বাউফল প্রেসক্লাব নির্বাচন আজ ভোটের উৎসবে মুখিয়ে ৪৭ ভোটার
মো. তারিকুল ইসলাম (মোস্তফা),বাউফল (পটুয়াখালী): পটুয়াখালীর বাউফলে আজ শনিবার (২০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাউফল প্রেসক্লাবের নির্বাচন। নির্বাচনকে ঘিরে প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী এ প্রেসক্লাবের নেতৃত্ব বাছাইয়ে ভোটারদের মধ্যে দেখা গেছে ব্যাপক আগ্রহ ও উদ্দীপনা। এবারের নির্বাচনে মোট ৪৭ জন ভোটার তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
বাউফল প্রেসক্লাবের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ইতিহাস। প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও প্রবীণ সাংবাদিক মো. রেজাউল করিম নিজাম (দৈনিক কৃষাণ ও দৈনিক দিনকাল) জানান, প্রেসক্লাব প্রতিষ্ঠার সময় মোট আটজন সদস্য ছিলেন। বর্তমানে জীবিত রয়েছেন তিনজন—মো. রেজাউল করিম নিজাম, মো. আমিরুল ইসলাম (স্যার) ও খোকন কর্মকার। এ পর্যন্ত সংবাদ অঙ্গনে অবদান রেখে প্রয়াত হয়েছেন শাহাদাত স্যার (সাপ্তাহিক জাহান), রবিন দাস (সাপ্তাহিক একতা), আলতাফ মাহমুদ (বাংলার বাণী), বাদল খান (সাপ্তাহিক ঝংকার) ও ইউনুস স্যার (সাপ্তাহিক চাষি)।
রেজাউল করিম নিজাম জানান, প্রতিষ্ঠার শুরুর দিকে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে প্রেসক্লাবের জন্য অফিস বা খাস জমির আবেদন করা হলেও তা মঞ্জুর হয়নি। পরে তৎকালীন বাউফল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক বজলুল করিম স্যারের সহযোগিতায় স্কুলের পূর্ব পাশে পাবলিক লাইব্রেরির একটি কক্ষ প্রেসক্লাব হিসেবে ব্যবহারের অনুমতি পাওয়া যায়। তাঁর স্মৃতিমতে, সময়কাল ছিল ১৯৭৯-৮০ সালের দিক।
পরবর্তীতে তৎকালীন সংসদ সদস্য শহীদুল আলম তালুকদারের প্রচেষ্টায় খাস জমি বরাদ্দ পাওয়া যায় এবং প্রেসক্লাবের স্থায়ী ভবন নির্মাণ শুরু হয়। যদিও প্রেসক্লাব ভবনের সামনে প্রতিষ্ঠা সাল হিসেবে ১৯৮৪ উল্লেখ রয়েছে, মো. রেজাউল করিম নিজাম বলেন, “প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৮৪ বলা প্রশ্নবিদ্ধ। বাস্তবতার আলোকে এটি পুনরায় যাচাই করা উচিত।”
এবারের নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন তিন প্রার্থী—কামরুজ্জামান বাচ্চু, মো. জলিলুর রহমান ও মো. অহিদুজ্জামান ডিউক।
প্রার্থী কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, অতীতে তিনি একাধিকবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। নির্বাচিত হলে ঘোষিত ইশতেহার বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।
বর্তমান সভাপতি ও প্রার্থী মো. জলিলুর রহমান বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের সময় প্রেসক্লাবে একটি চাবি ও দুটি চেয়ার ছিল এবং ক্লাবের ওপর ছিল তিন লাখ টাকার ঋণের বোঝা। তাঁর সময়ে প্রেসক্লাবের আসবাব, সাজসজ্জা ও অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। ইতোমধ্যে ঋণের অর্ধেক পরিশোধ করা হয়েছে, বাকি অংশ দ্রুত পরিশোধ করা হবে।
অপর সভাপতি প্রার্থী মো. অহিদুজ্জামান ডিউক বলেন, তিনি চারবার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তাঁর দায়িত্বকালে তৎকালীন সভাপতি আমিরুল ইসলাম স্যারের সঙ্গে প্রেসক্লাব ভবনের নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্বাচিত হলে ঘোষিত ইশতেহার বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেন তিনি।
সহসভাপতি পদে লড়ছেন এবিএম মিজানুর রহমান ও মনজুর মোরশেদ। সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ও মনিরুজ্জামান হিরন।
মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ রেখে প্রেসক্লাবের মানোন্নয়নে কাজ করেছেন। পুনরায় দায়িত্ব পেলে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখবেন।
অপর প্রার্থী মনিরুজ্জামান হিরন বলেন, ব্যক্তিস্বার্থ নয়—প্রেসক্লাবের উন্নয়ন ও সাংবাদিকদের কল্যাণই তাঁর মূল লক্ষ্য। ভোটারদের সমর্থন পেলে কার্যকর ভূমিকা রাখবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।
নির্বাচনকে ঘিরে বাউফল সাংবাদিক সমাজে বিরাজ করছে ব্যাপক নির্বাচনী আমেজ। ভোটারদের আশা—যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচন করে প্রেসক্লাবকে আরও গতিশীল করা যাবে।
বিআলো/ইমরান



