রতন বালো: ইউপিএস (ইউনিভার্সাল পেনশন স্কিম) বা সর্বজনীন পেনশন স্কিম এর আওতায় পোশাক শ্রমিকদের অংশগ্রহণ কম। আর্থিক সীমাবদ্ধতা, পেনশনের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্ব নিয়ে উদ্বেগ এবং প্রকল্প সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাবই এর প্রধান কারণ। এদিকে ৯৮ শতাংশ নারী পোশাক শ্রমিক সর্বজনীন পেনশনের আওতার বাইরে। আর্থিক সক্ষমতা ও সচেতনতার অভাবে প্রায় ৯৮ দশমিক সাত শতাংশ পোশাক শ্রমিক রাষ্ট্রীয় সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অংশ নেননি বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।আরেক কারণ হলো শ্রমিকদের অনেকে পেনশনের জন্য ডিজিটাল আবেদনের প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত নন। রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, ডেমরা, মতিঝিল, সুত্রাপুর, লালবাগ, গুলশান, বাড্ডা, সবুজবাগ, মিরপুর, পল্লবী ও মোহাম্মদপুর এলাকার ২০০ পোশাক শ্রমিকের ওপর জরিপ চালিয়ে এই গবেষণাপত্র তৈরি করা হয়। নেদারল্যান্ডস ভিত্তিক মনডিয়াল এফএনভি ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম: বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষার সম্ভাবনার খোঁজ’ নামে গবেষণাটি পরিচালনা করে।
সম্প্রতি রাজধানীর শ্রম ভবনে আলোচনা সভায় ওই গবেষণার তথ্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের উপ-পরিচালক (গবেষণা) মো. মনিরুল ইসলাম। আরেকটি বড় কারণ ছিল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য প্রগতি স্কিমের জন্য যে পরিমাণ টাকা দিতে হয় এর পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ইউপিএসে কমে যাওয়ার পেছনে প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে পোশাক শিল্পে অটোমেশন ও প্রযুক্তির ব্যবহার, কম মজুরি, ইউপিএস সম্পর্কে পোশাক শিল্পের নারী শ্রমিকদের অজ্ঞতা। তারা এ ও জানেন না কীভাবে স্কিমে কাজ করতে হয়? নারী শ্রমিকদের এই প্রকল্পে সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকা যা সংকটকে বাড়িয়ে তুলেছে।
গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়, তৈরি পোশাক শিল্পে নারী শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে বেশি সম্পৃক্ততা রয়েছে। এছাড়া কর্মক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতার অভাব, বেতনহীন গৃহস্থালি কাজে বেশি সময় ব্যয় এবং সৌদি আরবের মতো বড় বাজার থেকে কম আকর্ষণ ও এই অংশগ্রহণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
নারী শ্রমিকদের কি বক্তব্য :
কথা হয় মানিকগঞ্জের নয়াডিংগি পারাসিমা গার্মেন্টস-এর নারী শ্রমিক ঝর্ণা কর্মকারের সঙ্গে। তিনি যেমনটি বলছিলেন। ‘সর্বজনীন পেনশন স্কিম কি আমার জানা নেই। সকাল ৮টা থেকে আমাদের গার্মেন্টে প্রবেশ করতে হয়। এজন্য সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে রান্নার কাজ সেরে স্নান করে অফিসে যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু করতে হয়। এর পর রয়েছে তার দুই মেয়ে সন্তান। তাদের সারা দিনের খাবারসহ নানা বিষয়ে দেখা শুনা করে গার্মেন্টসে যেতে হয়। অল্প বেতন এ দিয়ে আমাদের পেনশন কার্যক্রম করা মোটেই সম্ভব নয় বলে ঝর্ণা কর্মকার জানান।
