ভর্তির ৮ মাসেও হলে সিট পাননি শিক্ষার্থীরা
শহিদুজ্জামান শাকিল, ঢাকা কলেজ: ভর্তি হওয়ার আট মাস পার হলেও ঢাকা কলেজের স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে পাননি সিট বরাদ্দ। দাবির মুখে বিভিন্ন সময় কলেজ কর্তৃপক্ষ নিয়ম মেনে নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দের আশ্বাস দিয়েছেন। তবু কলেজ প্রশাসনের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে ওঠা এবং নির্দেশনাবলির আলোকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সিট বাতিলে নেই দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ। কলেজ কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের দেওয়া তথ্যমতে, ছাত্রাবাসে সিট বরাদ্দ ও ওঠানামার নিয়মাবলি অনুযায়ী মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যে ওই বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে সিট বাতিল করা হবে। সংশ্লিষ্ট ফাঁকা সিটে নতুন শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা এক বছর ও অনার্সের শিক্ষার্থীরা শর্তসাপেক্ষে শিক্ষাবর্ষের অতিরিক্ত নিদিষ্ট সময় পর্যন্ত ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবে। তবে এখনো সিট বরাদ্দ না পাওয়ায় ছাত্রত্ব শেষ হওয়ার পরও কৌশলে হলে অবস্থানের আগের অপসংস্কৃতি ফেরার আশঙ্কা করছেন ঢাকা কলেজের ২০২৩-২৪ সেশনের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রাবাসে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দে কলেজ প্রশাসন উদ্যোগ না নেওয়ার হতাশা প্রকাশ করেছে ঢাকা কলেজ ২০২৩-২৪ সেশনের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, আমাদের প্রথম বর্ষ শেষ হওয়ার পথে অথচ এখনো কলেজ প্রশাসনের কাছ থেকে হলের বৈধ সিট নিয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য বা উদ্যোগ দেখতে পাইনি। আমরা তাদের কাছ থেকে দায়িত্বশীল ও অভিভাবকসূলভ আচরণ আশা করি। আমরা চাই দ্রæত সময়ের মধ্যে বৈধভাবে হলের সিট বরাদ্দ দেওয়া হোক। আমরা চাই না ফ্যাসিস্ট ছাত্র সংগঠনের মতো কোনো ছাত্র সংগঠন যেন অবৈধভাবে সিট দখল করে নিজেদের লোক উঠাক।
ইতিহাস বিভাগের ২০২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য এখনো হলে সিট বরাদ্দ না হওয়াটা আমাদের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার বিষয়। অনেকেই ভাড়া বাসায় থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছে, যা মানসিক ও আর্থিকভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। ঈদের ছুটির পূর্বে আমরা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাথে মিলে এই বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছি। বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি এবং দ্রæত সমাধান প্রত্যাশা করছি। প্রশাসনের বলে আসছে, সিট বরাদ্দের প্রক্রিয়া চলছে। শিগগিরই তা সম্পন্ন হবে। আমরা চাই, তাদের কথার পাশাপাশি দ্রæত বাস্তব পদক্ষেপ নেওয়ার হোক।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, মাস্টার্সের শিক্ষার্থীরা বলেছিল আমরা জুন পর্যন্ত থাকব। বিষয়টি নিয়ে মিটিং করে প্রতিটি ডিপার্টমেন্টে কার কত সিট খালি হবে, সেটার তালিকা দিলে সেই অনুযায়ী ডিপার্টমেন্টগুলোকে নোটিশ দিয়ে দেব। ডিপার্টমেন্ট অনুযায়ী আনুপাতিক হারে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সিট বরাদ্দ দেওয়া হবে। এ মাসের (জুন) মধ্যে আমরা সিট বরাদ্দ দিয়ে দিতে চাই; যেন জুলাই মাসে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের আর বলতে না হয়। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই তাদের রিমাইন্ডার দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের হলে সিট বরাদ্দের জন্য এ মাসে আবেদন নিয়ে জুলাই মাসে হলে ওঠানো বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করব। আবেদন, সিট বরাদ্দ ও বণ্টনের প্রজ্ঞাপন এ মাসেই মধ্যে শেষ করা হবে।
বিআলো/সবুজ