১১ বছর পর সীমান্ত পেরিয়ে ফিরে এলেন গাইবান্ধার শান্ত্বনা
বেনাপোল প্রতিনিধি: নিখোঁজের দীর্ঘ ১১ বছর পর ভারত থেকে দেশে ফিরলেন চার সন্তানের জননী, মানসিক অসুস্থ বাংলাদেশি নারী শান্ত্বনা বেগম (৪৫)। মঙ্গলবার বিকেলে ভারতীয় পেট্রাপোল পুলিশ তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
পুলিশ ও পরিবারের সূত্রে জানা যায়, গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর রাজিবপুর গ্রামের আবুল সালামের মেয়ে শান্ত্বনা মানসিক অসুস্থ ছিলেন। স্বামী স্থানীয় একটি আদালতে মহুরীর কাজ করতেন। দাম্পত্য জীবনে চার পুত্র সন্তানের জননী শান্ত্বনা প্রায়ই বাড়ি থেকে নিখোঁজ হতেন। শেষবার ১১ বছর আগে ভারসাম্য হারিয়ে ভারত চলে যান এবং সেখানকার পুলিশের হাতে আটক হন।
পরে তাকে মুম্বাইয়ের একটি কারাগারে রাখা হয়। সাজার মেয়াদ শেষে মানবাধিকার সংস্থা ‘সংকল্প’ এর উদ্যোগে কলকাতার একটি শেল্টার হোমে আশ্রয় দেওয়া হয়।
২০২৪ সালের জুলাই মাসে সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সেলিম খান ও নুরুল হুদা ভারতের একটি মানবাধিকার সংগঠনের মাধ্যমে শান্ত্বনার অবস্থান জানতে পারেন। এরপর তারা দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও হাইকমিশনের সহযোগিতায় ১৬ মাসের প্রচেষ্টায় শান্ত্বনাকে দেশে ফেরাতে সক্ষম হন।
ভারতের কানপুরের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে মঙ্গলবার বিকেলে শান্ত্বনাকে বেনাপোল সীমান্তে হস্তান্তর করা হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন যশোরের মানবাধিকার সংগঠন ‘জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার’-এর কর্মকর্তারা।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের ওসি এস. এম. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ইমিগ্রেশনের আনুষ্ঠানিকতা শেষে শান্ত্বনাকে বেনাপোল পোর্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তীতে জাস্টিস অ্যান্ড কেয়ার এনজিওর মাধ্যমে তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে।”
দেশে ফেরত আসার পর পরিবারের সদস্যরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। মানবাধিকার কর্মী সেলিম খান ও নুরুল হুদা জানান, “দীর্ঘ ১১ বছর পর এক মা তার সন্তানদের কাছে ফিরে যেতে পেরেছেন—এর চেয়ে আনন্দের কিছু হতে পারে না।”
বিআলো/ইমরান



