• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা বন্ধ ও মূল হোতাদের বিচারের দাবি 

     dailybangla 
    03rd Oct 2024 7:51 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    মোঃ ইব্রাহিম হোসেন: মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী প্রেরণে সিন্ডিকেট চক্রের তৎপরতা বন্ধ এবং সিন্ডিকেটের মূলহোতা রুহুল আমিন স্বপনসহ সিন্ডিকেটের পরিকল্পনাকারী, বাস্তবায়নকারী, নিয়ন্ত্রণকারী আওয়ামী লীগ সরকারে জড়িত মন্ত্রী এমপি ও নেতাদের বিচারের দাবি জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

    বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি ডিআরইউতে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাধারণ সদস্যদের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।

    সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বায়রার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম, সিনিয়র সদস্য খন্দকার আবু আশাফক, কার্যনির্বাহী সদস্য কামাল উদ্দীন দিলু, হক মাজহারুল ইসলাম প্রমুখ।

    সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে বায়রার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, বিগত সরকারের আমলে প্রত্যেক সেক্টরে বিভিন্নভাবে সিন্ডিকেট প্রথা তৈরি হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় বৈদেশিক কর্মসংস্থানের খাতকে এক সিন্ডিকেট চক্র চরমভাবে কলঙ্কিত করেছে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও অতিরিক্ত অভিবাসনের কারণে চলতি বছর ৩১ মে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ায় ৫০ হাজার কর্মী সেখানে যেতে পারেনি। যার মধ্যে ১৭ হাজার ছিল চূড়ান্তভাবে ট্রেনিং সম্পন্ন করা। যার ফলে কর্মী ও এই সেক্টরের উদ্যোক্তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    তিনি বলেন, সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও নেতাদের নিয়ে এই সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছিলেন বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন, লেফটেন্যান্ট জেনারেল অব. প্রাপ্ত মাসুদ উদ্দিন চৌধুরি নিজাম হাজারি, বেনজির আহমেদ, মহিউদ্দিন মহিসহ আরো অনেকে। এরইমধ্যে আইএলও, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এই বিষয়ে উদ্বেগ এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সরকারকে অনুরোধ করেছে।

    সিন্ডিকেটের কারণে মালয়েশিয়া যাওয়া কর্মীদেরকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়েছে, যেখানে সিন্ডিকেটের চাঁদা ছিল জনপ্রতি ১ লাখ ৫২ হাজার টাকা। এই অতিরিক্ত চাঁদার কারণে বড় বড় কোম্পানি গুলো, যারা বিনা পয়সায় কর্মী নেয়, তারাও বাংলাদেশ থেকেও কর্মী না নিয়ে নেপাল থেকে নিয়েছে। অনেকে আবার কর্মী নিতেই পারেনি। এই সিন্ডিকেটের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে শ্রম বাজার বন্ধ হওয়ায় ৫০ হাজার কর্মী যেতে পারেনি।

    রিয়াজ উল ইসলাম আরো বলেন, কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, এতকিছুর পরও স্বৈরাচারী সরকারের দোসর রুহুল আমিন স্বপন ও কাজী মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আবারো সিন্ডিকেট করার অপচেষ্টা চলছে।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বায়রার সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম বলেন, বিগত স্বৈরাচার সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে সিন্ডিকেট সৃষ্টি করা হয়। যার মূলহোতা ছিলেন বায়রার সাবেক সভাপতি রুহুল আমীন ও কাজী মফিজুর রহমান। এই হোতাদের সহযোগিতা করতেন তখন মন্ত্রী আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা বায়রাকে একটি দলীয় সংগঠন হিসেবে ব্যবহার করতেন।

    তিনি আরও বলেন, সিন্ডিকেটে রহুল আমীনের সঙ্গে ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, সাবেক এমপি নিজাম হাজারী, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ও আওয়ামী লীগ নেতা মহিউদ্দিন আহমেদ। ফখরুল ইসলামের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সেই সময় ৫০ হাজার শ্রমিক প্রতারণা হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা নেওয়া হয়েছে। ফলে এই সেক্টরের উদ্যোক্তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

    সংবাদ সম্মেলন এই সিন্ডিকেট কীভাবে করা হয়েছিল এই প্রশ্নে ফখরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশি বংশধর দাতুশ্রী আমীনের পার্টনার বায়রার সাবেক মহাসচিব রহুল আমীন এই সিন্ডিকেট তৈরি করে।

    ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, দাতুশ্রী আমিনের মালয়েশিয়ান আইটি কোম্পানি Bestinet এবং এই কোম্পানির Manpower Recruitment Online পদ্ধতি FWCMS (Foreign workers centralized Management system), এই পদ্ধতির মাধ্যমে মালয়েশিয়া সরকারের সঙ্গে শুধু বিদেশ থেকে কর্মী আনয়নের অনলাইন সাপোর্ট এর জন্য চুক্তি হয় কিন্তু দাতুশ্রী আমিন নূর দুই দেশের সরকারের অসাধু লোকদের এবং বাংলাদেশে তার পার্টনার রুহুল আমিন স্বপনকে ব্যবহার করে উক্ত পদ্ধতির অপব্যবহার করে কর্মী পাঠানোর সকল প্রক্রিয়া কন্ট্রোল করে অর্থাৎ FWCMS ব্যবহার করে ম্যানপাওয়ার ব্যবসায় লিপ্ত হয়-উক্ত Fwcms online পদ্ধতির মাধ্যমে মালয়েশিয়া আরও ১৪টি দেশ থেকে কর্মী নিলেও বাংলাদেশ ছাড়া কোনো দেশে কোনো প্রকার সিন্ডিকেট করতে পারেনি।

    সংবাদ সম্মেলনে বায়রার প্রতিনিধিরা ৮টি দাবি তুলে ধরেন। তাদের দাবিগুলো হলো-

    ১. সিন্ডিকেটের মূল হোতা রুহুল আমিন স্বপনসহ সিন্ডিকেটের পরিকল্পনাকারী, বাস্তবায়নকারী, নিয়ন্ত্রণকারী আওয়ামী লীগ সরকারে জড়িত মন্ত্রী এমপি ও নেতাদের অনতিলম্বে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

    ২. কোনোক্রমেই সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের পদাঙ্ক অনুসরণ করে সিন্ডিকেটে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। যদি সিন্ডিকেট করার পুনরায় সুযোগ দেওয়া হয় তাহলে বর্তমান সরকারের সঙ্গে আগের সরকারের কোনো পার্থক্য থাকবে না।

    ৩. দুই দেশের এমওইউ সন্নিবেশিত বাংলাদেশের রিক্রুটিং এজেন্সি মালয়েশিয়া সরকার সিলেকশন করার সুযোগ বাতিল করতে হবে। রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি সিলেকশন করবে নিয়োগকর্তা। সিন্ডিকেট মুক্তভাবে সব এজেন্সি কম খরচে বা বিনা খরচে কর্মী পাঠানোর জন্য মন্ত্রণালয় পক্ষ থেকে সেন্ট্রাল অনলাইন পদ্ধতিসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

    ৪. সিন্ডিকেটের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নির্দিষ্ট সময়ে যেসব কর্মী যেতে পারেনি, তাদেরকে কম খরচে সিন্ডিকেটমুক্তভাবে পুনরায় মালয়েশিয়া পাঠাতে হবে।

    ৫. নেপালসহ অন্যান্য ১৩টি দেশ থেকে মালয়েশিয়া যে প্রক্রিয়ায় কর্মী গ্রহণ করে ঠিক বাংলাদেশ থেকেও একই প্রক্রিয়ায় শ্রমিক পাঠাতে হবে।

    ৬. বিতর্কিত ও দুর্নীতিগ্রস্ত FWCMS online পদ্ধতি বাদ দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব অনলাইন পদ্ধতি এবং মালয়েশিয়া সরকারের প্রস্তাবিত ই-প্যাক্স বা ম্যানুয়াল পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

    ৭. FWCMS এর মাধ্যমে মেডিকেল পদ্ধতি বাদ দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদিত যে কোন মেডিকেল সেন্টারের মাধ্যমে মেডিকেল চেকআপ করার ব্যবস্থা করতে হবে।

    ৮. ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে চালু হওয়া দূতাবাসের সত্যায়ন অব্যাহত রাখা এবং সিন্ডিকেটকে সহায়তাকারী সাবেক ফ্যাসীবাদী আমলে নিয়োগকৃত মন্ত্রণালয় ও দূতাবাসের কর্মকর্তাদের অপসারণ করতে হবে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031