ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও সাংবাদিক সুরক্ষার দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক: গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে হলে দেশে ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য অটুট রাখতে হবে—এমন মন্তব্য করেছেন আশির দশকের ছাত্রনেতা ও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবুল কাসেম চৌধুরী। তিনি বলেন, “দেশ আর পেছনে ফেরার জায়গায় নেই। জনগণ, সেনাবাহিনী ও অন্তর্বর্তী সরকার এখন গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে।”
সোমবার, ৪ আগস্ট সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক এসোসিয়েশন (বিআরজেএ) আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাখাওয়াৎ হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী এবং সঞ্চালনায় ছিলেন মহাসচিব শেখ মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।
বক্তারা বলেন, গত ১৫ বছরের ফ্যাসিবাদী শাসনে ৬৭ জন সাংবাদিকসহ অসংখ্য দেশপ্রেমিক নাগরিক হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন। তাঁদের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে। শহীদ পরিবারগুলোর জন্য রাষ্ট্রীয় ভাতা ও বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। আহত সাংবাদিক ও কর্মীদের সুচিকিৎসা প্রদান এবং বন্ধ গণমাধ্যমগুলো পুনরায় চালুর লক্ষ্যে ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবুল কাসেম চৌধুরী বলেন, “১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান জাতীয় ঐক্যের ভিত্তি স্থাপন করেন এবং আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে উন্নয়নের ধারা শুরু হয়। তারেক রহমানের নেতৃত্বে ২০২৪ সালে জনগণের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিবাদের পতন ঘটে। তাঁর আহ্বানে ২৪ জুলাই দেশের জনগণ রাজপথে নেমে ফ্যাসিবাদবিরোধী বিজয় নিশ্চিত করে।”
তিনি আরও বলেন, “দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আইনের শাসন ও মানবাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে কাজ করছে। শহীদ সাংবাদিকদের জাতীয় বীর ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। ছাত্রসমাজকে এই ঐক্য ধরে রাখতে হবে, নইলে আবার ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে।”
বক্তারা আরও দাবি করেন, রাজনৈতিক ও সাংবাদিক নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। গণমাধ্যম পরিচালনায় যেসব নীতিমালা ও অধ্যাদেশ প্রণয়ন করা হবে, তা সংশ্লিষ্টদের মতামত নিয়ে করতে হবে। বিশেষ বাহিনীর গুলিতে আহত বিআরজেএ নেতাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা এবং বাসস, বিটিভি, বাংলাদেশ বেতারসহ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমগুলোকে ফ্যাসিবাদের দোসরদের প্রভাবমুক্ত করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন নিউ নেশন পত্রিকার সাবেক সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার। প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহকারী মহাসচিব ও ‘আমার দেশ’ পত্রিকার প্রধান প্রতিবেদক বাছির জামাল।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের অতিরিক্ত বার্তা সম্পাদক ও ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. মোদাব্বের হোসেন, সিলেট বিভাগ সাংবাদিক সমিতির সভাপতি ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম, জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাহজাহান সম্রাট, জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. বেলাল উদ্দিন আহমেদ, বিআরজেএ’র ভাইস চেয়ারম্যান মো. সাজেদুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব ইমারন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক তাজ উদ্দিন আহমেদ, তাজুল ইসলাম মানিক, ইশরাক ইয়াসীন প্রমুখ।
বিআলো/তুরাগ