শুধু কর্মসূচি নয়, একটি জাতীয় অগ্রযাত্রা: দুর্যোগ উপদেষ্টা
নিজস্ব প্রতিবেদক: সকলের জন্য আগাম সতর্কবার্তা (Early Warnings for All)” কর্মসূচিকে শুধুমাত্র একটি প্রকল্প নয়, বরং একটি জাতীয় অগ্রযাত্রা হিসেবে উল্লেখ করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। তিনি বলেন, “আমাদের লক্ষ্য প্রতিটি নাগরিককে নিরাপদ রাখা, এটাই আমাদের প্রতিশ্রুতি।”
আজ রাজধানীর বিএম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে দুই দিনব্যাপী ‘Early Warnings for All’ জাতীয় ভ্যালিডেশন ও শেয়ারিং কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুর্যোগ উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের মতো দুর্যোগপ্রবণ দেশে আগাম সতর্কবার্তা নিছক তথ্য নয়, এটি জীবন রক্ষার হাতিয়ার। ১৯৭০ সালের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়ে লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু হলেও বর্তমানের কার্যকর সতর্কবার্তার মাধ্যমে সেই সংখ্যা এক অঙ্কে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। আমাদের ‘Cyclone Preparedness Programme’ বিশ্বে একটি রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃত।”
তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন, নগরায়ণ এবং নানাবিধ মানবসৃষ্ট ঝুঁকির কারণে এখন শুধু ঘূর্ণিঝড় বা বন্যা নয়, বরং ভূমিধস, বজ্রপাত, খরা, তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহসহ সব ধরনের দুর্যোগকে বিবেচনায় নিয়ে আগাম সতর্কবার্তা ব্যবস্থাকে আধুনিক ও শক্তিশালী করতে হচ্ছে।”
সরকার এই খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা নিচ্ছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, “আমরা জাতীয় পর্যায়ে প্রয়োজনীয় প্রকল্প প্রস্তাব দিয়েছি। তবে এটি সরকারের একক দায়িত্ব নয়; এর সফল বাস্তবায়নে প্রয়োজন আন্তর্জাতিক সহায়তা, দীর্ঘমেয়াদি প্রতিশ্রুতি, রিস্ক পুলিং ও ইনোভেটিভ ফাইন্যান্সিং মডেল।”
তথ্য প্রযুক্তি ও বার্তা ব্যবস্থার প্রাসঙ্গিকতা তুলে ধরে তিনি বলেন, “প্রযুক্তি থাকলেও যদি তা মানুষের কাছে না পৌঁছায়, তাহলে তার কার্যকারিতা নেই। তাই আমরা কমিউনিটির অংশগ্রহণ, স্বচ্ছ তথ্য প্রবাহ এবং সহজ, স্থানীয় ভাষায় বার্তা বিতরণে গুরুত্ব দিচ্ছি।”
ফারুক ই আজম আরও বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা আন্তর্জাতিক পরিসরে জলবায়ু অভিযোজন ও দুর্যোগ সহনশীলতা নিয়ে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ ‘Early Warnings for All’ বৈশ্বিক উদ্যোগে সক্রিয়ভাবে সম্পৃক্ত হয়েছে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) মো. আজিজুল ইসলাম, জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি গুইন লুইস, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির কান্ট্রি ডিরেক্টর পেদ্রো মোটোস, সুইডিশ দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত মারিয়া স্ট্রিডসম্যান এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা।
বিআলো/সবুজ