স্পিনিং শিল্প রক্ষার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন
ভুল নীতি টেক্সটাইল ও গার্মেন্টস শিল্পকে বিপর্যয়ে ফেলে, শ্রমিকদের মানবেতর জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের টেক্সটাইল শিল্পে ভুল নীতি প্রয়োগের কারণে ক্রমেই সংকট বাড়ছে। ইতোমধ্যেই ৩৫টি স্পিনিং কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে, যার ফলে লক্ষাধিক শ্রমিক ও কর্মকর্তা-কর্মচারী বেকার হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। বাকি কারখানাগুলোও বর্তমানে ৪০ শতাংশ উৎপাদন ক্ষমতায় চলছে। তাই এই শিল্পকে বাঁচাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি উঠেছে।
আজ (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে স্পিনিং শিল্প রক্ষার দাবিতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা ও কর্মকর্তারা এসব কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সালমা গ্রুপের প্রধান পরিচালক কর্মকর্তা ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী।
ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী বলেন, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার ও জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে। এ কারণে প্রায় ৪০ শতাংশ শিল্প কারখানার উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে এবং বাকি কারখানাগুলোও ক্রমান্বয়ে বন্ধ হওয়ার পথে। তিনি স্পিনিং শিল্প বাঁচাতে ৭ দফা দাবি উত্থাপন করেন, যার মধ্যে রয়েছে:
দেশি সুতা ব্যবহারে ১০ শতাংশ নগদ প্রণোদনা
গ্যাস ও বিদ্যুতের বিলের ৩০ শতাংশ ছাড়
সুতা আমদানি বন্ধে এন্টি-ডাম্পিং ট্যাক্স বা সেইফগার্ড ডিউটি প্রয়োগ
ইডিএফ ফান্ড পুনর্বহাল
গার্মেন্টস রপ্তানির উৎপাদন খরচের ৭০ শতাংশ কাঁচামাল স্থানীয় উৎস থেকে কেনার বাধ্যবাধকতা
রিসাইকেল পণ্য উৎপাদনে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ প্রণোদনা
সংবাদ সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহীনুল হক বলেন, এক সময় দেশে ২৫ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হতো, যা কমিয়ে বর্তমান সরকার মাত্র দেড় শতাংশে নামিয়েছে। ফলে ভারতের কম দামে সুতা দেশে প্রবেশ করছে এবং দেশের মিলগুলোকে দীর্ঘ সময় প্রণোদনার টাকা পাওয়ার অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
আইইবির গার্মেন্টস বিভাগের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম বলেন, যদি স্পিনিং মিলগুলো মুখ থুবড়ে পড়ে, তবে শ্রমিকদের পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। ইনস্টিটিউশন অব টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যান্ড টেকনোলজিস্টস (আইটিইটি)-এর সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার এনায়েত হোসেন বলেন, শিল্পকে বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক অবক্ষয় উভয়েই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
বাদশা মিয়া টেক্সটাইলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক খোরশেদ বলেন, স্থানীয় গার্মেন্টসগুলো দেশীয় সুতা কিনতে চায়, কিন্তু অনেক সময় বায়ারদের সুপারিশ অনুযায়ী বিদেশ থেকে সুতা ও কাপড় কিনতে হয়। তাই নীতি সহায়তা জরুরি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন যমুনা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার এবিএম সিরাজুল ইসলাম, আহমেদ গ্রুপের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার শান্তিময় দত্ত, আরমাডা গ্রুপের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম আজাদ এবং গ্রিনটেক্স স্পিনিংয়ের নির্বাহী পরিচালক রুহুল আমিন প্রমুখ।
বিআলো/তুরাগ