তার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আশালতা, নারগিস, আমেনা, আয়েশা খানমসহ বেশ কিছু শ্রমিক অভিন্ন মত দেন। তারা বলেন, ইউপিএস সম্পর্কে আমাদের কোন জ্ঞান নেই। এমনকি আমরা এও জানিনা কীভাবে পেনশন স্কিম করতে হয়? এটা বুঝার মতো সুযোগ বা সময় কোনটাই আমাদের নেই। এটা জানতে প্রশিক্ষণ নেওয়া প্রয়োজন এবং সেই সঙ্গে বাড়তি খরচ রয়েছে বলে তারা জানান।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা: প্রস্তাবিত স্কিমে বিভিন্ন ধরনের দুর্বলতা রয়েছে বলে মনে করেন জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সভাপতি মো. মহিউদ্দিন খান। সভায় শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য একেএম নাসিম বলেন, পেনশন স্কিমের ব্যবস্থাপনায় আরো স্বচ্ছতার প্রয়োজন। সামাজিক সুরক্ষা স্কিমগুলোর মধ্যে সমন্বয় করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহম্মেদ।
এদিকে ইউপিএস নিয়ে সরাসরি গার্মেন্টস মালিকদের কোনো একক বা সুনির্দিষ্ট বক্তব্য প্রকাশ্যে পাওয়া যায়নি, তবে তাদের পক্ষ থেকে এই স্কিমের বাস্তবায়নে অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তা ও শ্রমিকদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং সহজ প্রক্রিয়ার দাবির পাশাপাশি আর্থিক সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হতে পারে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, আর্থিক অক্ষমতাও ডিজিটাল আবেদন প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত না হওয়ার কারণে শতকরা ৯৮ দশমিক ৭ ভাগ পোশাক শ্রমিক রাষ্ট্রীয় ইউপিএসে অংশ নেয়নি। তবে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট-এর সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন বলেছেন, শ্রমিকের সঞ্চয় না থাকা, মালিকদের দায়িত্ব না নেওয়া, সরকারের প্র¯ুÍতি না থাকা এসব বিষয়ে কোভিড আমাদের চোখ খুলে দিয়েছে। কিন্তু আমরা কী দেখেছি? একজন শ্রমিক সমাজের জন্য উৎপাদন করেন। কিšুÍ কোনো কারণে দুর্ঘটনায় পড়লে এর সব দায় তাকে একাই নিতে হয়। দেশে প্রায় সাত কোটি শ্রমজীবী মানুষ। সরকার মাসে এক হাজার টাকা পেনশন স্কিম দেওয়ার কথা বলেছে। কিšুÍ পোশাকশিল্পের একজন শ্রমিকের মূল বেতন ৫ হাজার ৩০০ টাকা। এই স্বল্প বেতনে নারী শ্রমিকরা ইউপিএস-এর সঙ্গে জড়িত থাকা সম্ভব কি না আমি জানিনা।
কী বলছেন কর্তৃপক্ষ: বাংলাদেশ লেবার ফেডারেশনের নির্বাহী পরিচালক একেএম আশরাফ উদ্দিন এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সর্বজনীন পেনশন স্কিম পরিচালনার ক্ষেত্রে সবার আস্থা অর্জনই অন্যতম চ্যালেঞ্জ। যেখানে চাকরির নিরাপত্তা নেই, সেখানে কোনো শ্রমিক এ স্কিমে যুক্ত হতে আগ্রহী হবে না।
শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক (ট্রেড ইউনিয়ন, সালিশি ও প্রশিক্ষণ শাখা) শামীমা সুলতানা বারির মতে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম তখনই যথাযথ অবদান রাখতে পারবে, যখন শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় সম্ভব হবে।
শ্রম অধিদপ্তরের পরিচালক শামীমা সুলতানা বারির মতে, সর্বজনীন পেনশন স্কিম তখনই যথাযথ অবদান রাখতে পারবে, যখন শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয় করা যাবে। সামাজিক সুরক্ষায় নেওয়া এ ধরনের পেনশন স্কিম প্রণয়নের ক্ষেত্রে সব অংশীজনের অংশগ্রহণ জরুরি বলে মন্তব্য করেন আইএলওর ইআইএস প্রজেক্টের চীফ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজার সৈয়দ সাদ হোসেন জিলানী। তিনি বলেন, আইএলওসব সময়ই সামাজিক সংলাপকে গুরুত্ব দিয়ে আসছে।
কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক মো. মতিউর রহমান বলেন, আমরা এতদিন কারখানাগুলোর অবকাঠামো উন্নয়ন ও নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষভাবে মনোযোগী ছিলাম, তবে এখন শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে।
এদিকে ইউপিএস নিয়ে শ্রম অধিকার সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়নগুলোর বক্তব্য মূলত শ্রমিকদের আর্থিক সক্ষমতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল আবেদনপ্রক্রিয়ার সহজীকরণ এবং স্কিমের সুবিধা সম্পর্কে সচেতনতা তৈরির উপর জোর দেয়, যেহেতু তাদের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও অজ্ঞাত কারণে ৯৮ শতাংশের বেশি পোশাক শ্রমিক এই স্কিমের আওতার বাইরে রয়েছেন। অপ্রাতিষ্ঠানিক ও ঝুঁকিপূর্ণ কাজে সম্পৃক্ততা: কর্মজীবী নারীদের একটি বড় অংশ এখনো অপ্রাতিষ্ঠানিক কাজে, যেমন কৃষি কাজে যুক্ত।
এই ধরনের কাজে তাদের শ্রম বেশি হলেও ন্যায্য মজুরি থেকে তারা বঞ্চিত হন। এর পরে নেই উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা না থাকায় নারীরা প্রযুক্তি-নির্ভর বা উচ্চ-দক্ষতার কাজে সুযোগ পাচ্ছেন না। গৃহকাজে বেতনহীন গৃহস্থালি কাজে অতিরিক্ত সময় দেওয়ার কারণে নারীরা নিয়মিত বেতনভুক্ত কাজে কম সময় দিতে পারেন। বাস্তবায়নের লক্ষ্য এবং পটভূমি: ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চালু হওয়া ইউপিএস বেসরকারি খাতের শ্রমিকদের অবসরকালীন নিরাপত্তা মোকাবিলা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে প্রত্যাশিত ছিল । কিন্তু প্রগতি স্কিমের আওতায় এ বাংলাদেশের অর্থনীতিতে উন্নয়ন খাত থেকে প্রাথমিক অংশগ্রহণ নগণ্য বলে জানা গেছে। ৩ লাখ ৭২ হাজার ৩৮৯ জন ইউপিএস নিবন্ধিতদের মধ্যে মাত্র ২২ হাজার ৪১০ জন প্রগতি স্কিমে যুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রাজধানীর ঢাকার সংখ্যা খুবই কম এবং নারী অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য ভাবে কম বলে জানা গেছে।
চ্যালেঞ্জ: নারী শ্রমিকদের বেতন কম হওয়ায় তারা নির্দিষ্ট হারে চাঁদা দিতে অসুবিধার সম্মুখীন হতে পারেন, বিশেষ করে যদি তাদের পরিবারের মাসিক আয় বেশি হয়। সমতা স্কিমে একটি নির্দিষ্ট বয়সসীমা (২০-৩৫ বছর) রয়েছে যা অনেক গ্রামের নারী শ্রমিকের জন্য একটি বাধা হতে পারে, কারণ তাদের বিয়ে সাধারণত ২০ বছরের কম বয়সি হয়ে থাকে। অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা বা ব্যাংকে গিয়ে চাঁদা জমা দেওয়ার মতো প্রক্রিয়াগুলো গ্রামের অনেক নারী শ্রমিকের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য সূত্রে জানা গেছে, দেশের নারী শ্রমশক্তির একটি বড় অংশ এখনো কৃষি ও গৃহভিত্তিক কাজে যুক্ত। কৃষি খাতে নারীর অংশগ্রহণ শতকরা ৭৪ দশমিক ১ ভাগ আর অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে এই হার শতকরা ৯৬ দশমিক ৬ ভাগ। তুলনামূলকভাবে শিল্প খাতে মাত্র শতকরা ৮ দশমিক ৭ এবং সেবা খাতে শতকরা ১৭ দশমিক ২ ভাগ নারী কর্মরত।বিশ্বব্যাংকের ২০২৩ সালের ডাটা অনুযায়ী, ১৫ বছর নারীর শ্রমশক্তিতে অংশগ্রহণের হার শতকরা ৪৩ দশমিক ৭ ভাগ, যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে তা শকরা ৮১ দশমিক ১ ভাগ। এই বৈষম্যমূলক পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যদিও নারীর কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ বাড়ছে কিন্তু বাস্তব চিত্র এখনো আশাব্যঞ্জক নয়। বিশেষত গ্রামীণ ও অশিক্ষিত নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ ও মর্যাদা সম্পন্ন কর্মপরিবেশ গড়ে ওঠেনি।
