সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনীর উদ্যোগে গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল
ফেনী প্রতিনিধি: চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ছয় সাংবাদিকসহ সকল শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ফেনী প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী’র সভাপতি সিদ্দিক আল মামুনের সভাপতিত্বে আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক গোলাম মো. বাতেন।
দৈনিক আমার কাগজ পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি আলাউদ্দিনের সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) সাইফুল ইসলাম, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, এয়াকুব নবী, জেলা হেফাজত ইসলামের সেক্রেটারী মাওলানা ওমর ফারুক, এবি পার্টি চট্টগ্রাম বিভাগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক প্রকৌশলী শাহ আলম বাদল, জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা গাজী এনামুল হক ভূঁইয়া, জেলা খেলাফত মজলিসের সভাপতি মোজাফফর আহমদ জাফরী ও জয়েন্ট সেক্রেটারী আজিজ উল্লাহ আহমদী’সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ছাত্র প্রতিনিধি, সামাজিক সংগঠন ও জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এয়াকুব নবী বলেন, মহিপাল হত্যাকান্ডে ফেনীর প্রশাসনও সম্পৃক্ত ছিল। প্রশাসনের সামনেই এই নারকীয় হত্যাকান্ড চালানো হয়। সেদিন প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। তৎকালীন জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ওসিসহ সংশ্লিষ্টদের আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। ফেনীতে এখনো অপ-সাংবাদিকতা হচ্ছে। আজকে শহীদ শিহাবের কবর জিয়ারতের ঘটনায় ফেনীর একটি পত্রিকায় বিএনপিকে দোষারোপ করে নিউজ করেছে। সত্য ঘটনাকে আড়াল করার জন্য এইসব হলুদ সাংবাদিকদের বয়কট করতে হবে। যারা প্রকৃত সাংবাদিক তাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে।
মহিপাল হত্যাকান্ড কোনো রাজনৈতিক হত্যাকান্ড নয় মন্তব্য করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক। তিনি বলেন, আসলে আমরা জাতিগতভাবে দুর্ভাগা। স্বাধীনতার পর থেকে সিপাহী ও জনতার বিপ্লব, সবশেষ চব্বিশের বিপ্লবের মাধ্যমে এদেশ থেকে স্বৈরাচারকে উৎখাত করা হয়েছে। বিপ্লবের নামে কিছু নতুন রাজনৈতিক দল ব্যাপক চাঁদাবাজি করছে।
সভাপতির বক্তব্যে সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী’র সভাপতি সিদ্দিক আল মামুন বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে সাংবাদিকদের কলম বন্ধ করার জন্য বিভিন্ন কালো আইন করা হয়েছিলো। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে সারাদেশে আমাদের ছয়জন সাংবাদিকসহ ২ হাজার ছাত্র-জনতা শহীদ হয়েছেন। মহিপালে নারকীয় হত্যাকান্ডের ঠিক আগের দিন ৩ আগস্ট আমরা সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী’র ব্যানারে মুস্টিমেয় কিছু সাংবাদিক শহীদ মিনারের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হই। কিন্তু সেদিন প্রশাসনের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে পরবর্তীতে ফেনী প্রেসক্লাবের সামনে এসে আমাদেরকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে হয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মতাদর্শের সাংবাদিকদের সমন্বয়ে আমরা সাংবাদিক ইউনিয়ন ফেনী বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক ও পৌর প্রশাসক গোলাম মো. বাতেন বলেন, ৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতা বৈষম্যবিরোধী বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য অকাতরে জীবন দিয়েছেন। আজকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা সর্বাগ্রে প্রয়োজন। ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে আমাদেরকে আরো বেশি সজাগ থাকতে হবে। গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য পাহারা দিয়ে আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হবে।
আলোচনা সভা শেষে চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ছয় সাংবাদিকসহ সকল শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও জুলাই যোদ্ধাদের সার্বিক কল্যাণার্থে দোয়া মোনাজাত করা হয়।
বিআলো/ইমরান