সরকারি কর্মকর্তাদের মামলার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছেন আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সুবিধাভোগী ঠিকাদার নাজমুল
নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সময় সাবেক সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিনের ভাগ্নে পরিচয়ে গণপূর্তে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন ঠিকাদার কে এম নাজমুল ইসলাম। অনেক নির্বাহী প্রকৌশলীকে তিনি মামার (সচিব) ভয় দেখিয়ে কাজ হাসিল করেছেন। কিন্তু ৫ আগস্টের পর থেকে তিনি তার পরিচয় পাল্টে ফেলেন। তিনি নিজেকে বিএনপির নেতা পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অফিসারদের মামলার ভয় দেখিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন। অনেক বড় একটি প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। তার নেতৃত্বে দেশের বিভিন্ন স্থানে সচেতন নাগরিক সেজে মামলা শুরু করা হয়। যেখানে অনেক নিরীহ মানুষকে আসামি করা হয় এবং পরবর্তীতে তাদেরকে ফোন দিয়ে টাকা দাবি করা হয় মামলা থেকে নাম প্রত্যাহারের জন্য। কে এম নাজমুল ইসলাম সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায় তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে গোপালগঞ্জের বাসিন্দা দাবি করতেন। সম্প্রতি কে এম শাহরিয়ার শুভ বাদী হয়ে বিজ্ঞ চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে একটি মামলা করেন।
মামলা নং সি আর ৮৭৪/২০২৪ (পল্টন)। যেখানে ফরিদপুরের অসংখ্য নিরীহ মানুষসহ গণপূর্ত অধিদপ্তরের শীর্ষ প্রায় ২০ কর্মকর্তার নাম দেওয়া হয়েছে। বাদী কে এম শাহরিয়ার শুভর আপন বড় ভাই হলেন কে এম নাজমুল ইসলাম। উভয়ের পিতা-কাজী আব্দুল হান্নান, মাতা-জাহানারা বেগম। শাহরিয়ার শুভর এনআইডি নং-৯৫৬০৫৩৬১৮৮ এবং নাজমুল ইসলামের এনআইডি নং-২৯২৪৭০৪১৬৯২৬৯। নাজমুল ইসলাম যে মোবাইলটি ব্যবহার করেন তা তসলিমা জাহান মিম নামে এক মহিলার নামে নেওয়া। যার বাসা মাদারীপুর শিবচর। তবে এই মহিলার সঙ্গে মামলাবাজ প্রতারক নাজমুলের কি সম্পর্ক তা এখনো জানা যায়নি। শাহরিয়ার শুভ, নাজমুল ইসলাম এবং তসলিমা জাহান মিমকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে পুরো প্রতারক চক্রটিকে ধরা যাবে বলে অনুসন্ধানী টিম মনে করে। ২৯ অক্টোবর সিএমএস আদালতে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত আরেকজন ঠিকাদার ১৯৬ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন, যেখানে ৫৩ জন সাবেক সচিবকে আসামি করা হয়েছে।
গত ১২ অক্টোবর মোহাম্মদপুর থানায় আরেকটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে ৭৬ জন কৃষি কর্মকর্তাকে আসামি করা হয়েছে। যেহেতু সকল মামলার ধরন একই রকম। তাই ধারণা করা হচ্ছে, প্রতারণা করার উদ্দেশ্যেই এই মামলাগুলো করা হয়েছে এবং একই প্রতারক চক্র এ কাজগুলো করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেছেন, যারা ভুয়া মামলা করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সাধারণ জনগণ দ্রুত এ প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে চায়। নাহলে এ প্রতারক চক্রের ফাঁদে অসংখ্য নিরীহ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। দেশজুড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যে মহৎ উদ্দেশ্যকে সামনে নিয়ে সংঘটিত হয়েছিল, শত শত শহীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছিল। সেই উদ্দেশ্যকে অনেকটা ম্লান করে দিচ্ছে নাজমুলদের মতো প্রতারক চক্র। এ ব্যাপারে ঠিকাদার কে এম নাজমুল ইসলামের মোবাইলে ফোনে কল করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।