মানবতাবিরোধী অপরাধ: সেনা কর্মকর্তাদের আদালতে আনা হচ্ছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আজ বুধবার সকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে হাজির করা হচ্ছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা প্রাথমিকভাবে সকাল ৬টা থেকেই জোরদার করা হয়েছে, যেখানে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এবং সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে।
আজ ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলের সামনে আনুষ্ঠানিক অভিযোগের শুনানি হবে। তিনটি মামলায় মোট ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছে, যার মধ্যে দুইটিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নামও রয়েছে। এই মামলায় মোট ২৫ সেনা কর্মকর্তার নাম রয়েছে, যাদের মধ্যে ১৫ জনকে ইতোমধ্যেই হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
প্রথম মামলায় র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগে ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে। আরেকটি মামলায় জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে গুমের ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর রামপুরায় জুলাই-আগস্ট আন্দোলনকালে ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় বিজিবির কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামসহ চারজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম অভিযোগ আমলে নিয়ে আসামিদের বিচারিক প্রক্রিয়ার আওতায় আনার আবেদন করবেন। ট্রাইব্যুনাল তাদের হাজির হলে জামিন বা কারাগারে প্রেরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত দিতে পারে।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ১৫ হেফাজতে থাকা কর্মকর্তাকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। সেনাবাহিনী নিশ্চিত করেছে যে বিচার প্রক্রিয়ার সঙ্গে কোনো আপস হবে না এবং আইন নিজস্ব গতিতে চলবে।
সংবিধান বিশেষজ্ঞরা মনে করিয়ে দিয়েছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার শুধুমাত্র আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন, ১৯৭৩ অনুযায়ী সম্ভব, যা সংবিধান দ্বারা সুরক্ষিত। সাধারণ আইন বা সামরিক বাহিনীর নিজস্ব আইনে এ ধরনের অপরাধের বিচার করা যায় না।
আজকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে ট্রাইব্যুনাল ও হাইকোর্টের আশপাশে সকাল থেকেই ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ভোর থেকেই পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও এপিবিএনের সদস্যরা ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে অবস্থান নিয়েছেন।
বিআলো/শিলি



