বৃক্ষমেলায় পরিচ্ছন্নতায় উদাসীনতা, পলিথিন ব্যবহার
নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, জাতীয় বৃক্ষমেলায় পরিচ্ছন্নতা নিয়ে যেমন দায়িত্বশীল আচরণ প্রত্যাশিত ছিল, তা অনেক ক্ষেত্রেই অনুপস্থিত ছিল।
তিনি বলেন, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা এমন একটি বিষয়, যার প্রতি আমাদের জাতি হিসেবেই মনোযোগী হওয়া জরুরি। আমরা যদি নিজেরা পরিষ্কার না থাকি, তাহলে অন্য জাতিও আমাদের দেখে শেখে না।
জাতীয় বৃক্ষমেলা-২০২৫ এর সমাপনী অনুষ্ঠানে আজ (রোববার) এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানটি রাজধানীর বন অধিদপ্তরের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
উপদেষ্টা জানান, এবার মেলায় ভলান্টিয়ার দিয়েছিল বন বিভাগ থেকে। তবে তারা কতটা নিয়মিত কাজ করেছে, তা নিশ্চিত নই। কিন্তু গত পরশু মেলায় গিয়ে নিজ চোখে দেখেছি, মানুষ খেয়ে উচ্ছিষ্ট ফেলে রাখছে। এটা আমাদের মানসিকতারই প্রতিফলন।
তিনি বলেন, এবার স্টল বরাদ্দ লটারির মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে। সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। স্টল বরাদ্দে এবার বন বিভাগের পাশাপাশি বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞরাও যুক্ত ছিলেন। অনেকেই বিপন্ন ও দুর্লভ প্রজাতির দেশি গাছ এনেছেন, কেউ কেউ বিদেশি গাছও এনেছেন। এজন্য আপনাদের অভিনন্দন।
উপদেষ্টা নার্সারি মালিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আপনারা মানুষকে গাছ ও প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন, এ দায়িত্বশীলতার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনারা পরিবেশ ও জনগণের মধ্যে একটি সরাসরি সংযোগ তৈরি করছেন।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, আপনাদের কাছে অনুরোধ থাকবে, নার্সারিতে যেন পলিথিন শপিং ব্যাগে চারাগাছ দেওয়া না হয়। এটা পরিবেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমাদের অবশ্যই এই অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।
তিনি জানান, এবারের মেলায় ও পূর্ববর্তী বছরগুলোতে যেসব শিক্ষার্থী পুরস্কার পেয়েছে, তাদের নিয়ে পরিবেশ রক্ষায় একটি ছাত্রভিত্তিক ভলান্টিয়ার গ্রুপ গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
সরকারি বাহিনীর মাধ্যমে ভলান্টিয়ার গঠন সম্ভব নয়। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন সম্ভব। তারা পরিবেশ সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে।
পরিবেশ উপদেষ্টার এই বক্তব্য শুধু একটি মেলার প্রতিক্রিয়া নয়, বরং জাতি হিসেবে আমাদের মানসিকতা, দায়িত্ববোধ ও পরিবেশ সচেতনতার পরিপ্রেক্ষিতেও তাৎপর্যপূর্ণ।
এই বক্তব্য নতুন প্রজন্ম, নীতিনির্ধারক এবং সমাজের প্রতিটি স্তরকে পরিবেশ রক্ষায় আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিআলো/এফএইচএস