• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    শিক্ষকের বেতের আঘাতে চোখ হারানোর শঙ্কায় শিক্ষার্থী, পরিবারের সংবাদ সম্মেলন 

     dailybangla 
    19th Sep 2024 9:30 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    ফেনী প্রতিনিধি: শ্রেণিকক্ষে অংকে ভুল করায় শিক্ষকের বেতের আঘাতে দৃষ্টিশক্তি হারাতে বসেছে মাইদুল হাসান (১০) নামে চতুর্থ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।

    গত ১৪ মে ফেনীর দাগনভূএর পৌরসভার ওয়াজেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তাপস মজুমদারের বেতের আঘাতে ডান চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার। ঘটনার চার দিন হয়ে গেলেও অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীর পরিবার।

    অভিযুক্তের ভাই রাজেশ মজুমদার বলেন, তাপস মজুমদার বর্তমানে চিকিৎসার জন্য ভারত রয়েছেন। দুর্ঘটনা বশত শিক্ষার্থীর চোখে আঘাত লেগেছিল। পরিবারটিকে হুমকি দেওয়ার যে অভিযোগ উঠেছে তা ভিত্তিহীন। ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা একটি তদন্ত কমিটি গঠন করি। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে ঘটনার সত্যতা মেলায় ইতোমধ্যে শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করা হয়েছে।

    ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত ১৪ মে ক্লাসে অংকে ভুল করায় বাঁশের কঞ্চি দিয়ে মাইদুলকে মারধর করেন শিক্ষক তাপস মজুমদার। এসময় তিনি মাইদুলের ডান চোখে বেত দিয়ে আঘাত করেন। বেতের কঞ্চি তারা চোখের ভেতরে ঢুকে যায়। কঞ্চি বের করা হলে তার চোখ থেকে রক্তক্ষরণ হয়। মাইদুলকে প্রথমে দাগনভূঞার ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে চট্টগ্রাম পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে নেওয়া হয়। পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালে অপারেশন করে চোখের ভেতর থেকে কঞ্চি বের করা হয়। এরপর ঢাকা চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে দেড় মাস চিকিৎসার পর ভারতের চেন্নাই শংকর নেত্রালয়ে নেওয়া হয়। তবে তার চোখের দৃষ্টিশক্তি ফেরানো যায়নি। বরং এখন ডান চোখের পাশাপাশি বাম চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে তার।

    শিক্ষার্থী মাইদুল হাসান বলেন, ক্লাসে অংক ভুল হওয়ায় স্যার আমাকে স্টিলের স্কেল দিয়ে মারতে শুরু করেন। স্কেল বাঁকা হয়ে গেলে স্যার একটা বাঁশের বেত দিয়ে আমাকে মারতে থাকেন। এসময় বেতের আঘাত আমার ডান চোখে লাগে। আমি মাটিতে পড়ে যায়। পরে আরও একজন স্যার স্কুলের বেসিনে নিয়ে আমার চোখে পানি দেন। এরপর আমি আর কিছু বলতে পারবো না। এখন আমি আমার ডান চোখে দেখতে পারি না। স্কুলেও যেতে পারিনি। বিচার চাই আমি।

    সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মা হাসিনা আকতার বলেন, আমার একমাত্র ছেলের জীবন আজ বিপন্ন। সে এক চোখে দেখতে পায় না। ডান চোখে ইনফেকশন হয়ে যাওয়ায় অন্য চোখেও সমস্যা দেখা দিয়েছে। একমাত্র ছেলের চিকিৎসায় ইতোমধ্যে আমাদের সব জমানো অর্থ শেষ করে ফেলেছি। এখনো ছেলেকে সুস্থ করে তুলতে পারিনি। অভিযুক্ত শিক্ষক প্রথমে ঘটনার দায় স্বীকার করলেও এখন তার ভাই রাজেশ মজুমদারকে দিয়ে আমাদের হুমকি দেয়াচ্ছেন। আমার ছেলের সুন্দর জীবন যে এমন বিষাদময় করেছে আমি সেই শিক্ষকের বিচার চাই এবং ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। শিক্ষার্থীরা বাবা প্রবাসী রেয়াজুল হক বলেন, আমি প্রবাসী। আমার একমাত্র ছেলে বর্তমানে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমার সন্তানকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত শিক্ষক তাপস মজুমদার দায় স্বীকার করলেও তার বড় ভাই রাজেস মজুমদার ক্রমাগত হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছেন। ঘটনার বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক তাপস মজুমদারের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলেও ফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

    এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ। তদন্ত কমিটির সদস্য ফেনী সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাজমা বেগম বলেন, জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনায় ফেনী সদর, ছাগলনাইয়া ও ফুলগাজী উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসময় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী-শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলে আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।

    দাগনভূঞা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিবেদিতা চাকমা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা সরেজমিন তদন্ত করেছি। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করা হয়েছে।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930