বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ -পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন
এইচ আর হীরা, বরিশাল: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি) ও বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে মঙ্গলবার রাতভর দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় কমপক্ষে ১৫৫ জন আহত হয়েছেন। এ সময় উভয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চারটি বাস এবং বিএম কলেজের প্রশাসনিক ভবনসহ ক্যাম্পাসে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়। রাত সাড়ে ১২টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে আহত হওয়ার ঘটনা স্বীকার করেছেন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান।
এদিকে বুধবার দুপুরে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা সাত দফা দাবি জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে। একইদিন বিকেলে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। পাশাপাশি বিএম কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মো. আমিনুল হকের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জানা গেছে, ঘটনার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার সকালে কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
অপরদিকে বুধবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। বিএম কলেজের শিক্ষার্থীদের সাত দফার দাবিগুলো হল-রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস নিয়ে আসা হামলাকারী, বটতলায় চাঁদাবাজকারীর পেছনের মদতদাতা এবং উসকানি প্রদান করা সবার সুষ্ঠু বিচার করা, মধ্যরাতে বিএম কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলার ফলে যেসব শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন তাদের সম্পূর্ণ চিকিৎসার ব্যয়ভার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে গ্রহণ করা, বিএম কলেজসহ সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীকে কোনোরূপ হয়রানি না করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন নগরীতে কোনো ধরনের অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সেই বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা, কলেজসহ হোস্টেল এবং সাধারণ মানুষের বাসাবাড়ি ও দোকানপাট ভাঙচুর এবং লুটপাটের ঘটনার সম্পূর্ণ ক্ষতিপূরণ দেয়া, হামলায় জড়িত সব সন্ত্রাসীকে অতি দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ভবিষ্যতে আর কোনো সাধারণ শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলে তার দায়ভার বিশ্ববিদ্যালয়কে নিতে হবে।
পাল্টা অভিযোগে ববি’র শিক্ষার্থীরা বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পরিবারের বিরোধীয় সম্পত্তি দখলের চেষ্টায় হুমকি এবং তাদের এক সহপাঠী ও তার মাকে হেনস্তা করেন বিএম কলেজের সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাফি। খবর পেয়ে ববি শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে হাজির হলে রাফিসহ তার সহযোগিদের হামলার শিকার হয়। এরপর চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ববি’র দুই ছাত্রকে মারধর করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা। এরপর ববি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে নগরীর বটতলা এলাকার পৌঁছলে শিক্ষার্থী বোঝাই বাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। তখন ববি শিক্ষার্থীরা বিএম কলেজ অভিমুখে গেলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে ববি’র শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ডিন ড. মো. শফিউল আলম বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে বিএম কলেজ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে সমাধান করা হবে।
বিআলো/তুরাগ