প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের স্বীকৃতি ও এমপিও দাবিতে কেন্দ্রীয় অবস্থান কর্মসূচি
নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশের অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্তিসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজধানীতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় সমন্বয় পরিষদ।
সোমবার (২১ জুলাই) অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, প্রতিবন্ধী শিক্ষকদের মানবেতর জীবন এবং শিক্ষা ব্যবস্থার দুরবস্থার কারণে এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রিমা খাতুন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) তথ্য মতে, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৯ শতাংশ প্রতিবন্ধী। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই আমাদের দাবিগুলো জাতীয় স্বার্থেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এ পর্যন্ত সারাদেশে সভা, মতবিনিময়, মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকদের কাছে স্মারকলিপি প্রদানসহ ধারাবাহিকভাবে দাবি আদায়ে সাংগঠনিক কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে সংগঠনটি।
সংগঠন সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়গুলোর স্বীকৃতি ও এমপিওর বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করে। এতে ২,৭৪১টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। প্রাথমিক যাচাই-বাছাই শেষে ১,৭৭২টি আবেদন গ্রহণ করা হলেও প্রক্রিয়াটি দীর্ঘসূত্রতায় পড়েছে। এর ফলে সারাদেশে প্রায় ৬৩ হাজার শিক্ষক ও কর্মচারী চরম আর্থিক সংকটে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
সমন্বয়ক গাউসুল আজম শিমু বলেন, সংশ্লিষ্ট নীতিমালা অনুযায়ী ক, খ, গ শ্রেণিভুক্তকরণ ও জাতীয় স্বীকৃতি-এমপিও কমিটি গঠনের কাজ চললেও তা অত্যন্ত ধীরগতির। ইতিপূর্বে স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ৫৭টি প্রতিষ্ঠানসহ বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনো এমপিওভুক্তির অপেক্ষায় আছে।
কর্মসূচিতে বক্তারা দাবি করেন, দেশের বিশেষ শিশুদের শতভাগ শিক্ষা নিশ্চিত করতে হলে এই বিদ্যালয়গুলোকে অর্থনৈতিকভাবে টিকিয়ে রাখতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের সরকারি সুবিধার আওতায় আনতে হবে।
পাঁচ দফা দাবি সমূহ: ১. অবিলম্বে সকল বিশেষ (অটিস্টিক ও প্রতিবন্ধী) বিদ্যালয়কে স্বীকৃতি ও এমপিওভুক্ত করতে হবে। ২. প্রতিবন্ধী বান্ধব অবকাঠামো নিশ্চিত করতে হবে। ৩. বিশেষ শিক্ষার্থীদের জন্য ন্যূনতম মাসিক শিক্ষা ভাতা ৩,০০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে। ৪. শিক্ষার্থীদের মিড-ডে মিল, শিক্ষা উপকরণ, খেলাধুলার সরঞ্জাম ও থেরাপি সেন্টার চালু করতে হবে। ৫. ভোকেশনাল কারিকুলামের আওতায় প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মসংস্থান ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে হবে এবং সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে কোটা অনুযায়ী চাকরির সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।
সভাপতি মোঃ ইলিয়াস রাজ বলেন, এই দাবিগুলো বাস্তবায়ন করলে শুধু শিক্ষক-কর্মচারীদেরই নয়, দেশের লাখো বিশেষ শিশু ও তাদের পরিবারও উপকৃত হবে। সরকারকে এগিয়ে এসে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিআলো/এফএইচএস