• যোগাযোগ
  • সংবাদ দিন
  • ই-পেপার
    • ঢাকা, বাংলাদেশ

    ডাঃ ফারজানা মাকসুদ রুনার সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন 

     dailybangla 
    19th May 2025 5:48 pm  |  অনলাইন সংস্করণ

    নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের উদ্যোগে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা এবং বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাঃ ফারজানা মাকসুদ রুনাকে সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের বক্তারা।

    রবিবার ১৮ মে বিকেল পাঁচটায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি ডিআরইউ সাগর রুনি মিলনায়তনে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

    সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ডাক্তার ফারজানা মাকসুদ রুনা বলেন, আমি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ এর এনাটমি ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী অধ্যাপক। আমি বাংলাদেশ মেডিকেল এর ১২তম ব্যাচ এর একজন স্টুডেন্ট এবং অত্র প্রতিষ্ঠানে গত ১৭ বছর ধরে কর্মরত আছি। জুলাই আগস্ট অভ্যুত্থানের একজন সমূহযোদ্ধা। যখন ফ্যাসিস্ট হাসিনা নিরীহ নিষ্পাপ নারী ও শিশুদের উপর নির্বিচারে গুলি করছিল তখন আমি আমার দুই সন্তানের কথা চিন্তা না করে রাস্তায় নেমে গিয়েছিলাম জীবন বাজি রেখে। ফ্যাসিবাদ হসিনার পতন হলেও ভাগ্যের পরিহাস আবারও এক ফ্যাসিস্ট ডাঃ প্রফেসর মাজহারুল ইসলাম। অবৈধভাবে আমাদের প্রাণের মেডিকেল কলেজ এর গভর্নিং বডি এর চেয়ারম্যান নিযুক্ত হয়। দুর্ভাগ্যবশত তিনি আমাদের মেডিকেল এর প্রথম বর্ষের একজন ছাত্র ছিলেন।

    তিনি বলেন, অত্যন্ত সুখের সাথে জানাতে চাই যে, প্রফেসর ডাঃ মাযহারুল ইসলাম দোলন বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের গর্ভনিই বডির চেয়ারম্যান হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একবার মনোনীত হন। মনোনয়ন পওয়ার দুই মাস আগে থেকেই তিনি ফেইসবুকে নানা ধরণের কুরুচি ও কটূক্তিমূলক মন্তব্য শুরু করেন এবং কলেজ ও হাসপাতালের ১০-১২ জন জুনিয়র চিকিৎসক দ্বারা একটি ক্যাডার বাহিনী তৈরী করেন, বিভিন্ন সমযে প্রতিষ্ঠানে শো-ডাউন করে ছাত্র-শিক্ষকদের মনে ভয়-ভীতির সঞ্চার করেন। পরবর্তীতে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সালে অত্র কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর উনি আইন বহির্ভূত কার্যকলাপ শুরু করেন, তা ইতিপূর্বে কোন চেয়ারম্যান দ্বারা সংগঠিত হয় নাই।

    ফ্যাসিস্ট দোসর ডাঃ প্রফেসর মাজহারুল ইসলাম বিরুদ্ধে অভিযোগ সমূহ:-

    ১। প্রয়াশই বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে নিজের ক্যাডার বাহিনীকে দিয়ে ভিজিট করেন এবং অনেক টিচারদের অশ্লীল ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তাদের চাকুরীচ্যুত ও বদলী করেন যা কিনা গভর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়াই উনি ও বিএমএসআরআই বাস্তবায়ন করেন।

    ২। মহিলা টিচারদের সাথে তিনি চরম দুর্ববিহার করেন, তারাও গালি গালাজ অশ্লীল ভাষা থেকে রেহাই পারনি। সিনিয়র প্রফেসরদের সাথে তুই তোকারি করে কথা বলেন, “উনি বললেন এটা আমার কলেজ, আমি যা চাই, তাই করি, প্রয়োজনে তা ছিনিয়ে নিয়া আসি’। নির্দিষ্ট অনুসারীদের নিয়ে গুন্ডা বাহিনী তৈরী করে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে।

    ৩। জুনিয়র ক্যাডার বাহিনী দ্বারা কলেজের তিনজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করেছেন এবং এছাড়াও অন্য শিক্ষকদের নামেও মিথ্যা মামলা করেন। জুনিয়াব ক্যাডার বাহিনীকে লেলিয়ে দেন টিচারদের প্রকাশ্যে অপমান করার জন্য, তারা টিচারদের বিভিন্নভাবে উভাক্ত ও মন্তব্য করেন, তাদের নামে পোস্টারিং করেন। প্রতিষ্ঠানের বাইরে কিছু চিকিৎসক উনার দলে আছে, তাদেরকে তিনি নিয়মনীতি অমান্য করে নিয়োগ দিচ্ছেন।

    ৪। তার কথামতো কাজ না করলে ছাত্রদের পরীক্ষায় সেন্ট আপ করা হবে না এবং পরীক্ষায় কেউ পাশ করলেও তাকে ডীন অফিস থেকে ফেল করানো হবে বলে মার্কশিট গায়েব করে দেয়ার হুমকি প্রদান করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের কে প্রকাশ্যেই ফেল করিয়ে দেয়া হুমকি দামকি দেন।

