“সুস্থ বার্ধক্যে ফিজিওথেরাপিও শারীরিক কার্যকলাপের ভূমিকা: ডা. এম ইয়াছিন আলী
বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবসের আদ্যিপত্য নিয়ে প্রশ্ন – উত্তর
বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস ২০২৫: সুস্থ বার্ধক্যে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপের গুরুত্ব
ডা. এম ইয়াছিন আলীর সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতা
২০২৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর পালিত হলো বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস। এবারের প্রতিপাদ্য: “সুস্থ বার্ধক্যে ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপের ভূমিকা: দুর্বলতা ও পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ।” এই দিনটির লক্ষ্য সাধারণ জনগণকে ফিজিওথেরাপির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করা এবং স্বাস্থ্যসেবায় ফিজিওথেরাপিস্টদের অবদান তুলে ধরা।
ডা. এম ইয়াছিন আলী, ঢাকা সিটি ফিজিওথেরাপি হাসপাতালের চেয়ারম্যান ও চীফ কনসালটেন্ট, ডক্টরস টিভির সিনিয়র প্রধান প্রতিবেদক ও সিইও জি. ই. বুলবুলের সঙ্গে একান্ত আলাপে বললেন—
প্রশ্ন: সুস্থ বার্ধক্যের চ্যালেঞ্জ কী?
ডা. ইয়াছিন আলী:
বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে। পেশি দুর্বল হয়, হাড়ের ঘনত্ব কমে যায়, ভারসাম্য বজায় রাখা কঠিন হয়, ফলে পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। এছাড়া আর্থ্রাইটিস, অস্টিওপরোসিস ও অন্যান্য বার্ধক্যজনিত সমস্যাও শারীরিক সীমাবদ্ধতা তৈরি করে। এই কারণে প্রবীণরা শারীরিক, মানসিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন।
প্রশ্ন: এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় কী?
ডা. ইয়াছিন আলী:
এবারের প্রতিপাদ্য পরিবারের বয়োবৃদ্ধদের গুরুত্বকে সামনে রেখে নির্ধারণ করা হয়েছে। তারা পরিবারের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। তাই তাদের সুস্থ ও নিরাপদ রাখা আমাদের সকলের দায়িত্ব।
প্রশ্ন: ফিজিওথেরাপির ভূমিকা কী?
ডা. এম ইয়াছিন আলী:
ফিজিওথেরাপি শুধুমাত্র আঘাত বা অসুস্থতার পরে পুনর্বাসন নয়; এটি জীবনভর সুস্থ থাকার অন্যতম কার্যকর উপায়। বিশেষ করে প্রবীণদের জন্য এর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হলো—
শক্তি ও ভারসাম্য বৃদ্ধি: বিশেষ অনুশীলনের মাধ্যমে পেশি ও হাড় মজবুত হয়, হাঁটার আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
পড়ে যাওয়া প্রতিরোধ: সঠিক ব্যায়াম প্রোগ্রামের মাধ্যমে ঝুঁকি কমানো যায়।
হাড় ও জয়েন্টের সুস্থতা: নিয়মিত ব্যায়াম অস্টিওপরোসিস ও আর্থ্রাইটিসের অগ্রগতি ধীর করে।
দৈনন্দিন কাজের স্বনির্ভরতা: বাজার করা, সিঁড়ি ওঠা বা হাঁটাচলা সহজ হয়।
মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতি: শারীরিক কার্যকলাপ মানসিক চাপ কমায় এবং সামাজিকভাবে সক্রিয় থাকতে সাহায্য করে।
প্রশ্ন: প্রতিরোধই কি উত্তম?
ডা. এম ইয়াছিন আলী:
বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবস আমাদের মনে করিয়ে দেয়, চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই শ্রেয়। বয়স বাড়লেও নিয়মিত শারীরিক কার্যকলাপ, সুষম খাদ্য, পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা গ্রহণ করলে সক্রিয় ও সুস্থ থাকা সম্ভব। ফিজিওথেরাপিস্টের তত্ত্বাবধানে ব্যক্তিগত অনুশীলন পরিকল্পনা গ্রহণ অপরিহার্য।
উপসংহার, ২০২৫ সালের বিশ্ব ফিজিওথেরাপি দিবসের প্রতিপাদ্য সময়োপযোগী। ফিজিওথেরাপি ও শারীরিক কার্যকলাপ প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নত করে এবং তাদের সমাজ ও পরিবারে সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। তাই সুস্থ ও নিরাপদ বার্ধক্যের জন্য ফিজিওথেরাপিকে স্বাস্থ্যসেবার মূলধারায় আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া আবশ্যক।
বিআলো/তুরাগ