বাংলাদেশ স্কাউটসে এডহক কমিটির পদবী বিতর্ক
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ স্কাউটসের বর্তমান এডহক কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে যথাক্রমে সভাপতি ও প্রধান জাতীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে সংগঠনের ভেতরে বিরোধ ও সমালোচনা দেখা দিয়েছে।
প্রাক্তন জাতীয় কমিশনারদের অভিযোগ, এডহক কমিটি কাউন্সিল অধিবেশন ছাড়াই পদবী বণ্টনের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছে। গঠনতন্ত্র বহাল থাকা অবস্থায় কাউন্সিল ছাড়া এ ধরনের পদবী ব্যবহার স্কাউটসের নিয়মবিরোধী।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন প্রবীণ স্কাউট বলেন, চীফ স্কাউট তথা মহামান্য রাষ্ট্রপতি কিভাবে দায়িত্ব পালন করবেন, তা গঠনতন্ত্রে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে। কাউন্সিল অধিবেশন ছাড়া সভাপতি বা প্রধান জাতীয় কমিশনারের দায়িত্ব পালন করা অনিয়ম।
গঠনতন্ত্রের ২৬ ধারা অনুযায়ী, রাষ্ট্রপতি পদাধিকারবলে বাংলাদেশ স্কাউটসের চীফ স্কাউট। তিনি জাতীয় কাউন্সিল ডাকতে, সভাপতিত্ব করতে ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। তবে প্রধান জাতীয় কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয় কাউন্সিলের সুপারিশ প্রয়োজন।
একইভাবে ২৯ ধারা অনুযায়ী, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে জাতীয় কমিশনারদের মধ্য থেকে তিন বছরের জন্য একজনকে প্রধান জাতীয় কমিশনার নিয়োগ দেন চীফ স্কাউট। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে পদ শূন্য হলে নির্বাহী কমিটির সুপারিশক্রমে অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব পালন করা যায়।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ স্কাউটস এডহক কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে এডহক কমিটির মেয়াদ দুই দফা বাড়ানো হয়েছে। তবে নতুন করে কাউন্সিল ছাড়াই পদবী ব্যবহারকে অনেকেই দীর্ঘমেয়াদি ক্ষমতায় থাকার কৌশল বলে মনে করছেন।
অংশীজনদের অভিযোগ, জুলাই আন্দোলনের মূল চেতনা আড়াল করে বাংলাদেশ স্কাউটস বৈষম্যের পথে হাঁটছে। ফলে হাজার কোটি টাকার এই স্বেচ্ছাসেবী রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
বাংলাদেশ স্কাউটসের নির্বাহী পরিচালক মো. শামসুল হক বলেন, আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর এডহক কমিটির বৈঠক হবে। বৈঠকে আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব কোন পদবী ব্যবহার করবেন, তা নির্ধারণ করা হবে।
অর্থ ব্যয়ের প্রশ্নে তিনি বলেন, স্কাউটসের অর্থে সদস্য সচিব ও পেশাদার কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের রেওয়াজ আছে। এটি মূলত স্কাউটসের প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন ও আন্তর্জাতিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবেই হয়ে থাকে।
বিআলো/এফএইচএস