• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    বৈষম্যমূলক সমাজ সংস্কারে রাসূল (সাঃ) ভূমিকা 

     dailybangla 
    18th Sep 2024 6:32 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মাস্টার রফিকুল ইসলাম রানা
    আমাদের প্রিয় নবী রাসূল (সাঃ)-এর জীবনী থেকে যথার্থ উপকারিতা অর্জনের জন্য যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটার উত্তর জানা প্রয়োজন, তা হলো রসূল (সাঃ)-এর সামনে ইপ্সিত পরিবর্তনের পরিধি কতদূর এবং তার কাজের মানদণ্ড কী ছিল? সমাজ ব্যবস্থায় তিনি কি কোন আংশিক পরিবর্তন চাইতেন, না সর্বাত্মক পরিবর্তন? তার দাওয়াত কি নিছক ধর্মীয় ও নৈতিক সংস্কারের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, না রাজনৈতিক গুরুত্ব সম্পন ছিল? অন্য কথায়, সামাজিক পরিমন্ডলে তার অভীষ্ট লক্ষ্য কী ছিল? সামাজিক সাম্য- শৃঙ্খলা, ভদ্রতা, সৌজন্যবোধ, নারীর মর্যাদা ইত্যাদির কোনো স্থায়িত্বই ছিল না। জঘন্য দাসত্ব প্রথা, সুদ, ঘুষ, জুয়া-মদ, লুণ্ঠন, ব্যভিচার, পাপাচার, অন্যায়-অত্যাচারের চরম অবস্থায় সমাজ কাঠামো ধসে পড়েছিল, এমন এক দুর্যোগময় যুগে মহানবী (সাঃ)-এর আবির্ভাব।

    আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে সুরা হাদীদের ২৫নাম্বার আয়াতে বলেনঃ ‘আমি আমার রসূলগণকে কেবলমাত্র এ উদ্দেশ্যে পাঠিয়েছি এবং তাদের ওপর কিতাব ও মানদণ্ড নাযিল করেছি, যাতে মানবজাতি ন্যায়ের ওপর প্রতিষ্ঠিত হয়।

    আল্লাহ তায়ালার কাছে ধনী-গরিব, কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ সবাই সমান। আমাদের নবী মোহাম্মাদ (সাঃ) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের দেহকায় ও বাহ্যিক আকৃতি দেখেন না; বরং তিনি দেখেন তোমাদের অন্তর সমূহ।’ (সহিহ মুসলিম : ৬৪৩৬)
    যুগে যুগে আল্লাহ তায়ালা বহু সৈরা শাসককে ধ্বংস করেছেন। তারা মানুষের প্রতি জুলুম নির্যাতনসহ নানাবিধ অত্যাচার করার কারণে। আল্লাহ তায়ালা সুরা ইউনুসের ১৩ নাম্বার আয়াতে বলেনঃ , ‘অবশ্যই আমি তোমাদের আগে বহু প্রজন্মকে ধ্বংস করেছি, যখন তারা জুলুম করেছে।’

    ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত হলো নামাজ। আর জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার মাধ্যমে ধনী-গরিব, বাদশাহ-গোলাম, কর্মকর্তা-কর্মচারী, সাদা-কালোর মাঝে কোনো বৈষম্য থাকে না। সাম্য ও ঐক্যের ধারণাকে সামনে রেখেই সবাইকে কেবলামুখী হয়ে নামাজ ও কাবায় গিয়ে একই পোশাকে হজ আদায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে জাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা সমাজে ধনী-গরিবের মাঝে সম্পদের বৈষম্য দূর করে, একটি সুন্দর এবং সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে সাহায্য করে।
    কেয়ামতের ময়দানে কঠিন সময়ে রাসুল (সাঃ) বলেছেন ‘আল্লাহ তায়ালা তোমাদের চেহারা-সুরত, ধন-সম্পদের দিকে তাকান না কিন্তু তিনি তোমাদের কর্ম ও অন্তরের অবস্থা দেখেন।’ (বুখারি : ৫১৪৪)

    অতীব দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বর্তমান বিশ্বে উন্নত জাতি গঠনের দাবিদার জ্ঞান পাপীরাই মানুষের মাঝে সাদা-কালোর বৈষম্য, ধনী-গরিব তথাকথিত শিক্ষিত ও অশিক্ষিতের পার্থক্য করে ব্যক্তি-সমাজ তথা বিশ্বব্যাপী এক ভয়াবহ অস্থিতিশীল পরিবেশ ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছে। যা সমগ্র বিশ্বের শান্তি শৃঙ্খলা বিনষ্ট করছে। অথচ আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বে বিশ্বনবী মুহাম্মাদ (সাঃ) মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার বিষয়ে আরাফাতের ময়দানে অমর কালজয়ী ভাষণে বিশ্ববাসীকে এই জঘন্য ব্যাধি বর্ণ- বৈষম্যের ব্যাপারে সতর্ক করে সর্বজনীন মানবাধিকারের কথা ঘোষণা করেন।

    আল্লাহ তায়ালা সূরা হুজরতের ১১ নাম্বার আয়াতে বলেনঃ ‘হে মুমিনগণ! কোনো সম্প্রদায় যেন অপর কোনো সম্প্রদায়কে উপহাস না করে; হতে পারে তারা উপহাসকারী থেকে উত্তম আর কোনো নারীও যেন অন্য নারীকে উপহাস না করে; হতে পারে তারা উপহাসকারীর চেয়ে উত্তম। আর তোমরা একে অপরকে নিন্দা করো না, ডেকো না একে অন্যকে মন্দ উপনামে।’

    উপরের আলোচনা থেকে বুঝতে পারলাম আল্লাহর কাছে তার বান্দারা সকলেই সমান। যার আমল যত সুন্দর তার নিকট সে তত প্রিয়। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিতে বৈষম্যের শেষ নেই। চাকুরির ক্ষেত্রে বৈষম্য, বিশ্ব বিদ্যালয় ভর্তিতে বৈষম্য, ধনী গরিবের বৈষম্য। কিন্তু আমরা যদি কোরআন ও হাদিসের দিকে তাকাই তাহলে বুঝতে পারবো এই বৈষম্য মূলক আচারণ সমাজ থেকে চিরতরে বিদায় দেওয়ার জন্যই আমাদের প্রিয় নবী (সাঃ) এই পৃথিবীতে আগমন করছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সকলকে একটি বৈষম্যহীন সমাজ তৈরি করার তাওফিক দিন আমিন।

    লেখক: শিক্ষক, তানযীমুল উম্মাহ হিফয মাদরাসা, নারায়ণগঞ্জ শাখা।

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031