বিএনপি উড়ে এসে জুড়ে বসেনি: কিশোরগঞ্জে মির্জা ফখরুল
নিউজ ডেস্ক: এ দেশে যা কিছু ভালো, সবকিছু দিয়েছে বিএনপি। আর সেই বিএনপির বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র চলছে, মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা সেই দল, যারা উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা গড়ে উঠেছি। আজ শনিবার কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি। তিনি বলেন, নির্বাচনের মধ্যদিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনার যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তা কাজে লাগানোর জন্য বিএনপি প্রস্তুত।
ফখরুল আরো বলেন, একাত্তরে ভিন্ন অবস্থানে থাকা দল, এমনকি যাদের কালকে জন্ম হয়েছে তারাও বিএনপিকে নিয়ে কথা বলে, কিন্তু এই দল (বিএনপি) হলো ফিনিক্স পাখির মতো, এ দলকে ভেঙে ফেলার ষড়যন্ত্র হয়েছে, কিন্তু সফল হয়নি। বরং ষড়যন্ত্রকারীরাই পালিয়ে গেছে। মহাসচিব বলেন, যেকোনো নেতার নামে স্লোগান নয়, স্লোগান হবে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নামে। তিনি আরো বলেন, শহীদ জিয়া ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠাতা। তিনি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছিলেন।
এর আগে শেখ মুজিবুর রহমান মাত্র চারটি পত্রিকা চালু রেখে সব পত্রপত্রিকা বন্ধ করে দেন। তরুণদের এ কথাটা জানা দরকার। শহিদ জিয়ার স্বপ্ন ছিল একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণের, আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার। সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করেন। বাকশাল থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসেন। কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের সভাপতিত্বে ও মাজহারুল ইসলামের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম।
বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ, কোষাধ্যক্ষ এম রাশিদুজ্জামান মিল্লাত, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শাহ মোহাম্মদ ওয়ারেছ আলী ও আরেক সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ।
যারা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে চাচ্ছে, তারা অশুভ শক্তি : অবিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান বলেছেন, এই মুহূর্তে পিআর নিয়ে যারা আন্দোলন করছে, যারা আগামী ফেব্রুয়ারির নির্বাচনকে ভণ্ডুল করতে চাচ্ছে, তারা দেশের অশুভ শক্তি।
তারা দেশের অগণত্রান্ত্রিক শক্তি। তারা দেশকে আবারও ফ্যাসিবাদের দিকে টেনে নিয়ে যেতে চায়। তাদের বিষয়ে সমগ্র জাতির সাবধান হতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলা ও পৌর ছাত্রদলের মতবিনিময় সভায় যোগ দেওয়ার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এ কথা বলেন। আযম খান বলেন, আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন হবে কি না, এই প্রশ্নটা রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে কেন আলোচনা হচ্ছে! আমি মনে করি, এই মুহূর্তে নির্বাচন অত্যন্ত জরুরি। যখন ঐকমত্য কমিশনে আলোচনা হয়-তখন কিন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআরের প্রশ্ন কেউই তোলেনি।
কেউই এই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর দিতে হবে দাবি করেনি। এটা শুধুমাত্র আপার হাউজের (উচকক্ষে) জন্য দু-একটি দল দাবি করেছিল। বিএনপি বলেছে এব্যাপারে জাতি প্রস্তুত নয়, এটার জন্য সময় নিতে হবে। তবে এই মুহূর্তে এটা চিন্তা করার অবকাশ নেই। তিনি আরো বলেন, নির্বাচন না হলে দেশকে গণতন্ত্রের পথে এগিয়ে নেওয়া যাবে না। দেশটাকে উন্নয়নের পথে দেওয়া যাবে না, দেশের অর্থনীতির চাকা, এখন যেভাবে আছে তা বেশি দূর এগোনোর নয়।
এই চাকা সচল হবে না। সমৃদ্ধির পথে যাবে না। তাই আমি মনে করি, যে দু-একটি দল এই পিআরের কথা বলছে বা নির্বাচন পেছানোর নানা রকমের ফন্দিফিকির করছে, সেটা ঠিক নয়। দেশের প্রশ্নে তাদের নির্বাচনের মাঠে আসতে বলবো। পিআরের এই ধোঁয়া তোলা থেকে বিরত থাকতে বলবো। তাদের দেশপ্রেমের পরিচয় দিতে বলবো। এর বাইরে দেশের গণতন্ত্র পথের যাত্রা ও নির্বাচন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আবুল কাশেম, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মামুন আল জাহাঙ্গীর, সাধারণ সম্পাদক নূরনবী আবু হায়াত খান নবু, পৌর বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান তুহিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ পিন্টু, উপজেলা বিএনপির মহিলা দলের সভাপতি রাশেদা সুলতানা রুবি, অ্যাডভোকেটদেওয়ান হুমায়ূন কবির রিপন, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হাশেম, ছাত্রদল নেতা নাহিদ খান, আজিজুল ইসলাম বিজয় প্রমুখ। পরে তিনি উপজেলা মডেল মসজিদ হলরুমে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় যোগ দেন।
বিআলো/ইমরান