যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক হ্রাসে পোশাক খাতের স্বস্তি: বিজিএমইএ সভাপতির সংবাদ সম্মেলন
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত—তৈরি পোশাক—সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক হ্রাসের ফলে বড় ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান। শনিবার (২ আগস্ট) ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।
সভাপতি বলেন, “আমাদের উদ্বেগ ছিল যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫% পর্যন্ত অতিরিক্ত শুল্কের কারণে আমাদের পোশাক রপ্তানি মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়বে। এখন সেই শুল্ক ২০ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে, যা চীন, ভারত ও ভিয়েতনামের মতো দেশগুলোর সঙ্গে তুলনামূলকভাবে ভারসাম্যপূর্ণ।”
তিনি জানান, এই সাফল্য আসতে সময় লেগেছে এবং তা সম্ভব হয়েছে সরকারের বিভিন্ন স্তরের আন্তরিক প্রচেষ্টায়। বাণিজ্য উপদেষ্টা, নিরাপত্তা উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, “২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্র ‘লিবারেশন ডে ট্যারিফ’ নামে নতুন শুল্ক কাঠামো ঘোষণা করে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে ৩৭.৬% পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়। তবে আমরা আলোচনার জন্য ৯০ দিনের সময় পাই। সরকার ও বিজিএমইএ ঐ সময়টিকে কাজে লাগিয়ে ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন মহলে আলোচনায় সক্রিয় অংশ নেয়।”
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি জানান, যুক্তরাষ্ট্রে একটি লবিস্ট গ্রুপ নিয়োগ দিয়ে কাজ শুরু করা হয় এবং মার্কিন দূতাবাস ও অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হয়। এই প্রচেষ্টায় গণমাধ্যমের অবদানকেও তিনি কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি তৈরি পোশাকের উপর সর্বমোট শুল্ক ৩৬.৫%। তবে আমেরিকান তুলা ও কাঁচামাল ব্যবহারে শুল্ক ছাড়ের সুযোগ থাকছে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, “এখন আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অন্যান্য দেশের আলোচনা চলমান এবং শুল্ক আরও হ্রাস পেতে পারে।”
তিনি শিল্প মালিক, উদ্যোক্তা ও সরকারকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজে বিনিয়োগ, পণ্যের বৈচিত্র্য, ডিজাইন উদ্ভাবন ও উৎপাদন খরচ কমানো এখন সময়ের দাবি। বিশেষ করে ছোট ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের টিকিয়ে রাখতে সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে।”
সভাপতি মাহমুদ হাসান জানান, বিজিএমইএ ভবিষ্যতে তথ্য-ভিত্তিক বিশ্লেষণ, স্টেকহোল্ডারদের মতামত ও সদস্যদের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করবে।
তিনি বলেন, “আমরা যদি শিল্প মালিক, সরকার, শ্রমিক সংগঠন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং নাগরিক সমাজ মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করি, তাহলে এই নতুন চ্যালেঞ্জও আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করতে পারবো।”
বিআলো/তুরাগ