• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    হাতিরঝিলে অপরাধ নির্মূলে বিশেষ ভূমিকায় আনসার বাহিনী 

     dailybangla 
    28th Jan 2025 12:07 am  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর দৃষ্টিনন্দন হাতিরঝিল এলাকা। প্রতিদিন এখানে ছুটে আসেন হাজার হাজার দর্শণার্থী। কর্মব্যস্ততার ফাঁকে প্রকৃতির ছোঁয়া পেতে কেউ একাকী, কেউবা প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে আসেন। উপভোগ করেন হাতিরঝিলের মনোরম দৃশ্য। সম্প্রতি বিনোদনের এই কেন্দ্রটিতে দিন দিন বেড়েই চলছিলো অপরাধ। প্রায়ই ঘটতো খুন, ছিনতাইর মতো ঘটনা। এছাড়া মাদক বাণিজ্য, যৌন হয়রানি, দেহব্যবসা ও কিশোর গ্যাং উৎপাতের দেখা মিলতো অহরহ। প্রায় ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল অপরাধচক্র।

    এরপর ১৫/১০/২০২৪ ইং তারিখ রাজউক নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তেজগাঁও, গুলশান ও রামপুরা বাড্ডার আংশিক স্থানে অপরাধ নির্মূলে একজন সৎ নিষ্ঠাবান অফিসারকে পদায়ন করা হলে তিনি যোগদানের পর থেকে অপরাধ নির্মূলে আসে প্রেক্ষাপটের পরিবর্তন। তার কর্মদক্ষতার পরিচয় দিয়ে রাজউকের নির্বাহী ম্যজিষ্ট্রেট ও থানা পুলিশের সমন্বয় করে এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড নির্মূল করে যাচ্ছেন।

    তিনি হলেন আনসার বাহিনীর অন্যতম সৎ নিষ্ঠাবান অফিসার আনসার কমান্ডার (পিসি) শাহ আলম (আইডি নং ২৭৫১৯)। তিনি ২০০৩ সালে আনসার বাহিনীতে যোগদান করেন, এরপর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে নিরলস সততার সাথে কাজ করার জন্য ২০০৮ সালে তার ভালো কাজের দক্ষতায় আনসার কমান্ডার (পিসি) পদোন্নতি পান। রাজধানীর ঢাকায় রাজউক প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত থেকে বিভিন্ন কাজের মাধ্যমে সুনাম অর্জন করেন।

    মাদক সেবিদের কখনো থানায় সোপর্দ করছেন তো ছাত্র হলে “পরবর্তীতে আর মাদক সেবন করবোনা” মর্মে মুচলেকা নিয়ে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছেন। তার নিয়ন্ত্রিত সহকর্মী (আনসার সদস্যরা) নির ঘুম নিরলসভাবে দিন রাত পরিশ্রম করে মাদক , চুরি, ছিন্তাই নির্মূলে ভূমিকা রাখছেন।

    হাতিরঝিল এলাকায় বসবাসরত একাধিক বাসিন্দা জানান, দেশের এই করুন কালে বাসায় চুরি ডাকাতি কিংবা বখাটেদের তথ্য দিয়ে থানায় কল করলে যেখানে কোন রেসপন্স পাওয়া যায়না। সেখানে আনসার সদস্য ভাইদের ডাকলেই পাওয়া যায়। কোথাও মাদক কারবারি অথবা বেচতে কিনতে দেখলে তাদের কল করলে অপ্ল সময়ের মধ্যেই টীম চলে আসে। আমাদের এলাকায় আগে অহরহ অপরাধ সংগঠিত হতো, তবে আনসারদের দিন রাত নিরলস প্রচেষ্টায় এখন কিছুটা সস্তিতে আছি।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক বাসিন্দা জানান, আমার ভাতিজা একজন কলেজ পড়ুয়া ছাত্র বখাটে ছেলেদের সাথে মিশে মাদকের সেবনে জড়িয়ে পরে যা আমরা জানতাম না। হাতিরঝিল এলাকায় ডিউটিরত আনসার সদস্যদের হাতে মাদক সেবন কালে ধরা পরলে (আমাদের) পরিবারকে ডেকে মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেন। এটা নিতান্তই একটা ভালো কাজ, নয়তো থানায় দিলে জেলে যেত ছাত্র জীবন শেষ হয়ে যেত আবার পরবর্তীতে বড় অপরাধও করতে পারতো। তার থেকে আনসার কমান্ডার শাহ আলমের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

    হাতিরঝিল এলাকায় কর্তব্যরত একজন আনসার সদস্যর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ৫ আগষ্টের পরে এই এলাকায় চুরি ডাকাতি ছিন্তাই ও মাদক ব্যপক হারে বৃদ্ধি পায়। আমাদের কমান্ডার শাহ আলম এই জোনে যোগদানের পর থেকে তার নির্দেশনায় আমরা অনেকটা নির্মূল করতে পেরেছি। তিনি অত্যন্ত ভালো মনের মানুষ।

