ভালুকায় আধুনিক পদ্ধতিতে আদা চাষে সফল আক্তার হোসেন
হাবিব জিহাদী, ভালুকা (ময়মনসিংহ): প্রবাস জীবন ছেড়ে নিজ দেশের মাটিতে ফিরে এসে কৃষিতে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার হবিরবাড়ি ইউনিয়নের মো. আক্তার হোসেন। আধুনিক পদ্ধতিতে বস্তায় আদা চাষ করে তিনি এখন এলাকার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ইউটিউব দেখে ধারণা নিয়ে এই চাষ শুরু করেন তিনি। আশা করছেন, মৌসুম শেষে আদা বিক্রি করে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা লাভ হবে। তাঁর এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন আশপাশের কৃষক ও তরুণরা।
মরহুম শুক্কুর আলীর ছেলে আক্তার হোসেনের জীবনের শুরুটা ছিল সাধারণ। অল্প পড়াশোনা শেষে স্থানীয় ওয়েল্ডিং শপে কাজ শুরু করেন তিনি। পরিশ্রম ও দক্ষতার মাধ্যমে ধীরে ধীরে অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এবং ২০০৭ সালে উন্নত জীবনের আশায় পাড়ি জমান সিঙ্গাপুরে। দশ বছরের প্রবাসজীবনে তিনি শিখেছেন শৃঙ্খলা ও আত্মনির্ভরতা। দেশে ফিরে ২০১৭ সালে সিডস্টোর বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা শুরু করেন।
কৃষির প্রতি টান থেকেই তিনি ইউটিউবে কৃষি বিষয়ক ভিডিও দেখে বস্তায় আদা চাষে আগ্রহী হন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে ও নিজের উদ্যোগে বাবার দেওয়া সাড়ে পাঁচ কাঠা জমিতে সাড়ে চার হাজার বস্তায় আদা চাষ শুরু করেন। কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর ক্ষেতজুড়ে সবুজের সমারোহ। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, কিছু বস্তা ফেটে যাওয়া ভালো ফলনের ইঙ্গিত।
আক্তার হোসেন জানান, বীজ, সার, সেচ ও পরিচর্যায় এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে প্রায় এক লাখ ৮১ হাজার টাকা। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে আদা উত্তোলনের সময় পর্যন্ত আরও ৫০ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। তিনি আশা করছেন, অন্তত পাঁচ মেট্রিক টন আদা উৎপন্ন হবে- যা বিক্রি করে প্রায় সাড়ে সাত লাখ টাকা আয় সম্ভব। সব খরচ বাদে লাভ হবে অন্তত পাঁচ লাখ টাকা।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনির হোসেন বলেন, বস্তায় চাষে ছত্রাকের আক্রমণ কম হয় এবং বৃষ্টিতেও আদা নষ্ট হয় না। জমির চাষের চেয়ে এটি অনেক বেশি লাভজনক। ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, অল্প জায়গায় এই পদ্ধতিতে আদা চাষ করা যায়, এমনকি ঘরের ছাদেও সম্ভব। ফলনও হয় ভালো। আক্তারের এই সফলতা অন্য কৃষকদেরও অনুপ্রেরণা দেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
বিআলো/শিলি



