নাজিরপুরে ঘুষের টাকা ফেরত দিলেন ২ শিক্ষা কর্মকর্তা
পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার ৩৬ নং উত্তর লেবুজিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহিনুজ্জামানের বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার অপরাধে এবং তাকে অন্য বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনের জন্য ঘুষ নেওয়া নব্বই হাজার টাকা উপজেলার দুই প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফেরত দিয়েছেন বলে জানা গেছে।
ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি এ বছরের জুলাই-আগস্টে হলেও গত রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) জানাজানি হয়। সংবাদ প্রতিনিধি শিক্ষা অফিসের ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও জেলা কর্মকর্তাকে জানানোর পর নড়েচড়ে বসে শিক্ষা অফিস।
এরপর গত শনিবার (৫ অক্টোবর) উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাহিনুজ্জামানের চাচাতো বোনের বাসায় গিয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দিয়ে আসেন বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী শাহিনুজ্জামানের চাচাতো বোন। অভিযোগ ওঠা ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তা হলেন উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা খানম এবং সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনুর রহমান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ৩৬ নং উত্তর লেবুজিলবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. শাহিনুজ্জামান দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার অপরাধে তার সার্ভিস বুকে নোট রাখা এবং বরখাস্তের ভয় দেখিয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা খানম নগদ ত্রিশ হাজার টাকা এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনুর রহমান ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ষাট হাজার টাকা ঘুষ নেন। ঘুষের বৈধতার জন্য তারা শিক্ষক শাহিনুজ্জামানের কাছ থেকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর একটি আবেদন লিখিয়ে রাখেন। সেখানে শাহিনুজ্জামান লিখেন আমি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা খানমকে কোন নগদ অর্থ প্রদান করিনি এবং সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনুর রহমান হাওলাদারকে কোন চেক প্রদান করিনি।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক শাহিনুজ্জামান এবং উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মামু- নুর রহমানকে তাদের মুঠোফোনে একাধিক বার ফোন দিয়েও বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হেনায়ারা খানম জানান, আমি কোন টাকা নেইনি এবং ফেরত দেইনি। শিক্ষক শাহিনুজ্জামানকে তাহলে কেন অন্য বিদ্যালয়ে ডেপুটেশনে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে তিনি জানান, শাহিনুজ্জামানের আবেদনের ভিত্তিতে তাকে ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছে। তার আবেদনে লেখা আছে সে আমাকে কোন নগদ টাকা দেয়নি এবং এটিও মামুনকেও কোন চেক লিখে দেয়নি। শিক্ষা কর্মকর্তা আরও বলেন, আমি আপনাকে এত কৈফিয়ত দিবো না।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কুমারেশ চন্দ্র গাছি জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। নাজিরপুর উপজেলার ওই দুই শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। ব্যাংক চেকের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেন হয়ছে কিনা তা যাচাই করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ম্যানেজারের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিআলো/তুরাগ