হঠাৎ নির্বাচন কমিশনের ইউ-টার্ণে বিষ্ময় রফিকুল আমিনের
মনোনয়ন দাখিলের জন্য সময় বৃদ্ধির দাবি আমজনগন পার্টির
বিশেষ প্রতিনিধি: আমজনগন পার্টির নিবন্ধন সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের হঠাৎ ইউ-টার্ণে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন দলটির আহবায়ক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আমিন। তিনি মনোনয়ন দাখিলের জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে সময় বৃদ্ধির দাবি জানান। রফিকুল আমিন বলেন, “দুই–একটি রাজনৈতিক দলের অনৈতিক চাপ নিতে অক্ষম যারা, তারা কিভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সম্পন্ন করবে?”
শনিবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থ ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব মন্তব্য করেন। দলের কেন্দ্রীয় নেতারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
রফিকুল আমিন বলেন, তিনি রাষ্ট্রের স্বাধীন ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনের অন্যায় আচরণের বিষয়ে জানাতে এবং প্রতিকার চাইতে এসেছেন। তিনি স্মরণ করান, “পতিত ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার ও আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে মিথ্যা মামলায় ১২ বছরের বেশি সময় আমি কারাগারে ছিলাম। সেখানে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছি, আমার সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।”
কারাগারে থাকাকালীন তিনি একটি রাজনৈতিক দল গঠনের পরিকল্পনা করেন, যেখানে প্রতিহিংসার রাজনীতি থাকবে না এবং সাধারণ মানুষ বিকল্প খুঁজে নিতে পারবে। আইনের শাসন, ন্যায় বিচার এবং নতুন ধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠার সংকল্পে ১৭ এপ্রিল ২০২৫ সালে তিনি বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি নামে একটি দল প্রতিষ্ঠা করেন। রফিকুল আমিন আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
দলের বিভিন্ন শ্রেণী, পেশা ও বয়সী মানুষের স্বতস্ফুর্ত অংশগ্রহণ অল্প সময়ে সারাদেশে কার্যক্রমকে মজবুত করেছে। জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য ২২ জুন নির্বাচনী কমিশনে নিবন্ধনের আবেদন করা হয়। দলটি নিবন্ধন বিধিমালা-২০০৮ এর সব শর্ত পূরণ করে আবেদন জমা দেয়। দলের তথ্য মাঠ পর্যায়ে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা সরেজমিনে তদন্ত করে, সবকিছু সঠিক পাওয়া সত্ত্বেও কমিশন অধিকতর পর্যালোচনা করার কথা জানায়।
রফিকুল আমিন বলেন, “৯ অক্টোবর সারাদেশে দলের তথ্য পুনঃতদন্তের সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। তবে কেন এই পুনঃতদন্ত করা হলো তা লিখিতভাবে জানায়নি। এই পর্যায়ে কর্মকর্তারা অপ্রাসঙ্গিক অতিরিক্ত তথ্য চেয়েছেন, যেমন সদস্যদের যোগদানের প্রত্যয়ন, অফিস ভবনের মালিকদের এনআইডি, জমির দলিল-পর্চা। এতে নেতাকর্মীরা চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন। পুনঃতদন্তেও সব তথ্য সঠিক পাওয়া সত্ত্বেও দলকে চূড়ান্ত নিবন্ধন দিতে ৪ নভেম্বর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।”
১৮ নভেম্বর নির্বাচন কমিশন গণবিজ্ঞপ্তি জারি হওয়া তিনটি নতুন দলের মধ্যে দুইটি দলকে চূড়ান্তভাবে নিবন্ধন দেয়।
রফিকুল আমিন অভিযোগ করেন, বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টির বিষয়ে কিছু আপত্তি থাকার কারণে শুনানী করা হবে বলে জানিয়েও তারিখ জানানো হয়নি। কিছুদিন আগে এক ব্যক্তির কল রেকর্ড ফাঁস হয়, যেখানে তিনি আমজনগণ পার্টির বিরুদ্ধে অভিযোগ করতে নির্বাচন কমিশনের কাছে যোগাযোগ করার কথা বলেছিলেন। রফিকুল আমিন বলেন, “অর্থাৎ অভিযোগগুলো বেনামি এবং পরিকল্পিত।”
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালা-২০০৮-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, পরিচিতি জারির পর গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে যাচাইয়ের নজির নেই। তবে নির্বাচন কমিশন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রম জাতীয় নির্বাচনের প্রাক্কালে পেন্ডিং রেখেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ২৪ ডিসেম্বর কমিশনে প্রতিবেদন দিয়েছে, দুই দিন পার হলেও কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, “কমিশন প্রমাণ দিচ্ছে তারা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চায় না এবং অতীতের জালিম ভূমিকা থেকে সরে আসতে পারছে না।”
বিআলো/তুরাগ



