১৩ বছরেও সিএনজি প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় ৭০০ মিশুক মালিক
সরকারের রাজস্ব ক্ষতির সম্ভাবনা চব্বিশ কোটি টাকা
নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১২ সালে সরকার ঘোষিত গেজেট অনুযায়ী রাজধানী ঢাকায় মিশুকের পরিবর্তে গ্যাসচালিত ফোরস্ট্রোক সিএনজি অটোরিকশা প্রতিস্থাপন কার্যক্রম শুরু হলেও আজও সাত শতাধিক মিশুক মালিক সেই প্রতিস্থাপন থেকে বঞ্চিত রয়েছেন। ফলে একদিকে যেমন মালিকরা দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে উপার্জন থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, অন্যদিকে সরকারও প্রায় ২৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার সম্ভাব্য এককালীন রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিক্সা মিশুক চালক ও শ্রমিক ইউনিয়নের (রেজি: ২৯৭৮) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন দুলাল ও ঢাকা মহানগর মিশুক মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোঃ সরোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, ২০১২ সালের ২৭ আগস্ট সরকার ২৬৯৬টি মিশুক প্রতিস্থাপনের জন্য গেজেট প্রকাশ করে। গেজেট প্রকাশের দুই দিনের মধ্যে ২২৪০টি মিশুকের কাগজপত্র বিআরটিএতে জমা পড়ে। তবে বাকি ৪৫৬টি মিশুক মালিক বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাগজ জমা দিতে পারেননি। পরে মৌখিক সিদ্ধান্তে যেকোনো সময়ে কাগজ গ্রহণযোগ্য বলেও জানানো হয়েছিল।
উল্লেখ্য, শুরুতে বিআরটিএ কর্মকর্তাদের সঙ্গে মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি বাছাই কমিটি গঠন করে প্রতিস্থাপন প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হয়। ঐ কমিটির সদস্য ছিলেন সাখাওয়াত হোসেন দুলাল (শ্রমিক প্রতিনিধি) এবং মোঃ সরোয়ার হোসেন (মালিক প্রতিনিধি)। বাছাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই হাজার মিশুক প্রতিস্থাপন সম্পন্ন হলেও প্রায় সাত শতাধিক মিশুক মালিক এখনো অপেক্ষারত।
সাখাওয়াত হোসেন দুলাল বলেন, “১৩ বছর ধরে এসব মালিক আয়-রোজগার থেকে বঞ্চিত। প্রতি বছর ফি, পারমিট ও ফিটনেস বাবদ সরকারকে রাজস্ব না দিতে পারায় প্রতিটি মিশুক মালিকের গড়ে তিন লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “২০১২ সালের ঢাকা আর ২০২৫ সালের ঢাকা এক নয়। জনসংখ্যা এখন প্রায় দ্বিগুণ এবং মহানগরীর আয়তনও বেড়েছে। অতএব, যানবাহনের চাহিদা পূরণে এই সাতশত মিশুকের পরিবর্তে সিএনজি প্রতিস্থাপন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।”
এ অবস্থায় তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “পূর্বের মতো একটি বাছাই কমিটি গঠন করে দ্রুত অবশিষ্ট ৭০০ মিশুকের প্রতিস্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হোক।”
বিআলো/তুরাগ