বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপরে তিস্তা নদীর পানি, নিম্নাঅঞ্চল প্লাবিত
সজীব আলম, লালমনিরহাট: উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় নির্মিত দেশের বৃহৎতম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে তিস্তাপারের হাজারো মানুষ। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রেখেছে ব্যারাজ কতৃপক্ষ।
মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ২২ মিটার; যা বিপৎসীমার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার) ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
নদীপারের মানুষ ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, কয়েক দিন ধরে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় উজান থেকে পানি নামতে শুরু করেছে । ফলে তিস্তা নদীতে পানিপ্রবাহ বেড়ে গেছে। গত কয়েক দিন ধরে তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হলেও বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।
কিন্তু মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করে। রাত ৯টার দিকে ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাত বাড়ার সাথে সাথে পানি প্রবাহ আরো বাড়তে শুরু করে। এতে রাত ১২টার দিকে পানি বিপদসীমার ৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত করতে থাকে।

ফলে তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী হয়ে পড়ে তিস্তাপারের হাজার হাজার পরিবার। ডুবে গেছে তিস্তা চরাঞ্চলের রাস্তাঘাট ও ফসলের মাঠ। চরাঞ্চলের সড়কপথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা নৌকা ও ভেলায় করে উঁচু স্থানে অবস্থান নিচ্ছে।
এদিকে উজানের ঢলে সৃষ্ট বন্যায় ডুবে যেতে বসেছে আমন ধানসহ নানান ফসলের খেত। ভেসে যাচ্ছে চাষিদের মাছ। নদীর তীরবর্তী ও চরাঞ্চলে বসবাসরত মানুষজন বন্যা ও নদীভাঙন আতঙ্কে পড়েছেন।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় লালমনিরহাট জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের ৮-১০টি চর, পাটগ্রাম উপজেলা দহগ্রাম, আদিতমারী উপজেলা চর গোবর্ধন, মহিষখোঁচা এবং সদর উপজেলা খুনিয়াগাছ, রাজপুর ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর এবং নিম্নাঞ্চলের এলাকাগুলোতে পানি ঢুকছে শুরু করেছে।
তিস্তা ডালিয়া পয়েন্টের পানির লেভেল পরিমাপক নুরুল ইসলাম জানান, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
নীলফামারী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, উজানের ঢলে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে। তিস্তার নিম্নঞ্চলের মানুষদের সতর্ক অবস্থান থাকতে বলা হয়েছে। তবে তিস্তার পানি রাতে আরও বৃদ্ধি পেতে পারে।
বিআলো/শিলি