ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও গণতন্ত্র এখনো অধরা: নজরুল ইসলাম খান
লেবার পার্টির জুলাই সমাবেশে নজরুল ইসলাম খান
নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ লেবার পার্টির আয়োজিত জুলাই অভ্যুত্থান স্মরণ সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে ফ্যাসিবাদ বিদায় হলেও গণতন্ত্র এখনো পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।” তিনি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল গঠনের মাধ্যমে লুটপাট, গুম ও হত্যাকাণ্ডের বিচার ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান।
রবিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে আয়োজিত এ সমাবেশে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়ায় দেরি করা হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে। কেউ সময় নিচ্ছে জোট গঠনের জন্য, আবার কেউ সংগঠনের নামে সময় নষ্ট করছে। কিন্তু জনগণ নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত। এখন আর বিলম্বের সুযোগ নেই।”
তিনি আরও বলেন, “সংস্কার কমিশনের কার্যক্রম প্রায় শেষের দিকে। ‘জুলাই সনদ’-এর খসড়ায় আমরা কিছু ভাষাগত পরামর্শ দিয়েছি, তবে মূল কাঠামোতে একমত হয়েছি। রাজনৈতিক দলগুলো স্বাক্ষর করে প্রতিশ্রুতি দেবে—নির্বাচনে বিজয়ী হলে এই সনদের বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হবে।”
সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান বলেন, “গত ১৫ বছর ধরে দেশের মানুষ দানবীয় সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছে। ২৪ জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থান ছিল সেই লড়াইয়ের চূড়ান্ত রূপ। নেতৃত্ব চাপিয়ে নয়, সংগ্রামের মাধ্যমেই অর্জিত হয়।”
তিনি আরও বলেন, “ইউনূস সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা চাই তারা কথা রাখুক, জনগণ যেন ভোটের অধিকার ফিরে পায়।”
সভাপতির বক্তব্যে লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান জানান, “আমাদের দল দীর্ঘ সময় নিবন্ধন থেকে বঞ্চিত ছিল। অবশেষে ২৯ মে আদালতের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশ লেবার পার্টিকে নিবন্ধন দিয়েছে। আমাদের নির্বাচনী প্রতীক নির্ধারিত হয়েছে ‘আনারস’। আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রতীক গ্রহণ করতে যাচ্ছি আগামী সপ্তাহে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার যদি প্রকৃত অর্থে নির্বাচনে আন্তরিক হয়, তাহলে এখনই তারিখ ঘোষণা করা হোক। আমরা বিগত ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছি—জুলাই আন্দোলন তার সফল পরিণতি।”
সভা পরিচালনা করেন লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব খন্দকার মিরাজুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মজিবুর রহমান সরোয়ার, সাবেক ডাকসু নেতা নাজিম উদ্দিন আলম, এলডিপি নেতা অ্যাডভোকেট আওরঙ্গজেব বেলাল ও লেবার পার্টির শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
সংহতি জানান ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মঞ্জুর-ই এলাহী, বিপিপি’র মহাসচিব বিলকিস খন্দকার, গণফোরামের মোহাম্মদ উল্লাহ মধু, আমজনতা দলের আরিফ বিল্লাহসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
উল্লেখ্য, সমাবেশটি ছিল জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অন্যতম রাজনৈতিক জমায়েত, যা দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিবর্তনের ধারাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে।
বিআলো/তুরাগ