বুড়িগঙ্গা দূষণমুক্ত করতে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকার প্রাণধারা বুড়িগঙ্গা নদী বর্তমানে চরম দূষণের কবলে পড়েছে। শিল্পবর্জ্য ও মানববর্জ্যে বিপর্যস্ত এই নদী সংস্কারের জন্য সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছেন লেখক এম. রাকিব।
আজ শনিবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ধলেশ্বরী নদী থেকে উৎপন্ন হয়ে মুন্সিগঞ্জের মুক্তারপুরে পুনরায় ধলেশ্বরীতেই মিলিত হওয়া বুড়িগঙ্গা নদীর দৈর্ঘ্য প্রায় ২৯ কিলোমিটার, প্রস্থ গড়ে ৩০০ মিটার এবং গভীরতা প্রায় ১০ মিটার। এক সময় বাংলাদেশের অন্যতম গভীর ও খরস্রোতা নদী হলেও বর্তমানে এটি সম্পূর্ণভাবে দূষিত।
তিনি জানান, বর্তমানে বুড়িগঙ্গার জলধারা আসে তুরাগ ও কর্ণতলী নদীর মিলিত প্রবাহ থেকে। আশুলিয়া ও সাভারের শিল্পাঞ্চল অতিক্রমকারী এই নদী দুটির পানিতে বিপুল পরিমাণ শিল্পবর্জ্য মিশে থাকায় বুড়িগঙ্গার পানি মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে।
বুড়িগঙ্গা দূষণের প্রধান চারটি কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন—অপরিকল্পিত শিল্পকারখানা, নগর কর্তৃপক্ষের অবহেলা, নগরবাসীর অযাচিত চাহিদা এবং যানবাহন থেকে নির্গত বর্জ্য।
এম. রাকিব বলেন, ঢাকার ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর নির্ধারণে বুড়িগঙ্গা ও এর শাখা-প্রশাখার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফলে ঢাকাবাসীর স্বার্থে বুড়িগঙ্গা নদী সংস্কার এখন সময়ের দাবি।
এ লক্ষ্যে সরকারের কাছে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো—স্বতন্ত্র বুড়িগঙ্গা সংস্কার কমিশন গঠন, সার্বিক নদী সংস্কার কার্যক্রম গ্রহণ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনের মাধ্যমে অর্থসংস্থান, প্রজ্ঞাপন জারি করে নদীটিকে ‘জননী’ হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং সংস্কার-পরবর্তী নিয়মিত পরিচর্যা নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি বুড়িগঙ্গার প্রতি ব্যক্তিগত আবেগের কথাও তুলে ধরেন। ২০১৮ সালে বুড়িগঙ্গায় ভ্রমণের সময় নদীর দূষিত অবস্থা দেখে তিনি গভীরভাবে আলোড়িত হন বলে জানান। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই তিনি বুড়িগঙ্গার অতীত ও বর্তমান চিত্র তুলে ধরে একটি কবিতা রচনা করেন।
তিনি বলেন, দূষণমুক্ত ও প্রাণবন্ত বুড়িগঙ্গা গড়ে তোলা কোনো ব্যক্তির একার পক্ষে সম্ভব নয়; এ জন্য সরকারের কার্যকর উদ্যোগ অপরিহার্য।
বিআলো/এফএইচএস



