মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের আহ্বান: জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকে কর্মরত চার বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা সনদধারী মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবিতে সাংবাদিক সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট এসোসিয়েশন (বিএমটিএ)।
জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি খাজা মাঈন উদ্দিন মঞ্জু এবং লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মহাসচিব মো. বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব। দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আগত প্রায় দুই শতাধিক মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, সম–শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও ডিপ্লোমা নার্স, প্রকৌশলী ও কৃষিবিদরা বহু আগেই দশম গ্রেড পেলেও মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা এখনো বৈষম্যের শিকার। প্রায় তিন দশক ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম চললেও ফাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে লাল ফিতার দৌরাত্ম্যে আটকে আছে বলে অভিযোগ করেন তারা।
বিএমটিএ নেতারা আরও বলেন, মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের অবমূল্যায়ন চিকিৎসা ব্যবস্থাকে ব্যাহত করছে। রোগ নির্ণয় ও পরীক্ষার কাজে তারা সরাসরি সম্পৃক্ত হলেও উপযুক্ত মর্যাদা থেকে বঞ্চিত। বক্তারা সতর্ক করে বলেন, নভেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে আন্দোলনের বিকল্প থাকবে না। তবে তারা জনদুর্ভোগ এড়িয়ে শান্তিপূর্ণ উপায়ে দাবি আদায়ের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
১১ দফা দাবির মূল পয়েন্টসমূহ:
১. চাকরির শুরুতেই মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট ও ফার্মাসিস্টদের ১০ম গ্রেড (দ্বিতীয় শ্রেণীর গেজেটেড পদমর্যাদা) প্রদান।
২. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নীতিমালা অনুযায়ী নতুন পদ সৃষ্টি ও দ্রুত নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন।
৩. রাষ্ট্রীয় চিকিৎসা অনুষদকে ডিপ্লোমা মেডিকেল এডুকেশন বোর্ডে রূপান্তর।
৪. স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে মেডিকেল টেকনোলজিষ্টদের জন্য পৃথক পরিদপ্তর/উইং গঠন।
৫. গ্রাজুয়েট টেকনোলজিষ্টদের জন্য নবম গ্রেডের পদ সৃষ্টি ও পদোন্নতির সুযোগ নিশ্চিত।
৬. সব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মেডিকেল টেকনোলজি অনুষদ চালু।
৭. আইএইচটি-তে বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের ১০০% স্টাইপেন্ড ও ইন্টার্ন ভাতা প্রদান।
৮. মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট কাউন্সিল গঠন ও “নিরাপদ খাদ্য আইন” স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পুনঃঅন্তর্ভুক্তি।
৯. বেসরকারি খাতে প্রাইভেট সার্ভিস নীতিমালা ও সরকারি বেতন কাঠামো অনুসরণ।
১০. ঝুঁকিভাতা, ইউজার ফি চালু ও উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সম্প্রসারণ।
১১. দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি চালু।
সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন— এ কে এম মুসা লিটন, রওশন আলী রাজু, হাফিজুর রহমান, মামুনুর রশীদ, আমিনুল হক, রুহুল আমীন, দবির উদ্দিন তুষার, সাইদুর রহমান সিদ্দিকীসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
বক্তারা বলেন, চিকিৎসা সেবার মূলভিত্তি হলো সঠিক রোগ নির্ণয়, আর সেটিই করেন মেডিকেল টেকনোলজিষ্টরা। অথচ তারা দীর্ঘদিন অবহেলিত। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে এই অন্তর্বর্তীকালীন সময়েই তাদের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়ন সম্ভব।
বিআলো/এফএইচএস