    ৫। একই সময়ে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞাপন দেয়া হলেও তিনি শুধুমাত্র নিজের পছন্দমত কয়েকটি ডিপার্টমেন্টে শিক্ষকদের ইন্টারভিউ নেন এবং তাদের যোগাযোগ করান। এভাবে সিনিয়রদের পদের দিক থেকে জুনিয়র করে দিচ্ছেন। কোন কোন ক্ষেত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এর স্বাক্ষর ছাড়াই প্রমোশন ও নিয়োগ প্রদান করেছেন। যারা উনার অনুসারী নয় অথবা উনার খারাপ কাজের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে তাদেরকে যেয়ে যেয়ে অকথ্য ভাষায় গালি-গালাজ এবং চাকরী খেয়ে দেয়ার ছমিক, এমনকি জীবন নাশের হুমকি পর্যন্ত দিয়েছেন।

    ৬। অনেক শিক্ষকদের আন্ত ডিপার্টমেন্টাল বিভিন্ন বিভাগে বদলী করে যাচ্ছেন, যা সর্ব বিভাগীয় প্রধানদের অগোচরে । ২০ বছরের অভিজ্ঞ শিক্ষককে অন্য ডিপার্টমেন্টে বদলী করেছেন কোন সুস্পষ্ট অভিযোগ ছাড়াই। এরকম সবচাইতে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে টিচিং কার্যক্রম এবং এর সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা।

    ৮। গভর্নিংবডির দুইজন নির্বাচিত শিক্ষক প্রতিনিধি থাকেন। উনাদের বাদ দিয়ে উনি মিটিং পরিচালনা করে আসছেন। এছাড়া, দুইজন শিক্ষক প্রতিনিধির পালাক্রমে শিক্ষক নিয়োগ কমিটির মেম্বার থাকেন। গত কয়েকটি সভায় উনি তাদের কাউকে ডাকেন না। কলেজের অধ্যক্ষও এই ব্যাপরে ভাদের সাথে কোনরূপ যোগাযোগ করেন না। ভর্তি কমিটিকেও তারা নিয়মিত সদস্য, কিন্তু তাদের এই ভর্তি প্রক্রিয়া কোনভাবেই সম্পর্কিত করা হয় না, তাদের কে কোনভাবে অবহিতও করেন না।

    ৯। অবসরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরও উনার অনুগত প্রিন্সিপাল (যিনি ২০২৪ এর অক্টোবরে অবসর গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে পুনরায় তাকে তিন মাস (২ বার) করে অতিরিক্ত ৬ মাস দায়িত্ব পালন করার জন্য নিয়োগ দিয়েছেন। একই সাথে প্রিন্সিপাল, হাসপাতালেন পরিচালক এর দায়িত্বও পালন করছেন। তাই ওনাকে দিয়ে গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান কলেজ হাসপাতালে নিয়ম উপেক্ষা করে ক্ষমতার অপব্যাবহার করে প্রচুর শিক্ষক ও ডাক্তার নিয়োগ দিয়েছেন। এমনকি কেনা কাটাতেও অনৈতিক সুবিধা আদায় করেছেন।

    ১০। এই কলেজে পুনরায় ফ্যাসিবাদের দোসর, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের লোকদের উনার ধ্যানারে পুনর্বাসন করিয়াছেন।

    বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জননেতা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন,একজন সংগ্রামী নারী চিকিৎসক ও মানবাধিকার কর্মীর বিরুদ্ধে এ ধরনের সিদ্ধান্ত গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের পরিপন্থী। তাকে স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের কায়দায় অন্যায় ভাবে বরখাস্ত করা ঠিক হয়নি, এখনো স্বৈরাচারের ফ্যাসিস্টরা এই সরকারকে পরিচালিত করছে, তাদের ইশারায় দেশ চলছে, তাহা না হলে সৈরাচার আন্দোলনে প্রথম সারির সমূহ যোদ্ধাকে বরখাস্ত করা হবে , এটা অত্যন্ত দৃষ্টিকটুর ,সরকারের প্রতি বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনার আহ্বান জানান।

    ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি ও বাংলা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার বলেন ,ডাঃ ফারজানা মাকসুদ রুনার বরখাস্তের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে তাঁকে পুনরায় স্বপদে বহাল করে কাজে যোগদানের সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।

    সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের যুগ্ম আহবায়ক ও জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসার সঞ্চালনায় ও ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি ও বাংলা পোস্টের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব।

    এছাড়াও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, প্রফেসর ড. শারমিন ইয়াসমিন, প্রফেসর ড. রেজাউর রহমান তালুকদার, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দ।

    বিআলো/তুরাগ

    এই বিভাগের আরও খবর
     
    Jugantor Logo
    ফজর ৫:০৫
    জোহর ১১:৪৬
    আসর ৪:০৮
    মাগরিব ৫:১১
    ইশা ৬:২৬
    সূর্যাস্ত: ৫:১১ সূর্যোদয় : ৬:২১

    আর্কাইভ

    August 2025
    M T W T F S S
     123
    45678910
    11121314151617
    18192021222324
    25262728293031