হাইকোর্টের আদেশ অমান্য করে ৮২ জন পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদায়ন: মাঠ পর্যায়ে তীব্র অসন্তোষ
নিজস্ব প্রতিবেদক: হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ উপেক্ষা করে প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই)-এর ৮২ জন জুনিয়র ইন্সট্রাক্টরকে সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট পদে পদায়ন করায় সারাদেশের ইউআরসি (উপজেলা রিসোর্স সেন্টার) পর্যায়ে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
১০ থেকে ১২ বছরের সিনিয়র ইন্সট্রাক্টরদের উপেক্ষা করে জুনিয়রদের এ পদায়নের বিরুদ্ধে আগে থেকেই উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করা হয়েছিল। এরই প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ওই পদায়ন স্থগিত করে আদেশ দেন। কিন্তু আদালতের আদেশ অমান্য করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. সাখাওয়াত হোসেন সরকার গত ৩১ জুলাই ৮২ জন পিটিআই ইন্সট্রাক্টরকে পদোন্নতি দিয়ে আদেশ জারি করেন।
যদিও হাইকোর্ট ৩ আগস্ট আবারও উক্ত পদায়নের বিরুদ্ধে নতুন স্থগিতাদেশ দেন, তবুও পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা ৪ আগস্ট কাজে যোগদান করেন। আদালতের আদেশ দুই দফা অমান্য করে পদায়ন কার্যকর করায় ইউআরসি ইনস্ট্রাক্টরদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এতে মাঠ পর্যায়ে প্রশাসনিক কাঠামোতে বিশৃঙ্খলা ও চেইন অব কমান্ড ভেঙে পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে।
জানা গেছে, ইউআরসি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৮ সালে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে। এটি জেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রিত হয় পিটিআইয়ের মাধ্যমে। বর্তমানে ইউআরসি-কে নতুনভাবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (UPEtC) নামকরণ করা হয়েছে।
রিটকারী কর্মকর্তা জাকির হোসেন ও রুবিউল ইসলাম দাবি করেন, জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে জুনিয়রদের পদায়ন চরম বৈষম্যমূলক। আদালতের আদেশ উপেক্ষা করে এমন পদক্ষেপ হাইকোর্টকে অবমাননার শামিল। ব্যারিস্টার জ্যোতিময় বড়ুয়া নিশ্চিত করেছেন, হাইকোর্টের দুটি পৃথক বেঞ্চই পদোন্নতি আদেশ স্থগিত করেছেন।
জাকির হোসেন বলেন, “এই স্বেচ্ছাচারিতা শুধু চাকরি বিধির লঙ্ঘন নয়, বরং গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচারের চেতনাকেও ভূলুণ্ঠিত করেছে। একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের স্বপ্নে যেভাবে আমরা ফ্যাসিবাদ হটিয়েছি, সেই দেশে এ রকম বৈষম্যমূলক পদায়ন দুর্ভাগ্যজনক।”
এই বিষয়ে জানতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের দপ্তর সূত্রে জানানো হয়, তারা সরকারি কাজে অফিসের বাইরে রয়েছেন।
বিআলো/তুরাগ