বরিশালে কোটি টাকার নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ
এইচ আর হীরা, বরিশাল: বরিশালের কাশিপুর মুখার্জী বাড়ি পুল সংলগ্ন খান মঞ্জিল ভবনের একটি ভাড়ার গোডাউনে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট সার্কেল–৩, বরিশাল।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত টানা কয়েক ঘণ্টা এ অভিযান পরিচালনা করে রাজস্ব বিভাগের কর্মকর্তারা। অভিযানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সহযোগিতা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, একটি অসাধু চক্র সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বরিশালসহ আশপাশের জেলাগুলোতে অবৈধ সিগারেট বিক্রি করে আসছিল। এসব সিগারেট বিভিন্ন দোকানে কমদামে সরবরাহ করা হতো।
অভিযানে প্রায় ৫০ কার্টুন নকল ব্যান্ডরোলযুক্ত সিগারেট জব্দ করা হয়। প্রতিটি কার্টুনে রয়েছে ১০ হাজার পিস সিগারেট। লাল ও লীল রঙের দুই প্রকার সিগারেটের প্রতি প্যাকেটের মূল্য লেখা ছিল ১২০ টাকা। সব মিলিয়ে জব্দকৃত সিগারেটের বাজারমূল্য প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ টাকা বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমস কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খান ও সাজ্জাদ আলম বলেন, “সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে সিগারেট ব্যবসা চালিয়ে আসছে এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই গোডাউনের লোকজন পালিয়ে যায়। পরে আইনানুগ প্রক্রিয়ায় পণ্যগুলো জব্দ করা হয়েছে।” প্রায় তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ভবন মালিক, স্থানীয় প্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে বরিশাল বিমানবন্দর থানার সহযোগিতায় তালা ভেঙে গোডাউনে থাকা অবৈধ মালামাল জব্দ করা হয়।
অভিযানে সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ ও আরিফুল ভুঁইয়া, বরিশাল বিমানবন্দর থানার এসআই বাসুদেব, এএসআই বাবুল, কনস্টেবল মিজান ও আলমগীর উপস্থিত ছিলেন। সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা নূর মোহাম্মদ বলেন, “অবৈধ বিড়ি-সিগারেটের বিরুদ্ধে সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে। নকল ব্যান্ডরোল ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
খান মঞ্জিলের মালিক নূরুজ্জামান জানান, “আমার ছেলে সোলায়মান চলতি বছরের জুন মাসে দুই বছরের চুক্তিতে প্রতি মাসে ৮ হাজার টাকায় ভবনটি ভাড়া দিয়েছে। ভাড়াটিয়ারা পিকআপে কার্টুন ভর্তি মালামাল আনানেয়া করত। এর বাইরে আমি কিছুই জানতাম না।”
গোডাউন ম্যানেজার কায়সার বলেন, “আমি শুধু বেতনভুক্ত কর্মচারী। পণ্য আসল না নকল এটা কোম্পানি ও কাস্টমসই ভালো বলতে পারবে।” রাজস্ব বিভাগ জানিয়েছে, জব্দ করা পণ্যগুলো প্রাথমিকভাবে অবৈধ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে আইনের আওতায় আনুষ্ঠানিক মামলা দায়েরসহ পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআলো/ইমরান



