শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে নেটওয়ার্ক স্থাপন নিয়ে অনিশ্চয়তা
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের মোবাইল নেটওয়ার্কের অবকাঠামো স্থাপন কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে অন্তত ১৮ দফা চিঠি চালাচালি হয়েছে। তিন বছর ধরে বিষয়টি নিয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) কাছে ধরনা দিচ্ছে মোবাইল অপারেটররা। এখনো এর সুরাহা হয়নি। এ বছরের শেষের দিকে টার্মিনালটি চালু হওয়ার কথা।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, তৃতীয় টার্মিনালে মোবাইল নেটওয়ার্কের অবকাঠামো স্থাপনের কাজ বেবিচক তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে করাতে চাইছে। তবে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যামটবের ভাষ্য, এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। বিটিআরসিও বলছে, আইন অনুযায়ী অপারেটরদের বাইরে অন্য কারও মোবাইল নেটওয়ার্ক স্থাপনের সুযোগ নেই।
সম্প্রতি এক চিঠিতে, তৃতীয় টার্মিনালে নেটওয়ার্ক বসাতে মোবাইল অপারেটরদের টেন্ডারে অংশ নিতে বলেছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। যেখানে সর্বোচ্চ আর্থিক দরদাতা একটি মাত্র অপারেটর নির্বাচিত হবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত অপারেটর অন্যদের নেটওয়ার্ক কাভারেজ নিশ্চিত করবে। প্রাথমিকভাবে চুক্তির মেয়াদ হবে ৫ বছর। নিরাপত্তা জামানত দিতে হবে ৩ কোটি টাকা। তবে এসব শর্তে রাজি নয় মোবাইল অপারেটররা।
গ্রামীণফোনের করপোরেট অ্যাফেয়ার্সের জ্যেষ্ঠ পরিচালক নহোসেন সাদাত বলেন, ‘জামানত কেন রাখতে হবে? মোবাইল অপারেটররা একসঙ্গে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে গ্রাহকদের কানেক্টেড রাখার চেষ্টা করছে। এই মডেলটিই অনুসরণ করা উচিত।’
টার্মিনাল এলাকায় ইন-বিল্ডিং অ্যাকটিভ ডিস্ট্রিবিউটেড অ্যান্টেনা সিস্টেম-ডাস কাভারেজ স্থাপনের জন্য স্কয়ার মিটারভিত্তিক মাসিক ভাড়ার প্রস্তাব দিতে হবে অপারেটরদের। টার্মিনাল এলাকায় ভয়েস কল কিংবা ইন্টারনেট সেবা থেকে প্রাপ্ত আয়ের নির্দিষ্ট অংশ ভাগ চেয়েছে বেবিচক।
বর্তমানে সরকারকে সাড়ে ৬ শতাংশ হারে রাজস্বের ভাগ দেয় মোবাইল অপারেটররা। আলাদাভাবে আর কোনো সরকারি সংস্থাকে ভাগ দিতে রাজি নয় তারা। বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘আমরা বিটিআরসিকে রাজস্বের একটি নির্দিষ্ট অংশ দিয়ে থাকি। এখন আরেকটি প্রতিষ্ঠানকে সেই রাজস্বের ভাগ দিতে হবে-এ রকম পরিস্থিতি আগে কখনো দেখা যায়নি।’
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘যদি সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ আগ্রহী হয়, তাহলে আমরা তৃতীয় টার্মিনালে আমাদের কানেক্টিভিটি নিশ্চিত করব। তবে তারা আগ্রহী না হলে, তখন বাইরের যেটুকু কানেক্টিভিটি রয়েছে, সেটির ওপরই নির্ভর করতে হবে।’
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দেশের বাইরে থাকায় এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বিআলো/শিলি