• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    শুরু হলো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি 

     dailybangla 
    01st Feb 2025 1:13 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    বিআলো প্রতিবেদক: বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলো সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর-এসব ভাষা শহীদদের রক্তে রাঙানো সেই ফেব্রুয়ারি মাস। সাতচল্লিশে দেশভাগের পরেই যখন বাঙালিরভাষার ওপর আঘাত এলো, তখন বুকের রক্ত ঢেলে লেখা হলো এক নতুন ইতিহাস। সেই মাসের শুরু হলো আজ শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি)।

    ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি মায়ের ভাষা বাংলাকে রক্ষায় ১৪৪ ধারা ভেঙে রাজপথে নামেন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ বাংলার দামাল ছেলেরা। তাদের সাহসিকতা ও বুকের তাজা রক্তের বিনিময়ে ওই দিন মাতৃভাষা বাংলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিল বাঙালি জাতি।শোকাবহ এ মাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে গৌরব আর অহঙ্কারের অধ্যায়।

    এর আগে পাকিস্তানের গভর্নর জেনারেল, গণপরিষদের সভাপতি এবং মুসলিম লিগের সভাপতি মোহাম্মদ আলি জিন্নাহ ১৯৪৮ সালের ২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) এক সভায় বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা হবে উর্দু- অন্য কোনও ভাষা নয়।’

    কার্জন হলে উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলার পর কয়েকজন ছাত্র ‘না’ ‘না’ বলে চিৎকার করে প্রতিবাদ করেছিলেন- যা জিন্নাহকে অপ্রস্তুত করেছিল। এই ঘটনার পর জিন্নাহকে একটি স্মারকলিপিও দিয়েছিল একদল ছাত্র। এতে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবি জানানো হয়। শুরু হয় রাষ্ট্রভাষার দাবিতে আন্দোলন।

    তবে, ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছাত্র ও অধ্যাপক মিলে তমদ্দুন মজলিস নামে একটি সংগঠন সৃষ্টি করেন, যারা শুরু থেকেই রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে নানারকম সভা-সমিতি আলোচনার আয়োজন করে। গঠিত হয়েছিল একটি ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদও’। ভাষার আন্দোলন জোরদার করে তোলে এই সংগঠন। ১৯৪৮ সালে বিভিন্ন সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে ২ মার্চ ফজলুল হক হলে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের এক সভায় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ওইদিন এক প্রস্তাবে সারা পূর্ব বাংলায় ১১ মার্চ সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয়।

    ১৯৪৮ সালের ২৭ ডিসেম্বর করাচিতে অনুষ্ঠিত নিখিল পাকিস্তান শিক্ষা সম্মেলনে বাংলা ভাষা আরবি হরফে লেখার প্রস্তাব উত্থাপন করেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ফজলুর রহমান। এরপর ১৯৪৯ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি পেশোয়ারে অনুষ্ঠিত শিক্ষা উপদেষ্টা বোর্ডের সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে তিনি বাংলা হরফকে বাদ দিয়ে তার স্থলে আরবি হরফে বাংলা লেখা প্রবর্তনের ঘোষণা দেন। তার এ ঘোষণার প্রতিবাদে ১৯৪৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রছাত্রীরা মোস্তফা নূর উল ইসলামের সভাপতিত্বে এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। নজরুল ইসলাম, আশরাফ সিদ্দিকী, ইলা দাস গুপ্ত, নূরুল ইসলাম, মমতাজ বেগম, রিজিয়া সিদ্দিকী, খলিলুর রহমান প্রমুখের সমন্বয়ে একটি বর্ণমালা সাব-কমিটি গঠন করা হয়। শুরু হয় বাংলা হরফ বিতাড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন। বাংলাভাষার সমমর্যাদার দাবিতে পূর্ব বাংলায় আন্দোলন দ্রুত দানা বেঁধে ওঠে। আন্দোলন দমনে পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে ঢাকা শহরে মিছিল, সমাবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

    ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা ১৪৪ ধারা অমান্য করে রাজপথে বেরিয়ে এলে পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালায়। এতে আবুল বরকত, আবদুল জব্বার, আবদুস সালামসহ কয়েকজন ছাত্রযুবা হতাহত হন। এ ঘটনার প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ ঢাকাবাসী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হোস্টেলে সমবেত হয়। নানা নির্যাতন সত্ত্বেও ছাত্রদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষেরা প্রতিবাদ জানাতে পরের দিন ২২ ফেব্রুয়ারি পুনরায় রাজপথে নেমে আসে। তারা মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে শহীদদের জন্য অনুষ্ঠিত গায়েবি জানাজায় অংশগ্রহণ করে। ভাষাশহীদদের স্মৃতিকে অমর করে রাখার জন্য ২৩ ফেব্রুয়ারি এক রাতের মধ্যে মেডিকেল কলেজ হোস্টেল প্রাঙ্গণে গড়ে ওঠে একটি স্মৃতিস্তম্ভ, যা সরকার ২৬ ফেব্রুয়ারি গুঁড়িয়ে দেয়। একুশে ফেব্রুয়ারির এই ঘটনার মধ্য দিয়ে ভাষা আন্দোলন আরও বেগবান হয়। ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট জয়লাভ করলে ৭ মে অনুষ্ঠিত গণপরিষদের অধিবেশনে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।

    ভাষার জন্য বাংলার দামাল সন্তানদের আত্মত্যাগ আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পায় ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। ইউনেসকো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ ঘোষণা করে। এর মধ্যদিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে এখন বিশ্বের দেশে দেশে পালিত হয়। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকেই শুরু হচ্ছে নানা কর্মসূচি। এর মধ্যে অন্যতম হলো- ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ১ ফেব্রুয়ারি বাংলা একাডেমির আয়োজনে শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা।

    বিআলো/শিলি

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031