লিসবনে ভয়াবহ ক্যাবল রেল দুর্ঘটনা: ১৫ জন নিহত, আহত ১৮
আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে ঘটে গেল এক মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ঐতিহাসিক এলিভাদোর গ্লোরিয়া নামের ফানিকুলার (ক্যাবল রেল) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভবনের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান অন্তত ১৫ জন যাত্রী। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও ১৮ জন। নিহতদের মধ্যে দেশি-বিদেশি নাগরিক রয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে বিদেশি যাত্রীদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত করা যায়নি।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ফানিকুলারটি হঠাৎ করেই দ্রুতগতিতে নিচে নামতে শুরু করে। মুহূর্তের মধ্যেই সেটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের একটি ভবনে আছড়ে পড়ে। ভেঙে যায় কাঠের বগি, চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে ধ্বংসস্তূপ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়ে মাত্র পাঁচ মিনিটের মধ্যেই পুলিশ ও দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহতদের দ্রুত লিসবনের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসকদের ভাষ্য, আহতদের মধ্যে পাঁচজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আহতদের মধ্যে এক গর্ভবতী নারী ও তার শিশু সন্তানও রয়েছে। গর্ভবতী নারীকে বিশেষায়িত মেটারনিটি হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। তার শিশুকে নেয়া হয়েছে শিশু হাসপাতাল দোনা এস্টেফানিয়াতে।
এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় দেশজুড়ে শোক নেমে এসেছে। বৃহস্পতিবার পর্তুগালে জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। লিসবনের মেয়র কার্লোস মোয়েদা জানিয়েছেন, টানা তিন দিন শহরে শোক পালিত হবে।
তিনি বলেন—”আমাদের শহরে আগে কখনো এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেনি। যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহর কর্তৃপক্ষ সব পরিস্থিতিতে তাদের পাশে থাকবে।”
১৮৮৫ সালে চালু হওয়া এলিভাদোর গ্লোরিয়া ফানিকুলার রেল লিসবনের অন্যতম জনপ্রিয় পরিবহন ব্যবস্থা। রেস্তোরাদোরেস থেকে বাইরো আলতো এলাকায় সংযোগ স্থাপনকারী এ রেলটি প্রায় ১৪০ বছর ধরে চালু আছে। সাত পাহাড়ের শহর লিসবনে মানুষের যাতায়াত সহজ করতে একাধিক ফানিকুলার লাইন পরিচালিত হচ্ছে। তবে দুর্ঘটনার পর আপাতত সব ফানিকুলার সেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
বিআলো/তুরাগ