সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে ক্লাস বর্জন, নিরাপত্তা দাবিতে ইন্টার্নদের কর্মবিরতি
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে কর্মবিরতি ও ক্লাস বর্জন করেছেন। গত বুধবার হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী সোহাগকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনার পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
রোববার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতিতে যান এবং মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও ক্লাসে অনুপস্থিত থেকে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ উদ্দিন নাদিম বলেন, আমাদের ক্যাম্পাস এমন একটা জায়গা যেখানে বহিরাগত আর শিক্ষার্থীদের আলাদা করা যায় না। প্রচুর বাইরের লোকজন এখানে ঘোরাফেরা করে। নিরাপত্তা নিয়ে আমরা অধ্যক্ষের কাছে গেলেও কোনো আশ্বাস পাইনি।

অপরদিকে, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্টার্ন ডক্টরস সোসাইটি (আইডিএস) এর সভাপতি ডা. ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আট দফা দাবি জানিয়েছি। হাসপাতালের পরিচালক কিছু দাবি পূরণ করেছেন, যেমন হাসপাতালের সামনের অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ। বাকি দাবি পূরণে আজ আমরা কর্মবিরতি পালন করছি। সন্ধ্যায় বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি জানানো হবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আট দফা দাবির মধ্যে রয়েছে,হাসপাতাল চত্বরে ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র আনসার মোতায়েন, প্রতিটি ফটকে আনসার সদস্য মোতায়েন, নারী আনসার সংখ্যা বৃদ্ধি, লেডি ডক্টরস হোস্টেলে আনসার নিযুক্তি, মিটফোর্ড হাসপাতালে জরুরি ভিত্তিতে পুলিশ বক্স স্থাপন, অনিয়ম দূরীকরণে প্রশাসনিক ব্যবস্থা, বর্তমান আনসার সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধি, আনসারদের সপ্তাহে ৭ দিন, দিনে ২৪ ঘণ্টা ডিউটি বাধ্যতামূলক করা।
কলেজ অধ্যক্ষ ডা. মো. মাজহারুল শাহীন বলেন, শিক্ষার্থীরা আজ ক্লাসে আসেনি, তারা ক্লাস বর্জন করেছে। তবে শাটডাউন ঘোষণা করেছে কিনা-এ বিষয়ে আমাকে কেউ কিছু বলেনি।
উল্লেখ্য, গত ৯ জুলাই বিকেলে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে ব্যবসায়ী লালচাঁদ ওরফে সোহাগকে নির্মমভাবে পিটিয়ে ও মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়। ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশব্যাপী তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষাপটে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তা চেয়ে কর্মসূচি শুরু করেন।
বর্তমানে হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ২৩০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক কর্মবিরতিতে রয়েছেন। ফলে হাসপাতালের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে।
বিআলো/এফএইচএস