পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিকদের দাবিগুলো প্রয়োজনে রক্তের বিনিময়ে আদায় করে ছাড়বো : হাবিবুর রহমান হাবিব
নিজস্ব প্রতিবেদক: পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির (পবিস) মধ্যে বিদ্যমান সংকট নিরসনের জন্য গত ২১ মে থেকে ৭ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন পবিস শ্রমিকরা। টানা ১৬ দিন অবস্থানের পরেও এখনও দাবি পূরণ হয়নি, তৃতীয় দিনের মতো বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জননেতা হাবিবুর রহমান হাবিব এই মন্তব্য করেন।
বৃহস্পতিবার (৫ জুন) ১৬ তম দিনের মতো রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছে পবিস শ্রমিকরা। বিদ্যুৎ সেবা নিরবচ্ছিন্ন রেখে কর্মসূচি পালিত হলেও সরকারের পক্ষ থেকে সংকট সমাধানে দৃশ্যমান কোনও উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন এর উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব তৃতীয় দিনের মতো তাদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ এই কথা বলেন।
হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন -এই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হচ্ছে আমাদের রক্তের দাগ ও আন্দোলনের সূতিকাগার ৫২ ভাষা আন্দোলনের পর ৬৯,৭০,৭১ এর স্বাধীনতার সংগ্রাম এই শহীদ মিনার থেকে অর্জন। সেই জন্য আমিও আজ তৃতীয় দিনের মত আজকে লাল রঙের ছোঁয়া শার্ট পড়ে এসেছি তাদের আন্দোলনের দাবি প্রতি সমর্থন নিয়ে,। প্রয়োজনে রক্তের বিনিময়ে হলেও সেটা আদায় করে ছাড়বো ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ আন্দোলনের কর্মচারীদের ঘায়ে যদি কোনো ধরনের আঘাত করতে হয় তাহলে সবার আগে আমাকে আঘাত করতে হবে। শহীদ মিনারে অবস্থানরত একটি কর্মীর ওপর আঘাত করতে পারবে না। আঘাত করলে প্রতি উত্তরে পাল্টা জবাব দিতে প্রস্তুত আমি হাবিবুর রহমান হাবিব-
তিনি আরো বলেন ,পল্লী বিদুৎ আন্দোলনের দাবি মেনে নিতে হবে – দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনারে অবস্থান করবে – এতে আন্দোলনরত একটি বিদুৎ কর্মচারীদের ঘায়ে হাত বা আঘাত করলে কঠিন থেকে কঠিনতম পাল্টা জবাব দেয়া হবে -পল্লী বিদুৎ আন্দোলনের দাবি মেনে নিতে হবে – দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শহীদ মিনারে অবস্থান করবে – এতে যদি সারাদেশে বিদ্যুৎ বির্পযয়ের ঘটনা ঘটে এতে আমাকে হুকুমের আসামি করেন,আমাকে ফাঁসি দেন- তাতেও আমি কোনো ধরনের পরোয়া করিনা- আমি হাবিব।
তিনি বলেন, আপনারা আরামে বাড়িতে ঈদ করবেন- এখানে এই শ্রমিক আন্দোলনরত বিদ্যুৎ কর্মচারীরা রাস্তায় বসে ঈদ করবে – তা কোনো ভাবেই হতে পারে না -: আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠবে। আল্লাহর গজব পড়বে – তাছাড়া আপনাদের কুরবানী আল্লাহর দরবারে কবুল হবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে না নেন, আমি আহান জানাচ্ছি, তাদেরকে অবজ্ঞা করবেন না তাদের দাবি মেনে নেন।
পল্লী বিদ্যুৎ শ্রমিকদের দাবিগুলো:-
১। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মীদের ফ্যাসিবাদী কায়দায় দমন-পীড়নের মাধ্যমে কর্মপরিবেশ অস্থিতিশীলকারী, অত্যাচারী আরইবি চেয়ারম্যানের অপসারণ।
২। এক ও অভিন্ন চাকরি বিধি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আরইবি-পবিস একীভূতকরণ অথবা দেশের অন্যান্য বিতরণ সংস্থার ন্যায় পুনর্গঠন।
৩। মিটার রিডার কাম মেসেঞ্জার, লাইন শ্রমিক এবং পোষ্য কর্মীদের চাকরি নিয়মিতকরণ।
৪। মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারপূর্বক চাকরিচ্যুতদের স্বপদে পুনর্বহাল।
৫। গ্রাহকসেবার স্বার্থে লাইনক্রুসহ সব হয়রানি ও শাস্তিমূলক বদলি আদেশ বাতিল এবং বরখাস্ত ও সংযুক্ত কর্মীদের অবিলম্বে পদায়ন করতে হবে।
৬। জরুরি সেবায় নিয়োজিত কর্মীদের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা বা শিফটিং ডিউটি বাস্তবায়নের জন্য অতিদ্রুত জনবলের ঘাটতি পূরণ করতে হবে।
৭। পূর্ণাঙ্গ সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
উক্ত অবস্থান কর্মসূচিতে ১৬তম দিনে সংহতি প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি চেয়ারপারসন এর উপদেষ্টা ও পাবনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। সাথে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ( সহ সভাপতি পদমর্যাদা -) ও যুক্তরাজ্যে সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি নাসির আহমেদ শাহিন। ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মোহাম্মদ অলিদ বিন সিদ্দিক তালুকদার,। জাতীয় মানবাধিকার সমিতি চেয়ারম্যান মো : মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।
পল্লী বিদুৎ আন্দোলনের মধ্যে থেকে উপস্থিত ছিলেন
পল্লী বিদুৎ আন্দোলনের সমন্বয়ক ও এমআরসিএম সদস্য বিপিবিএ – লাইনম্যান গ্রেড ০২- ও সহ সাংগঠনিক সম্পাদক বিপিবিএ -, লাইন টেকনিশিয়ান ও সাংগঠনিক সম্পাদক বিপিবিএ-, বিপিবিএ- সভাপতি ও ডেপুটি জেনারেল ম্যানাজার প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম প্রমুখ।
বিআলো/তুরাগ