ভূমি অফিসে ঘুষের ভিডিও ভাইরাল, তহসিলদার বদলি
সজীব আলম, লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। সম্প্রতি ওই ভূমি অফিসের পিয়ন নয়ন কুমারের ঘুষ গ্রহণের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুকে) ভাইরাল হলে বিষয়টি ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দেয়।
নেটদুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ২১ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়— অভিযুক্ত পিয়ন নয়ন কুমার অফিসে আসা এক সেবাপ্রত্যাশীর কাছ থেকে ঘুষের টাকা গুনে নিচ্ছেন। যদিও বর্তমানে সব ধরনের ভূমি সেবা অনলাইনে চালু রয়েছে, তবুও নয়ন কুমার কৌশলে সেবাপ্রত্যাশীদের ভুল বুঝিয়ে রীতিমতো দরকষাকষি করে টাকা নিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার পর বিষয়টি গোপন রাখার প্রচেষ্টা হিসেবে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দ্রুত কাকিনা ইউনিয়নের তহসিলদারকে অন্যত্র বদলি করেন। তবে অজ্ঞাত কারণে অভিযুক্ত পিয়ন নয়ন কুমার এখনও একই পদে বহাল রয়েছেন।
সরেজমিনে জানা যায়, পিয়ন নয়ন কুমার ভূমি অফিসে জমির নামজারি, খাজনা-খারিজ প্রদান, অনলাইন আবেদন ও পর্চা উত্তোলনসহ বিভিন্ন সেবা দিয়ে বাড়তি টাকা নিচ্ছেন— যদিও এসব কাজ তার দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না।
ঘুষ নেওয়ার বিষয়ে নয়ন কুমার অকপটে স্বীকার করে বলেন, “আমি ডিসিআর বাবদ ১,৫০০ টাকা নিয়েছি। এর মধ্যে নির্ধারিত ফি ১,১০০ টাকা, বাকি ৪০০ টাকা নিয়েছি যাতায়াত খরচ হিসেবে।”
এদিকে, ওই অফিসে দীর্ঘদিন পিয়ন হিসেবে চাকরি করে অবসর নেওয়া আব্দুস সালাম নামের এক ব্যক্তি এখনও দালালি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অফিসের চাবি ও গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও তার কাছে থাকে বলে জানা গেছে। তবে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, নয়ন কুমার প্রতিদিন রংপুরের নিজ বাড়ি থেকে ব্যক্তিগত গাড়িতে অফিসে আসেন। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, গাড়িটি তার শ্বশুর উপহার দিয়েছেন। তবে প্রতিদিনের জ্বালানির খরচ কোথা থেকে আসে— সে প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।
কালীগঞ্জ উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহেদী ইমাম বলেন, “সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আমি দেখেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। অপরাধ প্রমাণিত হলে বিধিমতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিআলো/শিলি