. দিন্দো ক্যাম্পিলান, বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত থাইল্যান্ড ফাইয়াজ মুরশিদ কাজী সহ অনেকে।
বিআলো/এফএইচএস