ঈদের দিনেই বর্জ্যমুক্ত ঢাকা দক্ষিণ: মাত্র আট ঘণ্টায় অপসারণ
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল আজহার দিন রাজধানীর ৭৫ টি ওর্য়াড আট ঘণ্টার মধ্যে সম্পূর্ণ বর্জ্যমুক্ত করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। কোরবানির বর্জ্য দ্রুততম সময়ের মধ্যে অপসারণ করে ডিএসসিসি নাগরিকদের পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত নগর পরিবেশ উপহার দিয়েছে ডিএসসিসির এক বিবৃতিতে জানানো হয়।
শনিবার (৭ জুন) সকাল ১০টা থেকে বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম শুরু হয়। ৭৫টি ওয়ার্ডে একযোগে চলা এ কার্যক্রম শেষ হয় বিকেল ৬টার মধ্যেই।
বিবৃতিতে জানান, “আমাদের প্রায় ১০ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ৫০০-এর বেশি গাড়ি মাঠে কাজ করেছে। নির্ধারিত পরিকল্পনা ও নগরবাসীর সহযোগিতায় আমরা মাত্র আট ঘণ্টায় পুরো সিটি বর্জ্যমুক্ত করতে সক্ষম হয়েছি।” প্রতিটি ওয়ার্ডে নিয়োজিত ছিল মনিটরিং টিম, যারা কাজের গতি ও গুণগত মান নিশ্চিত করেছে। পাশাপাশি বর্জ্য অপসারণের পর জীবাণুনাশক ছিটানো, চুন প্রয়োগ এবং দুর্গন্ধ নিয়ন্ত্রণে সুগন্ধিযুক্ত পানি ছিটানোর ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।
নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে ডিএসসিসির প্রশাসন জানায়, এবার ঈদের আগে থেকেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির ফলে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম ছিল আগের তুলনায় আরও দ্রুত, সমন্বিত ও জনবান্ধব।
এবারের ঈদুল আজহায় ডিএসসিসির ৭৫ ওয়ার্ডে এক লাখ ৩৩ হাজার ৩১৭টি পশু কোরবানি করা হয়। কোরবানি শেষ করার পর নাগরিক পর্যায় থেকে বর্জ্য অপসারণ করে প্রতিটি ওয়ার্ডের সেকেন্ডারি ট্রান্সফার স্টেশনে স্থানান্তর করা হয়।
পরে ডাম ট্রাকের মাধ্যমে মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে চূড়ান্তভাবে ডাম্প করা হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজার মেট্রিক টন লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে প্রায় ১২ হাজার মেট্রিক টন বর্জ্য মাতুয়াইল স্যানেটারি ল্যান্ডফিলে ডাম্পিং করা হয়েছে।
কোরবানির বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় এবার ডিএসসিসির প্রায় ১০ হাজারের অধিক জনবল মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছে। ২০৭টি ডাম্প ট্রাক, ৪৪টি কম্পেক্টর, ৩৯টি কনটেইনার ক্যারিয়ার, ১৬টি পে-লোডারসহ বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রমে ৭৫টি ওয়ার্ডে মোট ২০৭৯টি যানবাহন নিয়োজিত রয়েছে।
এছাড়া নগরবাসীর মধ্যে প্রায় ৪৫টন ব্লিচিং পাউডার, ৫ লিটার ধারণক্ষমতার ২০৭টি স্যাভলনের গ্যালন এবং এক লাখ ৪০ হাজার বায়োডিগ্রেডেবল ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে।
বৃষ্টি উপেক্ষা করে নির্ধারিত সময়ের আগেই কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণ করায় মাঠপর্যায়ের পরিচ্ছন্নকর্মী এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়া।
কোরবানির বর্জ্য অপসারণে ডিএসসিসিকে সহযোগিতা করায় নগরবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রশাসক বলেন, নগরবাসীকে নির্ধারিত জায়গায় কোরবানি দিতে ও বর্জ্য ফেলতে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে এবং সঠিক সময়ে নগরবাসীকে সিটি করপোরেশনের বার্তা পৌঁছানোর মাধ্যমে গণমাধ্যম দায়িত্বশীল ও সর্বোচ্চ পেশাদারত্বের পরিচয় দিয়েছে।
ঈদুল আজহার দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে কোরবানি করা হলে সেটির বর্জ্য অপসারণে ডিএসসিসি থেকে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলেও সিটি করপোরেশনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
বিআলো/সবুজ