• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ২৩ মে বিশ্ব কচ্ছপ দিবস: প্রকৃতি সংরক্ষণে আমাদের দায়িত্ব 

     dailybangla 
    23rd May 2025 2:09 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    প্রতি বছর ২৩ মে পালিত হয় বিশ্ব কচ্ছপ দিবস (World Turtle Day)। এই দিনটির মূল উদ্দেশ্য হলো পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন এবং ধীরগতিসম্পন্ন প্রাণী কচ্ছপ ও কচ্ছপজাতীয় প্রাণীদের সংরক্ষণ এবং তাদের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন। দিবসটি প্রথম উদযাপন শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা American Tortoise Rescue (ATR), ২০০০ সালে। এই উদ্যোগের পেছনের মূল বার্তা হলো—“মানব সমাজ ও প্রকৃতির মধ্যে একটি ভারসাম্য তৈরি করা এবং পরিবেশের ক্ষয় রোধে সচেতনতা গড়ে তোলা।”

    কচ্ছপ: প্রকৃতির নিরীহ প্রহরী

    কচ্ছপ আমাদের পরিবেশের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী। পৃথিবীতে প্রায় ২৫ কোটি বছর ধরে তারা টিকে আছে। কচ্ছপের প্রজাতির সংখ্যা ৩৫০টিরও বেশি। এদের কেউ বাস করে পানিতে, কেউ মাটিতে। তারা মূলত শাকাহারী, তবে অনেক জলজ কচ্ছপ মিশ্র খাদ্য গ্রহণ করে। কচ্ছপের জীবনধারা ধীরগতির হলেও এর প্রভাব গভীর—জলজ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা, মৃত উদ্ভিদ ও প্রাণীর অবশিষ্টাংশ খেয়ে পরিবেশ পরিষ্কার রাখা, এমনকি ভূমিক্ষয় রোধেও কচ্ছপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

    হুমকির মুখে কচ্ছপের অস্তিত্ব

    দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে বিশ্বের অধিকাংশ কচ্ছপ প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ সংস্থা (IUCN) এর তথ্যমতে, কচ্ছপ হচ্ছে সবচেয়ে বিপন্ন প্রজাতিসমূহের অন্যতম। এর পেছনে দায়ী মানুষের অবিবেচক আচরণ। বন উজাড়, জলাভূমি ভরাট, প্লাস্টিক দূষণ, নদী ও সমুদ্রদূষণ, অবৈধ পাচার, খাবারের জন্য শিকার এবং কচ্ছপের খোলস দিয়ে অলংকার ও ওষুধ তৈরির চাহিদা—এসবই তাদের অস্তিত্বকে বিপন্ন করে তুলেছে।

    আমাদের করণীয়

    বিশ্ব কচ্ছপ দিবস আমাদের সুযোগ করে দেয় নিজেদের ভূমিকা পুনর্বিবেচনার। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করলে এই নিরীহ প্রাণীগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব। নিচে কিছু প্রস্তাবনা দেওয়া হলো যা ব্যক্তি ও সমাজপর্যায়ে গ্রহণযোগ্য:

    ১. সচেতনতা গড়ে তোলা: শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমের মাধ্যমে কচ্ছপ সংরক্ষণ বিষয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালাতে হবে।

    ২. আইনের প্রয়োগ: কচ্ছপ শিকার ও পাচার রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন এবং প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

    ৩. প্রাকৃতিক আবাসস্থল সংরক্ষণ: নদী, হ্রদ, জলাভূমি, বন ইত্যাদি কচ্ছপের স্বাভাবিক আবাসস্থল রক্ষা করা জরুরি।

    ৪. প্লাস্টিক বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ: প্লাস্টিক বর্জ্য জলজ প্রাণীর জন্য মারাত্মক হুমকি। এটি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

    ৫. পর্যবেক্ষণ ও গবেষণা: পরিবেশবাদী সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহকে কচ্ছপ নিয়ে গবেষণায় উৎসাহিত করতে হবে, যাতে সঠিক তথ্যভিত্তিক নীতিমালা প্রণয়ন সম্ভব হয়।

    বাংলাদেশ প্রসঙ্গে

    বাংলাদেশেও বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ রয়েছে, বিশেষ করে বনাঞ্চল ও উপকূলীয় অঞ্চলে। দেশের সুন্দরবন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার উপকূলে অনেক কচ্ছপ বাস করে। এর মধ্যে কিছু প্রজাতি যেমন—মহাবিপন্ন বাটাগুর বাসকা (Northern River Terrapin) প্রায় বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। বাংলাদেশে কচ্ছপ পাচারও একটি বড় সমস্যা, যা অনেক সময় আন্তর্জাতিক চোরাচালান চক্রের সঙ্গে জড়িত।

    সরকার ও পরিবেশবাদী সংস্থাগুলোর প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও জনসচেতনতার অভাব এবং আইন প্রয়োগের দুর্বলতায় কচ্ছপদের জন্য নিরাপদ আবাস নিশ্চিত করা এখনো সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসেছে।

    উপসংহার

    বিশ্ব কচ্ছপ দিবস উদযাপন শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, এটি আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি বার্তা—প্রকৃতি রক্ষা করো, প্রাণ বাঁচাও। কচ্ছপ যেমন ধীরে চলে, তেমনই আমাদের ধৈর্য, সচেতনতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাদের অস্তিত্ব রক্ষা করতে হবে। মনে রাখতে হবে, কচ্ছপ বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে; আর প্রকৃতি বাঁচলে আমরাও বাঁচবো।

    লেখক: এফ.এইচ সবুজ

    (পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মি)

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    September 2025
    M T W T F S S
    1234567
    891011121314
    15161718192021
    22232425262728
    2930