মস্কোতে হামলা চালানো উচিত নয় জেলেনস্কির: ট্রাম্প
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পিছু হটলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি এখন বলছেন, রাশিয়ার রাজধানী মস্কোয় হামলা চালানো উচিত হবে না ইউক্রেনের। যদিও সম্প্রতি তিনি মস্কোতে হামলা চালানোর অনুমতি দিয়েছিলেন বলে ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের ওই প্রতিবেদন মতে, গত ৪ জুলাই ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে এক ফোনালাপকালে ট্রাম্প তাকে রাশিয়ার গভীরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর ব্যাপারে উৎসাহ দেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জেলেনস্কির কাছে জানতে চেয়েছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে দূরপাল্লার অস্ত্র সরবরাহ করলে তিনি মস্কোতে কিংবা সেন্ট পিটার্সবার্গে হামলা চালাতে পারবেন কি না।
জবাবে জেলেনস্কি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহ করে এমন হামলা সম্ভব। ফোনালাপটি হয় পুতিনের সঙ্গে ট্রাম্পের ফোনালাপের পরদিন। হোয়াইট হাউসের সূত্র জানায়, পুতিনের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ ছিলেন ট্রাম্প।
এদিকে কিয়েভ পোস্ট জানিয়েছে, এরপর ট্রাম্প গত ১১ জুলাই হোয়াইট হাউসে তার কর্মীদের সাথে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে আলোচনা করেন। আলোচনাটি ইউরোপীয় অর্থায়নে ঘোষিত ১০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র প্যাকেজ ঘোষণার মাত্র কয়েকদিন আগে হয়।
নতুন অস্ত্র প্যাকেজে ইউক্রেনকে ১৭টি প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র, কামান এবং অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত থাকবে বলে জানা গেছে। এই অস্ত্রগুলো প্রথমে ন্যাটো দেশগুলোর কাছে বিক্রি করা হবে। এরপর সেগুলো ইউক্রেনে স্থানান্তর করা হবে।
এই প্যাকেজে যদিও টমাহক অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, তবে ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে, ট্রাম্প এটাকে (টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ) পুতিনকে আলোচনার টেবিলে বসানোর ক্ষেত্রে তার উপর চাপ বাড়ানোর একটি উপায় হিসাবে বিবেচনা করছিলেন। টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পাল্লা ১৬০০ কিলোমিটার। এগুলো খুব সহজেই মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গে আঘাত হানতে সক্ষম।
বিষয়টি সামনে আসার পর বিতর্ক শুরু হওয়ায় পিছু হটার ইঙ্গিত দিলেন ট্রাম্প। বিবিসির প্রতিবেদন মতে, মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) তিনি এক বক্তব্যে বলেন, জেলেনস্কির মস্কোয় হামলা না চালানো হবে না। যুক্তরাষ্ট্রও দীর্ঘপাল্লার কোনো ক্ষেপণাস্ত্র ইউক্রেনকে দিতে চায় না।
এদিকে হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকেও বিষয়টির একটা ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, জেলেনস্কির সাথে ফোনালাপে ট্রাম্প আসলে পরিস্থিতি বোঝার জন্য প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি কাউকে হত্যার উসকানি দিতে চাননি। প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘তিনি (ট্রাম্প) এই যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং হত্যাযজ্ঞের অবসান ঘটাতে নিরন্তর চেষ্টা করছেন।’
এর আগে গত সোমবার ট্রাম্প ঘোষণা দেন, যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে আরও অস্ত্র পাঠাবে। একই সাথে তিনি রাশিয়াকে হুঁশিয়ারি দেন, তারা যদি ৫০ দিনের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে না আসে, তাহলে রাশিয়ার বাকি বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
বিআলো/শিলি