হংকংয়ের আবাসিক কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৪, নিখোঁজ ২৭৯
আর্ন্তজাতিক ডেস্ক: হংকংয়ের তাই পো জেলার ওয়াং ফুক কোর্ট নামের বিশাল আবাসিক কমপ্লেক্সে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বুধবার অন্তত ৪৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ২৭৯ জন। দগ্ধ ও আহত অবস্থায় বহু বাসিন্দাকে শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে কমপ্লেক্সটির কয়েকটি টাওয়ারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। আট ব্লকের এই আবাসিক এলাকায় মোট দুই হাজারের বেশি ফ্ল্যাটে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ বাস করেন। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, ভবনের বাইরের বাঁশের কাঠামো ও নিরাপত্তা নেট আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
দমকল বিভাগ জানায়, আগুন লাগার খবর পাওয়ার দ্রুত পরই ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধারকাজ শুরু করেন তারা। প্রায় আট শতাধিক কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। তবে উচ্চতলার দিকে প্রচণ্ড উত্তাপের কারণে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়েছে। নিহতদের মধ্যে একজন দমকলকর্মীও রয়েছেন।
অগ্নিকাণ্ডের মাত্রা কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চার থেকে সর্বোচ্চ পাঁচে উন্নীত করা হয়—যা হংকংয়ে দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেখা সবচেয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। নির্বাহী প্রধান জন লি রাতের দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জানান, তিনটি ভবনে আগুনের তীব্রতা কিছুটা কমলেও পরিস্থিতি এখনো ঝুঁকিপূর্ণ। ভবনের ভেতরে আরও মানুষ আটকা থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আগুন লাগার পর আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকে আত্মীয়স্বজনের খোঁজে ভবনের সামনে অবস্থান নেন। একজন ৭১ বছর বয়সী বাসিন্দা জানান, তার স্ত্রী আগুন লাগা একটি টাওয়ারে আটকা পড়েছেন। আরেক বাসিন্দা জানান, তিনি হয়তো রাতটা বাসায় ফিরতে পারবেন না।
অগ্নিকাণ্ডের কারণে এলাকার একটি প্রধান মহাসড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়, ফলে যানবাহন ঘুরিয়ে দিতে গিয়ে শহরের উত্তরাংশে ট্রাফিক পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে। আজ বৃহস্পতিবার কমপক্ষে ছয়টি স্কুল বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষা ব্যুরো।
আগুন লাগার কারণ এখনো তদন্তাধীন। ভবনগুলো ১৯৮৩ সালে নির্মিত এবং সম্প্রতি নতুন করে সংস্কারের কাজ চলছিল। দমকল বিভাগ জানিয়েছে, স্ক্যাফোল্ডিংয়ের বাঁশের কাঠামো আগুন ছড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে।
চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং দুর্ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে উদ্ধারকাজ ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং হতাহতের সংখ্যা কমাতে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
বিআলো/শিলি



