যাত্রাবাড়ীতে শহীদ মিরাজের মরদেহ মৃত্যুর ৯৮ দিন পর উত্তোলন
সজীব আলম, লালমনিরহাট: মৃত্যুর ৯৮ দিন পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়া শহীদ মিরাজ খানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) ভোররাতে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের নিজ বাসভবনের কবরস্থান থেকে তার মরদেহ উত্তোলন করা হয়। আদালতের নির্দেশে মিরাজের মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
নিহত মিরাজ মহিষখোঁচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করতো। সে উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের খানপাড়া এলাকার আব্দুস সালামের ছেলে। পরিবারের আর্থিক অস্বচ্ছলতায় পড়াশুনা করতে না পেরে নিজ খরচে স্থানীয় একটি কলেজে ভর্তি হয়ে ঢাকায় একটি মোবাইলের দোকানে কাজ করতো মিরাজ।
এসময় ছাত্রত্বের টানে ঢাকার যাত্রাবাড়িতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের একটি মিছিলে অংশ নেন সে। গত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালানোর পর মিছিলে দুর্বৃত্তদের গুলিতে সে গুরুতর আহত হয়। পরে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা ঢাকায় মেডিক্যালে ও ক্লিনিকে অপারেশন করানোর জোর চেষ্টা করেও চিকিৎসকের দেখা না পাওয়ায় রংপুর মেডিক্যালে নিয়ে আসেন। সেখানে গত ৮ আগস্ট চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর তার পিতা আব্দুস সালাম ঢাকার যাত্রাবাড়ী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে লালমনিরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. মোতাহের হোসেন, লালমনিরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. নুরুজ্জামান আহমেদ (সাবেক মন্ত্রী) ও লালমনিরহাট-৩ আসনের সংসদ সদস্য মো. মতিয়ার রহমানসহ মোট ৩৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এছাড়াও আরো ৩শ’ থেকে ৪শ’ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।
মরদেহ উত্তোলনের সময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) একেএম ফজলুল হক, আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নূরে আলম সিদ্দিকী, আদিতমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার সানাউল হাসানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক কাওসার হোসেন বলেন, ভিকটিম মিরাজের পিতার দায়েরকৃত মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।
বিআলো/তুরাগ