৫ দফা না মানলে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে
নিজস্ব প্রতিবেদক: বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সভাপতি ও সাবেক সচিব এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেছেন, ‘বেসামরিক প্রশাসনে চাকরি করা ফ্যাসিবাদের দোসরদের অপসারণ ও আইনের আওতায় আনতে হবে। সব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করতে হবে। বিগত ফ্যাসিবাদ আমলে বৈষম্যের শিকার সব ক্যাডার ও নন-ক্যাডার কর্মকর্তা-কর্মচারীকে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন করতে হবে। বৈষম্যের শিকারদের পদোন্নতিসহ প্রাপ্য সুবিধা দিতে হবে। যারা ফ্যাসিবাদের সহযোগীদের পদোন্নতি ও পদায়নসহ পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় সাবেক সচিব আব্দুল বারী, সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি মো. আব্দুল খালেক, সদস্য মেরাজ হোসেন ও সাবেক যুগ্মসচিব বিজন কুমার সরকারসহ বিভিন্ন ব্যাচের সাবেক সচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং যুগ্ম সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।
পূর্ব নির্ধারিত ওই সংবাদ সম্মেলনে এ বি এম আব্দুস সাত্তার বলেন, বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরামের দাবিগুলো মানা না হলে শিগগিরই কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। একইসঙ্গে প্রশাসনে কর্মরত বিতর্কিত কর্মকর্তাদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা হবে। কর্মসূচির অংশ হিসাবে প্রশাসনে সংগঠিত সব অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের পরিচয়ও জাতির সামনে তুলে ধরা হবে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বঞ্চিত কর্মচারীদের পক্ষে শোষিতদের প্রতিনিধি হিসাবে কথা বলছি। এর বাহিরে আমাদের আর কোনো পরিচয় নেই।’
লিখিত বক্তব্য আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের সময় প্রশাসনে দলতন্ত্র কায়েম করা হয়েছিল। প্রশাসনে পদোন্নতি পদায়নের একমাত্র মানদণ্ড ছিলো দলীয় আনুগত্য। দলতন্ত্র কায়েম করে যোগ্যদের বঞ্চিত করা হয়েছে। ওই সময় শেখ মুজিবুর রহমানের মাজার জিয়ারত করা কর্মকর্তারা এখনও সচিব পদে দায়িত্বপালন করছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পরিস্কার বলতে চাই, পানিসম্পদ সচিব নাজমুল হাসান, কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ ইমদাদ উল্ল্যাহ মিয়াঁ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব (সমন্বয় ও সংস্কার) জাহেদা পারভীনের নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। তারা স্বৈরাচারের দোসর ও সুবিধাভোগী দুর্নীতিবাজ।’
তোফাজ্জাল হোসেন ও মফিদুর রহমানের মতো ব্যক্তিরা কীভাবে সচিব পদে পদোন্নতি পেয়েছে- তা জানিয়ে আব্দুস সাত্তার বলেন, ‘জনপ্রশাসন সচিবকে জাতির কাছে বিষয়টি পরিস্কার করতে হবে। তাকে জবাব দিতেই হবে। কোনো ধরণের ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা সরকারকে সমর্থন করি ও সফলতা কামনা করি। কিন্তু সরকারের প্রশাসনে বসে আছে ফ্যাসিবাদের দোসররা। তাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে দেশের প্রশাসন ধ্বংস হচ্ছে।’
দুর্নীতিবাজ আওয়ামীপন্থি কর্মকর্তাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘গত সরকারের সময়ও তারা চুক্তিতে কর্মরত ছিলেন। এমন কর্মকর্তাও আছেন যারা বার বার চুক্তিতে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা বর্তমান সরকারের সময়ও চুক্তিতে নিয়োগ পাচ্ছেন। এটা কি করে হয়।’
বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ফোরামের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে অভিযোগ আসছে, সমন্বয়করা সচিবালয়সহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও বিভাগে গিয়ে বসে থাকেন। কেন্দ্র থেকে মাঠ প্রশাসনে এ সমন্বয়কদের দৌরাত্ম্য চলছে। তারা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাজে বাধার সৃষ্টি করছে। এ বিষয়ে আমরা সরকারের কাছে পরিস্কার ব্যাখ্যা দাবি করছি।’
বিআলো/শিলি