ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নি-নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি
নিহারেন্দু চক্রবর্তী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবহুল স্থানে অগ্নি-নির্বাপন ব্যবস্থা জোরদার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে মাল্টি-পার্টি অ্যাডভোকেসি ফোরাম (ম্যাফ)। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট ২০২৫) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ লিখিতভাবে এ আবেদনপত্র দাখিল করেন।
ম্যাফ-এর পক্ষ থেকে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায়, বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও জনবহুল স্থানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও বড় ধরনের সম্পদহানিতে জনমনে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়াও এ ধরনের ঝুঁকির বাইরে নয়।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জরুরি নির্গমন পথ ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র স্থাপন বাধ্যতামূলক করতে হবে। একইসঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় নিয়মিত অগ্নি মহড়া ও প্রশিক্ষণের আয়োজন, আবাসিক ভবনে পরিচালিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অগ্নি নিরাপত্তা যাচাই, এবং অস্থায়ী খাবার দোকানে অগ্নি নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়।
এছাড়াও একটি আন্তঃবিভাগীয় ‘নিরাপদ শিক্ষা ও জনসেবা স্থাপনা সমন্বয় কমিটি’ গঠনেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়, যেখানে জেলা প্রশাসন, শিক্ষা অফিস, ফায়ার সার্ভিস, পৌরসভা, স্বাস্থ্য বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো একসাথে কাজ করবে।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, এবিএম মোমিনুল হক (সাধারণ সম্পাদক, ম্যাফ ও সহ-সভাপতি, জেলা বিএনপি), শামীম আহমেদ (আহ্বায়ক, তরী বাংলাদেশ), খালেদা মুন্নী (অর্থ সম্পাদক, ম্যাফ), মো. সাঈদ হাসান সানি, সমীর চক্রবর্তী, শাহাদাত হোসেন, শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়া (জিমি হৃদয়), আব্দুল্লাহ আল গাফফার রিমন, সাংবাদিক লিটন হোসাইন জিহাদ, ইমি আক্তার, ওমর ফারুক (আহ্বায়ক, ছাত্র ইউনিয়ন), মুনিয়া মাহিন (উদীচী), আজিজী (এনসিপি) ও শেখ আরিফ বিল্লাহসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
ম্যাফ নেতারা বলেন, শুধু আগুন নেভানোর প্রস্তুতি নয়, আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। শিশু-কিশোর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অগ্নি নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।
তারা আরও জানান, ২০১৯ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ম্যাফ নানা সামাজিক ও জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এর মধ্যে রয়েছে বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, নারী-নিরাপত্তা, যুব নেতৃত্ব উন্নয়নসহ বিভিন্ন উদ্যোগ।
জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সচেতন নাগরিকদের এমন উদ্যোগ অবশ্যই প্রশংসনীয়। আবেদনটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনায় নিয়ে বিভাগীয় পর্যায়ে আলোচনা করে বাস্তবায়নের সম্ভাব্য পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ শিক্ষা পরিবেশ নিশ্চিত করতে এ ধরনের সচেতনতামূলক ও অংশগ্রহণমূলক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন জেলার অভিভাবক ও সচেতন মহল।
বিআলো/এফএইচএস