সাংবাদিকের কাজ সমাজের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা: নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. জাহিদুল ইসলাম মিঞা
মনিরুল ইসলাম মনির: “সত্যকে সত্য হিসেবে তুলে ধরাই সাংবাদিকতার প্রথম শর্ত। ক্ষমতার সামনে মাথা নত নয়—মানুষের কাছে দায়বদ্ধতা।”
এই বার্তাই দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা। তার ভাষায়, “সাংবাদিকতা কোনো চাকরি নয়, এটা দায়িত্ব। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম।”
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সিটি প্রেস ক্লাবকে ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে ল্যাপটপ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান। জেলা পরিষদের অর্থায়নে সিটি প্রেস ক্লাবকে দুটি ডেস্কটপ কম্পিউটার এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ওই ছাত্রীকে ল্যাপটপ প্রদান করা হয়।
ডিসি জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, “সাংবাদিকতার জন্য দরকার সত্যবাদিতা, ন্যায্যতা, সততা, স্বাধীনতা এবং জবাবদিহিতা। একজন প্রকৃত সাংবাদিক কোনো প্রলোভন বা ভয়ে নত হন না। তিনি মানুষের কথা বলেন, অসহায়ের পাশে দাঁড়ান, সমাজের অসঙ্গতি ও অবিচারের বিরুদ্ধেই তার কলম।”
তিনি আরও বলেন, “গণমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ বলা হয়। একজন সাংবাদিকের কাজ হলো সেই দর্পণে সমাজের প্রকৃত প্রতিচিত্র ফুটিয়ে তোলা। অন্যায়, অনিয়ম, নিগ্রহ ও শোষণের বিরুদ্ধে তাকে সবসময় সোচ্চার থাকতে হবে। চোখ রাঙানি ভয় পেলে হবে না—সত্যের পথে দৃঢ় থাকতে হবে।”
ডিসি জানান, পেশার প্রতি ভালোবাসা ও জনসেবার মনোভাব থেকেই একজন ভালো সাংবাদিক জন্ম নেয়। “কিছু পাওয়ার জন্য নয়, বরং মানুষের জন্য কাজ করার মনোভাব থাকলেই একজন সাংবাদিক প্রকৃত সাংবাদিক হয়ে উঠতে পারেন।”
বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ব্যক্তিদের প্রতি সমাজের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, “তারা সমাজের বোঝা নয়। সুযোগ ও সহযোগিতা পেলে তারাই সমাজের শক্তিতে পরিণত হতে পারে।”
দেশকে উন্নয়নের কাঙ্খিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে যুবসমাজকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে— জেলা প্রশাসক
নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেছেন, দেশকে উন্নয়নের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে যুবসমাজকে অগ্রসৈনিক হিসেবে ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, “দেশ গড়ার হাতিয়ার যুবদের শানিত করার লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন যুব সহায়ক উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। উদ্বুদ্ধকরণ, প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ, আত্মকর্মসংস্থান, উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও যুব সংগঠন নিবন্ধন—এসব উদ্যোগ যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে যেতে সহায়তা করছে।”
জেলা প্রশাসক আরও বলেন, বাংলাদেশ ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট (এসডিজি) অর্জন এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত দেশে রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করছে। এ লক্ষ্য অর্জনে যুবসমাজই প্রধান চালিকা শক্তি। এজন্য সরকার একদিকে সরকারি-বেসরকারি খাতে যুবদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে, অন্যদিকে আত্মকর্মসংস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে।
অনুষ্ঠানে জেলা যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক হাসিনা মমতাজ সভাপতিত্ব করেন এবং সহকারী পরিচালক ই আ.ম. মাসুদ মজুমদার সঞ্চালনা করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মাশফাকুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাঈমা ইয়াসমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।
বিআলো/তুরাগ