    তথ্যসূত্রে জানা যায়, হাতিরঝিল নির্মাণ থেকে শুরু করে উদ্বোধনের পর সেনাবাহিনী রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করতো। তখন কেউ অপরাধ করতে সাহস পেতো না। রাজউককে তারা হাতিরঝিলের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার পরই অপরাধ বেড়ে গেছে।  ২০১৩ সালের ২রা জানুয়ারি হাতিরঝিল উদ্বোধন করা হয়।

    মাদক নির্মূলে পিসি শাহ আলমের ভূমিকা: রাজধানীর গোপীবাগের ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব মাঠ সম্প্রতি মাদকসেবীদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ে। যার কারণে এলাকায় বেড়েছিল চুরি-ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। ব্যাহত হচ্ছিল এলাকার মানুষের প্রাতঃভ্রমণসহ শিশুদের খেলাধুলা। এলাকাবাসীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আনসার কমান্ডার শাহ আলম নেতৃত্বে আনসার বাহিনী অভিযান চালিয়ে মাঠটি মাদকসেবী মুক্ত করেন।

    প্রসঙ্গত, ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব মাঠের পাশে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মচারী নিবাসের আবাসিক এলাকা ও মাঠের নিরাপত্তার দায়িত্ব দেওয়া হয় আনসার বাহিনীকে। দায়িত্ব পাওয়ার পর আনসার সদস্যরা কয়েকটি অভিযান চালান মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে।

    এমন ভালো কাজের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়, ঢাকার পরিচালক (নিরাপত্তা) নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ থেকে আনসার কমান্ডার শাহ আলম আইডি নং ২৭৫১৯ কে লেঃ কর্ণেল মোঃ শামীমুর রহমান, পিএসসি (অবঃ) পরিচালক (নিরাপত্তা) নিরাখত্তা ব্যবস্থাপনা বিভাগ স্বাক্ষরিত প্রশংসা পত্র প্রদান করেন।

    ছাত্র আন্দোলনে পিসি শাহ আলমের ভূমিকা:
    বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ৫ আগস্ট পুলিশ সদস্যরা একটি রিভলবার, ৬টি শটগান, দু’টি রাইফেল, গ্যাস গান তিনটি, ১৪টি সাউন্ড গ্রেনেড, ৩৯৬ রাউন্ড গুলি, টিয়ারশেল, হেলমেটসহ অন্যান্য মালামাল রাজউক ভবনে ফেলে চলে যায়। বিষয়টি রাজউক চেয়ারম্যানকে জানান নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার পল্টুন কমান্ডার শাহ আলম। চেয়ারম্যান তাকে অস্ত্রগুলো গুছিয়ে নিরাপদে রাখার নির্দেশ দেন। এর পর তিনি আনসার সদস্যদের নিয়ে অস্ত্র-গুলি নিরাপদে রেখে দেন।

    পরে গত ১২ আগস্ট ২০২৪ ইং তারিখ রোববার বিকেলে ম্যাজিস্ট্রেট ও উপপরিচালক (রাজউক) লিটন সরকারের উপস্থিতিতে পুলিশের ফেলে যাওয়া অস্ত্র-গুলি সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করেছে রাজউকে দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার শাহ আলম ও অন্যান্য আনসার সদস্যরা।

    এমন সৎ সাহসী ও ভালো কাজের প্রশংসা সরুপ রাজউক চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো: ছিদ্দিকুর রহমান সরকার (অব.) দক্ষতা ও সাহসিকতার সহিত রাজউক ভবনের দায়িত্ব পালন করায় প্রত্যয়ন প্রদান করেন।

    রাজউকের চেয়ারম্যান প্রত্যয়নে উল্লেখ করেন যে তার জানা মতে তাহার স্বভাব চরিত্র ভালো তিনি রাষ্ট্র বিরোধী কোনো কার্যকলাপের সাথে জড়িত নন বলে অবহিত করে, তাহার সর্বাঙ্গীণ উন্নতি/মঙ্গল কামনা করেন।

    আনসার বাহিনী’র কার্যক্রম: আনসার বাহিনী মূলত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়ক হিসেবেই এই বাহিনীর অভ্যূদয় ঘটে। প্রথম থেকেই জনসাধারণের কল্যাণে ও গণমানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আনসার ভিডিপি তাদের দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করে আসছে। সময়ের পরীক্ষায় তা বেশ ভালোভাবেই পরিচিতি পায়। দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা। একসময় গ্রামীণ আইনশৃঙ্খলা বির্নিমাণে আনসার বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত হয় ভিডিপি (গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী)। পরবর্তীতে এই দুই বাহিনীর একত্রীকরণে এর নাম হয় আনসার- ভিডিপি।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031