সরকারের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা : তবে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের সর্বনিম্ন চাঁদার হার আরো কমিয়ে আনার নতুন বিধান যুক্ত করে সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করছে সরকার। আগামী অর্থবছর থেকে এসব সুবিধা কার্যকর করবে সরকার। শেখ হাসিনা সরকারের সময় চালু হওয়া সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা আরো আকর্ষণীয় করে তুলতেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এসব বিধান রেখে সর্বজনীন পেনশন স্কিমকে আকর্ষণীয় করার উদ্যোগ থাকছে। সম্প্রতি প্রস্তাবগুলো চূড়ান্ত করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বৈঠক করেছেন পেনশন পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। আগামী অর্থবছর থেকে এসব সুবিধা কার্যকর করবে সরকার। বর্তমান বিধান অনুযায়ী, ১৮-৫০ বছর পর্যন্ত বয়সীরা সর্বজনীন পেনশন স্কিমগুলোতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারেন। তবে চাঁদাদাতাদের বয়স ৬০ বছর হওয়ার পর থেকে তারা মাসিক পেনশন পাবেন।
সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ইউপিএস জনগণের কাছে আকর্ষণীয় করতে এককালীন আনুতোষিক সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি বেশকিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউপিএসে কত টাকা মাসিক চাঁদা দিলে প্রতি মাসে কত টাকা পেনশন পাওয়া যাবে, তার একটি হিসাব আছে। যদি কেউ আনুতোষিক সুবিধা হিসেবে এককালীন অর্থ উত্তোলন করেন, তাহলে তার মাসিক পেনশনের পরিমাণ কমে যাবে। আর কেউ যদি আনুতোষিক সুবিধা না নেন, তাহলে তার মাসিক পেনশন কমবে না। আনুতোষিকের হার মোট জমার কত শতাংশ নির্ধারণ করা হচ্ছে তা জানা সম্ভব হয়নি।
অর্থ উপদেষ্টা যা জানালেন: এ বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইউপিএসকে অর্থবহ করার চেষ্টা করছি। আমরা কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যা আগামী বাজেটে দেখতে পাবেন। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া যেকোনো সিদ্ধান্ত যদি সাধারণ মানুষের কল্যাণে না আসে তাহলে সেসব সিদ্ধান্তই বৃথা যায়। আমরা সরকারের এই উদ্যোগকে মানুষের কল্যাণে লাগাতে চাই।
উল্লেখ্য, সরকার সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা জনপ্রিয় করতে প্রচার-প্রচারণার বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও তা সফলতার মুখ দেখেনি। গত ১২ মে সোমবার পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশন স্কিম কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, স্কিমগুলোয় মোট রেজিস্ট্রেশন করেছেন ৩ লাখ ৭৩ হাজার ৭৪১ জন। মোট টাকা আদায় হয়েছে ১৭৬ কোটি ৬৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা। এর মধ্যে প্রগতি স্কিমে যুক্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ১১০ জন, সুরক্ষায় ৬৩ হাজার ৫০৮ জন, সমতায় ২ লাখ ৮৬ হাজার ১৫১ জন। আর প্রবাস স্কিমে যুক্ত হয়েছেন ৮৭২ জন। এদের মধ্যে অনেকে নিয়মিত কিস্তিও পরিশোধ করছেন না।
এ বিষয়ে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীদের গ্র্যাচুইটির বিধানের সঙ্গে সর্বজনীন পেনশনারদের গ্র্যাচুইটির হিসাব মিলবে না। এক্ষেত্রে একজন চাঁদাদাতা মোট যে টাকা জমা দেবেন, তার ২৫-৩০ শতাংশ অর্থ এককালীন গ্র্যাচুইটি ব আনুতোষিক সুবিধা হিসেবে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারে।
বিআলো/ইমরান