• যোগাযোগ
  • অভিযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে নতুন বিতর্ক ‘অবাস্তব শর্ত তুলে নেওয়ার’ দাবি জনশক্তি রপ্তানিকারকদের 

     dailybangla 
    30th Oct 2025 11:46 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে আরোপিত নতুন শর্তগুলোকে ‘অযৌক্তিক’, ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ ও ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বলে দাবি করেছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকদের একাংশ। তারা বলছেন, এসব শর্ত দেশের শ্রমবাজারকে আবারও নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়ার নতুন কৌশল। বৃহস্পতিবার বিকালে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের কাছে এসব শর্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন তারা।

    স্মারকলিপিতে স্বাক্ষর করেছেন বায়রার সাবেক সভাপতি এম এইচ সেলিম, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি রিয়াজ-উল-ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব ফখরুল ইসলাম, আকবর হোসেন মঞ্জু, নির্বাহী সদস্য হক জহিরুল জো, কামাল উদ্দিন এবং ক্রীড়া, বিনোদন ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক রেহেনা পারভীন। তাদের মতে, ঘোষিত শর্তগুলো শুধু অযৌক্তিকই নয়, বরং দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য ‘অসহনীয় বোঝা’।

    এর আগে বুধবার প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় জানায়, মালয়েশিয়ার দেওয়া ১০টি শর্ত পূরণ করতে পারলেই রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোকে কর্মী পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হবে। এজন্য ৭ নভেম্বরের মধ্যে আগ্রহী এজেন্সিগুলোকে আবেদন করতে বলা হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে ন্যূনতম ১০ হাজার বর্গফুটের অফিস, পাঁচ বছরের অভিজ্ঞতা, গত পাঁচ বছরে অন্তত তিন হাজার কর্মী পাঠানোর রেকর্ড, তিন বছর ধরে ব্যবসা পরিচালনার প্রমাণ, পাঁচ নিয়োগকর্তার প্রশংসাপত্র ও নিজস্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থাকা বাধ্যতামূলক।

    স্মারকলিপিতে বায়রার সাবেক নেতারা বলেছেন, এসব শর্ত “অবাস্তব, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও অগ্রহণযোগ্য।” তারা উল্লেখ করেন, “১৯৯১ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত আমরা কোনো শর্ত ছাড়াই মালয়েশিয়ায় লাখ লাখ কর্মী পাঠিয়েছি। কিন্তু ২০১৭ সাল থেকে শুরু হয় অবৈধ সিন্ডিকেট, বৈষম্য, শোষণ ও হাজার কোটি টাকার লুটপাট।” তাদের দাবি, “বাংলাদেশের প্রতিটি রিক্রুটিং এজেন্সি সরকারের সকল ক্রাইটেরিয়া পূরণ করেই লাইসেন্স পেয়েছে। সারা বিশ্বে আমরা সফলভাবে কর্মী পাঠাচ্ছি, কিন্তু কোনো দেশেই এমন কঠোর শর্ত আরোপ করা হয়নি।”

    স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, কোভিড মহামারী, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধ, মালয়েশিয়া শ্রমবাজারে সিন্ডিকেট কার্যক্রম, সৌদি দূতাবাসের তালিকাভুক্তিতে জটিলতা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে কর্মী পাঠানো বন্ধ থাকায় গত পাঁচ-ছয় বছর অধিকাংশ এজেন্সি কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক শ্রমিক পাঠাতে পারেনি। “এ অবস্থায় তিন বছর ধরে ১০ হাজার বর্গফুটের অফিস পরিচালনা এবং নিজস্ব ট্রেনিং সেন্টার থাকার শর্ত শুধু অবাস্তবই নয়, বরং অত্যন্ত ব্যয়বহুল,” বলা হয় স্মারকলিপিতে। তারা আরও যুক্তি দেন, “এতে অভিবাসন ব্যয় আরও বাড়বে, যা সাধারণ শ্রমিকদের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করবে।”

    বায়রার সাবেক নেতারা বলেন, “মালয়েশিয়ার সি লাইসেন্সধারী কোনো রিক্রুটিং এজেন্সিরও ১০ হাজার বর্গফুটের অফিস নেই। এমনকি নেপাল, পাকিস্তান, ভারত, মিয়ানমার, ফিলিপিন্স কিংবা ইন্দোনেশিয়া—কোনো দেশেই এমন শর্ত নেই।” তাদের দাবি, এই শর্তগুলোর মাধ্যমে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারকে আবারও কিছু প্রভাবশালী এজেন্সির হাতে তুলে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে।

    উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর দায়িত্বে ছিল মাত্র ১০টি নির্দিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সি। ২০২১ সালে নতুন এক সমঝোতা স্মারক (MoU)-এর মাধ্যমে এই সংখ্যা বাড়িয়ে ১০০ করা হয়। তবে তাতেও গড়ে ওঠে নতুন একটি সিন্ডিকেট—যেখানে ২০-২৫টি এজেন্সি মালয়েশিয়ার কর্মী পাঠানোর পুরো প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে থাকে।

    দুদকের অনুসন্ধান অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে সরকারি নির্ধারিত ব্যয় ছিল জনপ্রতি ৭৯ হাজার টাকা। কিন্তু বাস্তবে শ্রমিকদের গড়ে খরচ করতে হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার টাকা পর্যন্ত। এর মধ্যে সিন্ডিকেটভুক্ত এজেন্সিগুলোই নিয়েছে প্রায় ১ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা।

    বায়রার সাবেক নেতারা দাবি করেন, “এই নতুন শর্তগুলো সিন্ডিকেট পুনর্গঠনের আরেকটি কৌশল ছাড়া কিছু নয়। এতে বিদেশগামী শ্রমিকদের কোনো লাভ হবে না, বরং বাজার নিয়ন্ত্রণে নতুন প্রভাবশালী গোষ্ঠী গড়ে উঠবে।”

    তারা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, এসব শর্ত অবিলম্বে প্রত্যাহার করে প্রয়োজনে সরকারি সংস্থা বোয়েসেলকে (BOESL) প্রধান এজেন্ট হিসেবে রেখে সব রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। তাদের মতে, এটি না হলে শ্রমবাজারে আবারও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বাড়বে এবং সাধারণ শ্রমিকদের ওপর আর্থিক বোঝা আরও বাড়বে।

    তাদের ভাষায়— “এটি সিন্ডিকেট করার নতুন এক পদ্ধতি। এসব শর্তের সঙ্গে বিদেশগামী শ্রমিকদের স্বার্থের কোনো সম্পর্ক নেই; বরং এগুলো কেবল নিয়ন্ত্রণ ও মুনাফার হাতিয়ার।”

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    October 2025
    M T W T F S S
     12345
    6789101112
    13141516171819
    20212223242526
    2728293031