সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ মিল্ক প্রডিউসারস কো-অপারেটিভ ইউনিয়ন লিমিটেড (মিল্ক ভিটা)-এর সাবেক চেযারম্যান মো. আব্দুর রাজ্জাকের চেয়ারম্যান মেয়াদে (২৪-১১-২০০৩ থেকে ২৩-১১-২০০৬) একাধিক উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হলেও এর কোনোটিই কার্যকর অবস্থায় নেই। ভেঙে পড়া এই প্রকল্পসমূহের ব্যর্থতা ও সম্ভাব্য অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে পুনরায় আলোচনায় উঠে এসেছেন তিনি। মো. আব্দুর রাজ্জাক চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে মিল্ক ভিটার অধীন ছয়টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যার মোট ব্যয় ছিল প্রায় ১১০ কোটি টাকার বেশি।
প্রকল্পগুলো হলো: ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (বিডিপি), কনডেন্সড মিল্ক প্লান্ট (বিডিপি), ক্যান মেকিং প্লান্ট (বাঘাবাড়ীঘাট), ইউএইচটি মিল্ক প্লান্ট (বিডিপি), রেল ওয়াটার বোটলিং প্লান্ট (বিডিপি), ইউএইচটি প্লান্ট (মিরপুর, ঢাকা)। বর্তমানে সবগুলো প্রকল্প বন্ধ অবস্থায় আছে।
সূত্র জানায়, এইসব প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে পুরাতন ও কার্যক্ষমতাহীন মেশিনারিজ উচ্চ মূল্যে ক্রয় করা হয়। পরিণতিতে, মিল্ক ভিটার কোটি কোটি টাকার সরকারি বিনিয়োগ নষ্ট হয় এবং কোনো প্রকল্পই উৎপাদন কার্যক্রমে যেতে পারেনি। ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে এ বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) মামলা হয়, যা এখনো নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে রাজ্জাক রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তদন্ত প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলেছেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য ক্ষমতাসীন দলের পদ-পদবী ভাগিয়ে নেওয়ার অভিযোগও উঠেছে। এমনকি, গত ৫ আগস্ট-২০২৫-এর ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরাসরি নেতৃত্ব দিয়ে সহিংসতার মাধ্যমে ছাত্র হত্যা সংঘটনের অভিযোগে তার নামে মামলা চলমান রয়েছে।
জনমনে উদ্বেগ ও তদন্তের দাবি: এই ব্যর্থ প্রকল্পগুলোর পিছনে জাতীয় অর্থনীতির অপচয় এবং মিল্ক ভিটার প্রতিষ্ঠানিক দুর্বলতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত একজন সাবেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, যেন দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ও প্রকৃত দোষীদের বিচারের আওতায় আনা হয়।
মিল্ক ভিটার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা অপচয়ের যে অভিযোগ উঠেছে তা শুধু দুঃখজনক নয়, বরং গোটা সমবায়ী খাতের ওপরই প্রশ্ন তোলে। এখন সময় এসেছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার এবং ভবিষ্যতে এহেন দুর্নীতিগ্রস্ত, অপরাধী কেই যেন মিল্ক ভিটার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় প্রতিষ্ঠানের গুরত্বপূর্ণ পদে আসীন না হতে পারে সে জন্য তাদেরকে সমবায় আইনের সংশোধনপূর্বক চিরদিনের জন্য নিষিদ্ধ করা আবশ্যক।
বিআলো/তুরাগ